প্রসঙ্গঃ ছাত্র রাজনীতির দিনকাল

Spread the love

e19ff578-d2fa-43cd-a246-cb5ecd56ada0বাবুল রহমান:
আমার ভালোবাসার সীমানা মাপে এমন এক মুজিব সৈনিকের কথা লিখতে গেলাম এমন সাধ্য কার যে অঙ্গুলি প্রদর্শন করে আদর্শের মাপকাঠিতে অবমূল্যায়ন করবে যদিও বড়মাপের কেউ নয় কিন্তু খুব যে ছোট করে দেখা যাবে সাবেক তূখোড় সেই ছাত্রনেতাকে মানতে নারাজ আমার মত অনেকেই।

৭৫ পরবর্তিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাল ধরে রাখার মানুষ খুব কম ছিলো কারন ক্ষমতায় থাকাকালীন সুযোগ সন্ধানীরা গা ঢাকা শুরু করে,রাজপথ তৎকালিন সরকারি দলের আয়ত্তে চলে যায়,সে সময়ের সাহসী সৈনিকরা কিন্তু হাল ছাড়েন নি,বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বেঈমানী করেন নি,তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব সিলেট জেলার সহসভাপতি মরহুম মনিরুল ইসলাম চৌধুরী চাচা যাকে সবাই মনির মামা বলেই ডাকতেন কিন্তু আশ্চর্য্য হলেও সত্য দূরদিনের কান্ডারী মনিরুল ইসলাম সাহেবকে ৯৬ সালে দল ক্ষমতায় এলেও মূল্যায়ন করেনি এমনকি তাঁর সুযোগ্য পুত্ররাও বঞ্চিত,ভাগ্যে জুটেনি মরনোত্তর কোন সনদ আজো।

ঠিক তেমনি আশির দশকে সিলেট রাজপথে জাসদ ছাত্রলীগের নেতার বিপক্ষে অবস্হান নেয়া আওয়ামী ছাত্রলীগ নেতার সংখ্যা ছিলো হাতেগুনা এবং সাহসের ব্যপার,সে সময় রাজপথ কাঁপানো ছাত্রনেতা এম সি কলেজ সংসদের জি এস Towhid Fitrat Hussain এর মতো নেতাদের শক্ত অবস্থানেই সিলেট আওয়ামী পরিবারের প্রাণ চঞ্চলতা ফিরে আসে,সেদিন সংসদের জি এস পদটি ভাগিয়ে নেয়া চাট্টিখানি কথা নয় (উল্লেখ্য তার পিতা সৈয়দ আশরাফ হোসেন সাহেবও ৫৭ সালে জি এস ছিলেন )তার সাথে অনেকেই ছিলেন কিছু নাম বলতে হয় মনির মামার ছেলে Tufael Choudhury Suaib Adamjee,Aminul Islam,M Shahriar Kabir Selim,Asaduzzaman Pappu.আসাদুজ্জামান পাপ্পু কলেজ সংসদের এক সময়ের ভিপি।

আজ দলের রমরমা পজিশনে অনেকেই যেন হারিয়ে গেছেন কেউ বাটপার চামচাদের যাতাকলে পিষ্ট কেউবা আবার কোনমতে একটা পদবি নিয়ে চলছেন।এ শুধু একটি জেলা বা অঞ্চলের কথা খোঁজ নিলে জানা যাবে প্রতিটি জেলায় সমান সমস্যা কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আজ যেমন ক্ষমতার চারপাশে বসন্তের কোকিল সাতপাক খাচ্ছে পা পিছলে গেলে ওদের খোঁজে পাবেন না যেমনটি ৭৫ সালে হয়েছিলো।

যুক্তরাজ্য আওয়ামী পরিবার কিছু খলিফাদের দখলে চলে গেছে নেত্রীর আগে পিছে ডানে বায়ে ঘুরঘুর করে,তাদের অনেককেই কখনো রাজপথে দেখিনি,

দেখিনি তৌহিদদের মত হুলিয়া নিয়ে জীবন বাজি রেখে প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে,৯১ সালে পায়ে গুলি না লেগে যদি বুকের বা পাশ ছিদ্র করে যেত কার কি ক্ষতি হতো।কোন এক অদৃশ্য কারনে এসব নেতারা রাজনীতির মাঠে স্হান করে নিতে পারছেনা কিন্তু সভা সমাবেশে সমাদৃত হলো কি না তৌহিদরা হাজির এমনকি মিটিং যোগ দিতে গিয়ে বিলেতের মত জায়গায় বহুবার চাকুরি হারাতে হয়েছে তবুও থেমে নেই।

