প্রধান বিচারপতিসহ ৫৭ বিচারপতির পদত্যাগ দাবি
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগের দাবি করেছেন আইনজীবীরা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের শুরুতে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আবু সাঈদসহ নিহতদের স্মরণ করে বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের আপামর জনগণ এই আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগের কাছ থেকে কোনও বিচার পায়নি। বরং খুনি, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা সরকারের সমস্ত অন্যায় পাপের সহযোগী হয়েছে প্রধান বিচারপতিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ। সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, মো. মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নাম উল্লেখ করে সৈয়দ মামুন বলেন, এই সমস্ত সংবিধান লঙ্ঘনকারী প্রধান বিচারপতিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আদালতে বিচার করতে হবে। এ সময় তিনি রাজপথে আন্দোলন করে কি কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায়? প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের এ উক্তির কঠোর সমালোচনা করেন। পাশাপাশি রিট শুনতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সৈয়দ মামুন তার বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি এবং হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ বিচারপতির পদত্যাগের পাশাপাশি সৎ, দক্ষ, নিরপেক্ষ যোগ্য ব্যক্তিদের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান। একইসঙ্গে তিনি সদ্য সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস, সদ্য পদত্যাগকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন ফকির, দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খানসহ ১২ আইনজীবীকে সামাজিকভাবে বয়কট ও অসহযোগিতার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের আপামর জনগণ সে সময়ের প্রধান বিচারপতি সাহবুদ্দিন আহমেদকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসাবে গ্রহণ করেছিল এবং তার ওপর জনগণ আস্থা রেখেছিল। কিন্তু গত ৫ই আগস্ট দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতি ভবন জনরোষানলের শিকার হয়। এছাড়া গত ১৫ দিন ধরে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সারা দেশের আদালত ভবন জনগণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়, যা গত ২০০ বছরের ইতিহাসে প্রথম।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মোহসীন রশিদ, অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন, গোলাম রহমান ভুইয়া, আইনজীবী গোলাম রহমান, অ্যাডভোকেট মো. সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আশরাফুল ইসলাম।