প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন ও ডেলিগেট ভোটারদের সরব উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে জিএসসি সম্মেলন
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন ও ডেলিগেট ভোটারদের সরব উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের -জিএসসি সম্মেলন। প্রবাসী কমিউনিটির অধিকার ও দাবি দাওয়া নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি সমাজসেবার লক্ষ্য নিয়ে দলমত নির্বিশেষে আঞ্চলিকতার ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করার প্রত্যয়ে ১৯৯৩ সালে জিএসসি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
জিএসসি প্রতিষ্ঠার পর সংগঠনে সদস্য সংখ্যা বৃদ্বি পেয়ে এক সময় প্রায় পনেরো হাজারে উন্নীত হয়েছিল। প্রথম দিকে কয়েকটি নির্বাচনেও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। গত প্রায় এক যুগ ধরে সংগঠনে সদস্য সংখ্যা হ্রাস পেয়ে ২০১৩ সালে এসে দুই হাজারে পৌঁছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন ছাড়া কয়েকটি কমিটি গঠন হওয়াতে সংগঠনের নির্বাচন নিয়েও খুব একটা কৌতূহল সৃষ্টি হয় নাই। বিগত টার্মে সদস্য সংখ্যা বৃদ্বি পেয়ে প্রায় চার হাজারে উন্নীত হয়। প্রায় এক যুগ পরে দুটি প্যানেলে প্রতীক নিয়ে অত্যন্ত জাকজমকপূর্ণ পরিবেশে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।
নির্বাচনে আতা-খসরু-সালেহ গোলাপ ফুল প্রতীক এবং মাহবুব-মকিস-রানা চেয়ার প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় । সমগ্র ব্রিটেনব্যাপী জিএসসি’র ১২টি রিজিওনের মোট ৪১৩ জন ডেলিগেট ভোটারের মধ্যে ৩৭৭ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করেন। গোলাপ ফুল প্রতীক নিয়ে আতা-খসরু-সালেহ প্যানেলের ব্যারিস্টার আতাউর রহমান চেয়ারপারসন, খসরু খান জেনারেল সেক্রেটারি এবং সালেহ আহমদ ট্রেজারার নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের প্রাপ্ত ভোট যথাক্রমে ১৯২, ১৮৭ এবং ১৯৬। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চেয়ারপার্সন পদে নুরুল ইসলাম মাহবুব ভোট পেয়েছেন ১৭৭, জেনারেল সেক্রেটারি পদে মকিস মনসুর আহমেদ পেয়েছেন ১৮২ ভোট এবং ট্রেজারার পদে হাবিবুর রহমান রানা পেয়েছেন ১৭১ ভোট।
৩২জন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদের মধ্যে আতা-খসরু-সালেহ প্যানেল থেকে বিজয়ী হয়েছেন ২৯জন । চেয়ার প্রতীক নিয়ে মাহবুব-মকিস-রানা প্যানেলের ডক্টর এম মুজিবুর রহমান, হেলেনা ইসলাম এবং শাহ মোহাম্মদ সাফি জিএসসি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে প্রায় ৯২ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। নির্বাচনে প্রদত্ত ৩৭৭টি ভোটের মধ্যে ৩১৫টি ভোট (৮৪ শতাংশ) ছিল প্যানেলভিত্তিক ভোট আর ৬২টি (১৬ শতাংশ) মিক্সড ভোট পরে । নির্বাচনে ৮টি ব্যালট পেপারের ভোট নাল এন্ড ভয়েড হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
দুটি প্যানেলের সদস্যরা নির্বাচনের পূর্বে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করার পাশাপাশি কমিউনিটির অধিকার আদায়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। জিএসসি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির নির্বাচন প্রতি দুই বছর অন্তর অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ার বিষয়টি এবারের নির্বাচনে খুব বেশি আলোচিত হয়েছে বিধায় আগামীতে নির্ধারিত সময়ে প্রতিটি রিজিওন ও সেন্ট্রাল কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা যায়।
নির্বাচনের আগে জেএসসি’র বিদায়ী চেয়ারপারসন নুরুল ইসলাম মাহবুবের সভাপতিত্বে এবং বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ এ কিউ কায়সারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় কোষাধ্যক্ষের প্রতিবেদন পেশ করেন মোহাম্মদ ফিরুজ খান। সাধারণ সভা শেষে ভোট গ্রহণ শুরু হয় বিকাল ৪টা থেকে। চলে একটানা রাত ৮ টা পর্যন্ত।এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন নর্থ ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ডা: নজরুল ইসলাম।কমিশনের সদস্য হিসেবে তাঁর সাথে ছিলেন, লুৎফুর রহমান আলী, আব্দুল রশিদ, মুজাহিদ খান ও মাহতাব মিয়া।