পাঁচ বছরে জাপানে ১০ লাখ জনসংখ্যা হ্রাস
দিন দিন বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোথাও কোথাও প্রধান সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে অধিক জন্মহার। অথচ এশিয়ার দেশ জাপান যেন হাটছে উল্টোপথে। শত চেষ্টা করেও জাপানের জনসংখ্যা কিছুতেই বাড়ছে না। সরকার বেশ কিছু কার্যকর নীতি হাতে নেওয়ার পরও গত ৫ বছরে দেশটিতে ৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩০৫ জন মানুষ কমেছে বলে দেশটির আদমশুমারির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিবিসি অনলাইনের এক খবরে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রায় ১০ লাখ লোক কমে যাওয়ার ঘটনা স্পষ্ট প্রমাণ দেয়, দেশটিতে জন্মহার আশঙ্কাজনক হারে পড়ে গেছে। দেশটিতে এখন প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বেশি। জনসংখ্যার এই হ্রাস ১৯২০ সালের পর এটিই প্রথম। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে জাপানে আদমশুমারি হয়। এ অনুযায়ী গত আদমশুমারির চেয়ে শূন্য দশমিক (০.৭) শতাংশ লোক কমে গেছে।
জনমিতি থেকে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময় থেকে জাপানে লোকসংখ্যা কমছে। বলা হচ্ছে, জন্মহার কমে যাওয়া এবং অভিবাসনের অভাবে এই অবস্থা হয়েছে জাপানের। জাপানের ইন্টারন্যাল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০১০ সালের আদমশুমারিতে যে জনসংখ্যা ছিল ২০১৫ সালে তা থেকে ৯ লাখ ৪৭ হাজার কম।
ক্রমেই প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় গতি হারাচ্ছে জাপানের অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে- যা আশঙ্কাজনক।
জাপানের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, রাজধানী টোকিওসহ আটটি অঞ্চলে (প্রিফেকচার) জনসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু অন্য ৩৯টি অঞ্চলগুলোতে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমেছে ফুকুশিমা প্রিফেকচারে। গত পাঁচ বছরে এই প্রিফেকচারে ১ লাখ ১৫ হাজার লোক হারিয়েছে।
ফুকুশিমায় পরমাণু কেন্দ্র বিস্ফোরিত হয়ে এবং ২০১১ সালে ভূমিকম্প ও সুনামিতে বিধ্বস্ত হয়। যে কারণে এই অঞ্চল থেকে অনেক লোক স্থানান্তরিত হয়েছে। কয়েক হাজার লোক মারা গেছে। ফুকুশিমার পরমাণু তেজস্ক্রীয়তা এখনো ভোগাচ্ছে ওই অঞ্চলের জনগণকে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী জিনজো আবে সম্প্রতি ঘোষণা দেন, জন্মহার বাড়াতে হবে। মাপ্রতি জন্মহার হতে হবে ১.৮ এবং ধীরে ধীরে তা ২.১-এ উন্নীত করতে হবে।