প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র প্রথম প্রেম
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃবৃটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে তখন ২১ বছরের যুবতী। পড়েন বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। চলনে বলনে মোড়া আভিজাত্য। সঙ্গী কিংবা বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে গুরুত্ব দিতেন আভিজাত্য এবং সামাজিক মর্যাদা। এ সময় তার সখ্য গড়ে ওঠে ছয় ফুট লম্বা, বলিষ্ঠ, আকর্ষণীয় এক যুবকের সঙ্গে। তার নাম অ্যালিস্টার হ্যারিসন।
সখ্যতা থেকে ওই সম্পর্ক এক পর্যায়ে প্রেমে রূপ নেয়। তারা নিয়মিত ‘ডেট’ করতে শুরু করেন। তবে তা বেশিদিন টেকে নি। কারণ, এর কিছুদিন পরেই তেরেসার জীবনে আগমন ঘটে ফিলিপ মে’র। হৃদয় বিগলিত হতে বেশি সময় লাগে নি তেরেসার। তিনি ফিলিপের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন। ফিকে হয়ে যায় হ্যারিসনের সঙ্গে অন্তরঙ্গতা। প্রেম জমে ওঠে ফিলিপের সঙ্গে। সেই ফিলিপ মে-ই তেরেসা মে’র বর্তমান স্বামী। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র অতীত প্রেমের এই গোপন কথা শনিবার রাতে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। বৃটেনের বিখ্যাত ডেইলি মেইল’কে ওই প্রেমের কথা জানিয়েছেন মে’র সে সময়কার অক্সফোর্ড সহপাঠী ও বন্ধু প্যাট ফ্রাঙ্কল্যান্ড। তিনি বলেন, মে বেশ কয়েকবার হ্যারিসনের সঙ্গে ‘ডেটে’ গিয়েছিলেন। তারা মন-মানসিকতায় ছিলেন এক রকমের। আর মে এমন মানুষদের সঙ্গেই মিশতেন যাদের আচরণ অভিজাত এবং বুদ্ধিবৃত্তি সুগভীর। হ্যারিসন ছিলেন তেমনই একজন। ফ্রাঙ্কল্যান্ড বলেন, ওই সময় মে আমাকে কৌতুক করে বলতেন, ‘আমার সঙ্গে সখ্য গড়তে চাওয়া পুরুষকে হতে হবে বিচক্ষণতার অধিকারী ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের। তা না হলে আমার সঙ্গে তারা তাল মিলাতে পারবেন না’।
হ্যারিসনের সঙ্গে তেরেসা মে’র সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার চার দশক পরে এসে, সময়ের পরিক্রমায় মে এখন বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী। তবে হ্যারিসনও কম যান নি। তিনিও বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন। যাপন করছেন মে’র চেয়েও অভিজাত জীবন। অ্যালিস্টার হ্যারিসন বর্তমানে একইসঙ্গে বৃটেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদে আসীন। তিনি রয়্যাল ভিক্টোরিয়ান অর্ডারের কমান্ডার। একই সঙ্গে সেন্ট মাইকেল এবং সেন্ট জর্জের (সিএমজি) কম্প্যানিয়ন। এই দুটি পদ বৃটিশ রাজপরিবারের বিবেচনায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং ক্ষমতার অধিকারী। হ্যারিসনের বর্তমান আবাসটিও তেরেসা মে’র বাসভবন থেকে একেবারে পায়ে হাঁটা দূরত্বে। নিজের কূটনৈতিক ক্যারিয়ারে তিনি ইউরোপ, আফ্রিকা ও জাতিসংঘে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি রানী ও রাজপরিবারের সবচেয়ে আস্থাভাজন। দায়িত্বরত সময় তিনি এখনো বৃটিশ ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন। তার মাথায় থাকে পালকের রাজটুপি এবং হাতে শোভা পায় মনিমুক্তা খচিত তলোয়ার। কোন দেশের রাষ্ট্রদূত বৃটেনে গেলে ঐতিহ্যগতভাবে তিনিই সর্বপ্রথম তাদের বৃটেনের ভূখ-ে গ্রহণ করে অভ্যর্থনা জানান।
তেরেসা মের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার ৪ বছর পরে হ্যারিসন বিয়ে করেন। সেই স্ত্রীর নামও তেরেসা। অবশ্য ১০ বছর পরে তাদের সেই সংসার ভেঙ্গে যায়। এরপর তিনি বিয়ে করেন সারাহ উড নামের একজন বিপণন পরামর্শককে। তাদের সেই সংসারে রয়েছে ৩ টি সন্তান। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপারটি হলো, হ্যারিসন এবং তেরেসা মে’র বর্তমান স্বামী ফিলিপের চেহারায় এবং শারীরিক গড়নে ভীষণ সামঞ্জস্য। তারা দেখতে অনেকটাই কাছাকাছি। এজন্যে ডেইলি মেইল এই প্রেমের খবর প্রকাশ করে ছাপার সংস্করণে শিরোনামের সঙ্গে একটি ভীষণ চিত্তাকর্ষক প্রশ্ন জুড়ে দিয়েছে। মে’র স্বামীকে উদ্দেশ্য করে তারা লিখেছে- ফিলিপ, হ্যারিসনকে দেখলে কি আপনার কারো কথা মনে হয়?
অতীতের ওই সম্পর্কের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে হ্যারিসন ডেইলি মেইলকে বলেন, ওহ তাই? এরপর তিনি বলেন, মে পরিবারের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে এবং মাঝেমধ্যেই তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। প্রেমের সম্পর্ক জানতে চেয়ে পত্রিকার খানিকটা চাপাচাপিতে তিনি শেষমেষ খানিকটা রহস্য করে বলেন, অক্সফোর্ডে পড়াকালীন সেই সময়টাতে আমি ছিলাম এখনকার চেয়ে অনেক তরুণ এবং আকর্ষণীয়। তবে এ বিষয়ে এর চেয়ে বেশি কিছু জানাতে রাজি হন নি তিনি। এ প্রসঙ্গে তেরেসা মে’কে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান।