বাংলা সংলাপ এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বাস হৃদয়ে নিয়ে
খালেদ আহমদ
আজ আমার জন্য খুবই ভাল লাগার দিন।অনেক দিন পর যেন ভেতরে জমে থাকা নি:শ্বাস ফেললাম।খুব স্বস্তি লাগছে। এই ভাল লাগার কারণ ‘বাংলা সংলাপ’-এর আজ ৫ম জন্মদিন।প্রকাশনার পাঁচ বছর পূর্ণ করে ৬ষ্ট বছরে পদার্পন করছে ‘বাংলা সংলাপ’।
ভাল লাগার কারণ দু:সাহসিক এই কর্মে আমিও ছিলাম সমর্থক।যদি এরই মধ্যে চলা থেমে যেত,মুখ থুবড়ে পড়তো-তাহলে বিশেষজ্ঞদের সমালোচনায় পড়তাম আমিও।তাই এই ভাল লাগা।ভয় একেবারেই কেটে গেছে তা নয়।তবুও পাঁচটা বছরতো কম না।
মাঝে মাঝে আমার ভাবতে অবাক লাগে বৃটেনের মতো জায়গায় প্রতিকুল পরিবেশে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রকাশনা কীভাবে অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে। প্রবাসের কঠিন বাস্হবতায় এতো সহজে নিশ্চয়ই চলছে না। যাদের ভীত মজবুত তারাও শুনি টিকতে পারছেনা।এর জন্য নিশ্চয়ই কঠোর প্ররিশ্রম করতে হচ্ছে? সবকিছু ত্যাগ করে শুধুমাত্র এই পত্রিকার জন্যই সময় ব্যয় করছেন সাংবাদিক মশাহিদ আলী।আজকের জন্ম দিনের তার জন্য রইলো শুভ কামনা।
কারন নিজের দেশে বিশেষ করে সিলেটের মতো শহরেও অকাল মুত্যুর শিকার হচ্ছে অনেক পত্রিকা,অথবা ধূকে ধূকে চলছে।অনেক বিত্তশালী আছেন,পাউন্ড-ডলার সিলেটের বাতাশে উড়ে,কিন্তু মিডিয়াতে কোন বিনিয়োগ হয়না।সম্প্রতি সিলেটে এক মতবিনিময় সভায় সুনাম গনজের কৃতি সন্তান তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ প্রসঙ্গক্রমে বললেন-বেসরকারী ৪১টা টিভির লাইসেন্স দেয়া হলো, অনেকগুলো কমিউনিটি রেডিও’র অনুমোদন হলো।কই, সিলেটেরতো একটা আবেদনও দেখলামনা…।
সিলেটে সংবাদপত্রে সেই দিন আর নেই।নাম মাত্র দু-চার পাতার পত্রিকার নিয়মিত প্রকাশ করতেই হিমশিম খাছ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। আর রঙ্গিন পত্রিকারতো বেহাল দশা।এই বাস্তবতায় লন্ডন থেকে একটি ২৮-৩২ পূষ্টার রঙ্গিন পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ করা একটি কঠিন চ্যালেজ্ঞিং বিষয়।এই কঠিন চ্যালেজ্ঞ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলা সংলাপ।
আজ আমার খুবই ভালো লাগছে দীর্ঘ পাচঁ বছর পূর্ণ করে বাংলা সংলাপ ৬ষ্ট বর্ষে পদার্পন করছে।আলহামদুরিল্লাহ।এক জন নবীন সম্পাদকের জন্য এটি একটি বিরাট পাওনা।৫ বচর মানে ৬০ মাস,মানে ২৪০ সপ্তাহ। এই দীর্ঘ সময় পাড়ি দেয়া সহজ কাজ নয়। অর্থনৈতি বিশ্ব মন্দার কবলে পতিত শিশু এই পত্রিকাকে বাচিঁয়ে রাখার কঠিন সংগ্রাম উত্তীর্ণ হয়েছেন দৃঢ় সংকল্পের অধিকারী সম্পাদক মো. মশাহিদ আলী।অভিনন্দন আমার এই প্রিয় সহকর্মিকে।
অনেক প্রতিকুলতার মাঝে চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে পাঁচটি বছর ধরে নিয়মিত প্রকাশনা অব্যাহত রাখার চ্যালেন্জ মোকাবিলা করেছেন মশাহিদ আলী।বৃত্তশারী না হয়েও শুধুমাত্র পেশা ও নেশার জোড়ে কিভাবে ‘হাতি পালা’ যায় তার উদাহরন সৃষ্টি করেছেন পত্রিকাটির প্রকাশক-সম্পাদক মশাহিদ আলী।
পত্রিকাটি প্রকাশনার শুর থেকেই আমি সংশ্লিষ্ট ছিলাম। অজনা আশংকার মধ্যেও সমর্থন জানিয়ে ছিলাম আমার প্রিয় সহকর্মী প্রতিভাবান সাংবাদিক মো. মশাহিদ আলীকে।কারন এক জন তরুণ প্রভাষক ও রিপোর্টার হিসেবে কাজ করে যুক্তরাজ্যের নতুন বাসিন্দা মশাহিদ আলীর জন্য পত্রিকা বের করা ছিল কঠিন চ্যালেজ্ঞ। গিয়েছেন পড়াশুনার জন্য,পড়াশুনা শেষ করে টাকা রুজির ধান্ধা করবেন,রেষ্টুরেন্ট,টেকওয়ে করবেন -আর মশাহিদ কি-না চিন্তা করছেন পত্রিকা প্রকাশনার!
সব অনিশ্চয়তাকে পিছনে ফেলে বাংলা সংলাপ এগিয়ে যাচ্ছে। শুনেছি পত্রিকার আকার বেড়েছে,পাঠকও বেড়েছে।কারন মশাহিদ তার লক্ষ্যে অটুট ছিলেন।” যদি লক্ষ্য থাকে অটুট বিশ্বাস হৃদয়ে তবে হবেই দেখা – দেখা হবে বিজয়ে” গানের এই কলির সাথে মিলে গেছে মশাহিদ আলীর লক্ষ্য আর বিশ্বাস।আমরা আশাবাদী মানুষ,সংগ্রাম করেই ঠিকে থাকতে হবে।আল্লাহ সহায় হবেন,ইনশাআল্লাহ।
প্রকাশনার জগতে নবীন হয়েও মশাহিদ আলী সফল সাংবাদিক হিসেবে বৃটেনে তার স্থান করে নিয়েছেন। গত পাচঁ বছর ধরে নিয়মিত পত্রিকাটি প্রকাশ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে বাংলার সংলাপ।বর্তমানে ব্যাপক আলোচিত ও জনপ্রিয় সাপ্তাহিক হিসেবে এটি কমিউনিটিতে স্থান করে নিয়েছে।প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে টিভি চ্যানেলে লাইভ আলোচনা হয়।নাম করা বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পত্রিকাটিকে নিয়ে আলোচনা করেন,পরামর্শ দেন,ভাল মন্দ তুলে ধরেন-এটাও অনেক বড় পাওনা সম্পাদকের।
বৃটেনের সংবাদপত্র জগতে সম্ভাবনার ‘আলো’ হিসেবে দেখা যাচ্ছে বাংলার সংলাপ’কে।
বিশেষ করে পত্রিকাটির সম্পাদক মো. মশাহিদ আলী তার অক্লান্ত পরিশ্রম,মেধা ও যোগ্যতায় বৃটেনের মতো স্থানে অন্যান্য সাপ্তাহিকের সাথে পাল্লা দিয়ে ঠিকে রয়েছেন,এই ঠিকে থাকাটাই জরুরী।সামনে আরো এগিয়ে যাবে, যুগ যুগ ঠিকে থাকবে ‘বাংলা সংলাপ’এই কামনা করছি।
লেখক : খালেদ আহমদ,বাংলাদেশ প্রতিনিধি- বাংলা সংলাপ,লন্ডন।সম্পাদক- সিলেট নিউজ ২৪ ডটকম।সভাপতি-ওভারসিজ করেসপন্ডেন্ট এসোসিয়েশন অব সিলেট-ওকাস ।