বাংলাদেশ নিয়ে এপিপিজি প্রতিবেদনে ‘একতরফা বর্ণনা’: ব্রিটিশ এমপি রূপা হক
ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে ‘একতরফা বর্ণনা’ উপস্থাপনের সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) রূপা হক। তিনি অভিযোগ করেছেন, এটি অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) ফর দ্য কমনওয়েলথের ব্যানারে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
রুপা হক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘গত শরতে এপিপিজি ফর দ্য কমনওয়েলথের নামে বাংলাদেশের ইউনূস সরকার সম্পর্কে প্রকাশিত একতরফা বর্ণনা ভুল তথ্য প্রচার করেছে এবং যুক্তরাজ্যের সরকারি নীতি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে।’
রূপা হক তাঁর বাংলাদেশ সফরের পর মন্তব্য করেন, তিনি যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) একটি প্রতিনিধি দলের অংশ ছিলেন।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে এপিপিজি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সাংবাদিক ও সাবেক কর্মকর্তাদের দমন করতে দেশের আইন ব্যবস্থাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এর পাশাপাশি ইসলামি উগ্রপন্থীদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবও তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মানবাধিকার ও আইনের শাসন সম্পর্কে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, যা ব্রিটিশ রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করে।
প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের স্থিতিশীলতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশি প্রবাসী সম্প্রদায়।
গত ৪ ডিসেম্বর, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি এবং জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে সঠিক তথ্য প্রদানের জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের প্রতি আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা এপিপিজি প্রতিবেদনে মূল তথ্যের অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ৫ আগস্টের আগে বহু ছাত্রের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ না করার বিষয়টি তুলে ধরেন।
তৌহিদ হোসেন জোর দিয়ে বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভ্রান্তিকর তথ্য মোকাবিলায় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশে সংঘটিত নির্মমতা ও সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রকৃত সত্য অবহিত করতে বদ্ধপরিকর।