বুকের এতো এতো স্বপ্ন গুলো ছুঁয়ে দেখতে হলে আদর্শবান সৈনিকের দরকার।
সাগরের সমস্ত জল যেদিন মাপা হয়ে যাবে চোখের গভীরতায়- সেদিন হতেই বলা শুরু করবে কারা ছিলো মুজিব সৈনিক ততদিনে হয়তো এইদল বা দেশের বারোটা বাজতে বাকি রবে না।

মুখের শব্দ জড়ো হতে লাগলো,কপালের ভাঁজ হয়ে উঠবে তবুও কি তাদের মূল্যায়ন নেই।
এখনো যৌবনের সেই মনোবল নিয়েই খেলে যাচ্ছে কিন্তু চোখের ভাষা কি বুঝার মানুষ নেই।
কার এমন সাধ্য আছে কম্পাস বসায় এ বুকের সীমানার গভীরতা মাপার।

এসেই দেখো- কতোটা গভীরে নামতে পারো তুমি,
কতোটাই বা পেরুতে পারো অবারিত এ বিস্তীর্ণ বুকের জমিনে মুজিব সৈনিকবেশে।

আছেন আরো কিছু নিবেদিত প্রান সুজাত মনছুর,শাহ বেলাল,খসরুজ্জামান খসরু ভাই (ভিপি)হাতের ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন তবে তিনি যদিও পদবি নিয়ে চলছেন কিন্তু নেত্রীর সান্নিধ্য পেতে হিমশিম খাচ্ছেন আর বেচারা সুজাত মনছুর এইতো সেদিন কোন এক প্রোগ্রামের উদ্দোক্তা হয়েও মঞ্চে বসেননি।শাহ বেলালের কথা কি আর বলবো মুজিব সৈনিক পরিবারে বেড়ে উঠা এক তরুন জীবনের মূল্যাবান সময় ব্যয় হচ্ছে রাজনীতির ময়দানে।

হারিকেন নিয়ে খুঁজে বের করার সময় এসেছে ওদেরকে যুক্তরাজ্য আওয়ামী পরিবারকে রথি মহারথীর হাত থেকে বাচাতে হলে।এসব সাবেক নেতাদেরকে সামনের সারিতে নিয়ে দল সাজানো হলে উন্নয়নের খবর ঘরে ঘরে পৌঁছাবে,দেশ ও দল অনেক উপকৃত হবে।

নেতৃত্বের বিকাশ ঘটাতে হলে ওদের বিকল্প হতে পারে না,অন্তত যুক্তরাজ্য শেখ হাসিনার ঘাঁটি বলেই পরিচিত সেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন কারনে নতুবা আজকের বিএনপির মত করুনদশা দেখতে হবে।

বিএনপি শাসনামলে যারা ক্রীম বাটার খেয়ে মেদ বৃদ্ধি করেছেন তারা আজ নিষ্কৃয় কিন্তু অবহেলিত ত্যাগীরাই এখনো মিটিং মিছিল করে যাচ্ছে।

দোহাই মাননীয় নেত্রী দল গহীন গভীর থেকে আলোর সন্ধানে হাঁটছে এবং যারা আলোর দিশারী নিয়ে মিছিলে রাজপথ উত্তপ্ত করে দলকে পুনরায় দাড় করেছে তাদের দিকে একটু নজর দিন,আটষট্টি হাজার গ্রামে আপনার অসংখ্য নিবেদিত অবহেলিত কর্মি আছে তাদের সুসংগঠিত করে আপনার ও দলের পথকে মসৃণ পিছঢালা করুন।

মৌসুমী পাখিরা শীতকালীন সময়ে ওখানে থাকেনা নিজের জীবনের তাগিদে দেশান্তর হয়,ওরা সেকেন্ড হোম এবং লাইফ জ্যাকেট সাথে নিয়েই চলে কিন্তু ঐ পাগল মুজিবপ্রেমীরা বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে দেশ ও আপনার ভ্যনগার্ড হয়ে থাকে।

দেশ ও দলের ক্ষতি ওরা বরদাস্ত করবেনা,ওরাই আপনার সোনার ছেলে,দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়েই পথচলা,রক্তে ওদের বেঈমানীর ছিটেফুটে পাবেন না।

জয় হোক দেশবাসীর,জয় হোক সকল ত্যাগী নেতাদের।

বাবুল রহমান
লন্ডন
৯ই জুন ২০১৯


Spread the love

Leave a Reply