বাংলা সংলাপ : পথ চলার ১১ বসন্ত

Spread the love

মাতৃভাষা বাংলা, জন্মভূমি বাংলাদেশের প্রতি এবং প্রবাসীদের প্রতি— সেই শ্রদ্ধা থেকেই ১০ নভেম্বর ২০১০ আত্মপ্রকাশ করলো লন্ডন থেকে প্রকাশিত ট্যাবলয়েড সাপ্তাহিক বাংলা সংলাপ।

বিদেশে বাংলা ভাষীদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির কথা বিবেচনা করে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ‘বাংলা সংলাপ’ যাত্রা শুরু করলো যখন— যাত্রালগ্নে আমি ছিলাম না সহযাত্রীদের একজন।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বরে যখন আমি লন্ডনে পা রাখলাম , ঠিক এর ৪ দিন পর ‘বাংলা সংলাপ’ এর সম্পাদক মো: মশাহিদ আলী আমার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে কল দিলেন, আমার খবর নিলেন, দেশের খবর নিলেন, সিলেটের খবর নিলেন, সিলেটের বর্ণমালা লাইব্রেরির আকবর ভাই সহ অনেকের কথা জিজ্ঞেস করলেন, খবর নিলেন কারণ দেশ থেকে আমি নতুন এসেছি তাই। একসময় বাংলা সংলাপ অফিসে আসার আমন্ত্রণ জানালেন। আমিও আমন্ত্রণ গ্রহণ করলাম ।

তার আগে বলে রাখি – দেশে যখন আমরা ছিলাম বর্ণমালা লাইব্রেরি কেন্দ্রিক আমাদের সাহিত্য ও সাংবাদিকতার একটি আড্ডা বসতো লাইব্রেরিতে ।

১৯৯৮/৯৯ ইং দিকে আমি সাহিত্য ও শিল্প কর্মের ছোট কাগজ আজকের শতাব্দী সম্পাদনা করতাম।

একসময় বস্তুনিষ্ট সংবাদে সময়ের সাথে আগামীর পথে এই শ্লোগানে— জগন্নাথপুর টাইমস নামে একটি পত্রিকাও বের করতাম। তখন বের করেছি সাহিত্য পত্রিকা সারিন্দা— আরো অনেক সাহিত্য কর্ম ছিল আমাদের । মুরারী চাঁদ কলেজ ( সিলেট এমসি কলেজে) লেখাপড়ার পাশাপাশি এই সৃজনশীল কাজ গুলো আমরা করতাম। সেই তখন থেকেই আজকের সাপ্তাহিক বাংলা সংলাপ পত্রিকার সম্পাদক মো: মশাহিদ আলীর সাথে সুসম্পর্ক। মশাহিদ তখন সাপ্তাহিক বালাগন্জের ডাক বের করতেন।এ পত্রিকার সম্পাদক মো: মোশাইদ আলী, আমিও ছিলাম এই পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক । মশাহিদ লন্ডনে আসার আগে দৈনিক সিলেটের ডাকে সাংবাদিকতা করেছেন। ছিলেন একটি কলেজের প্রভাষক ।
আমিও বাংলাদেশে অবস্থানকালে কলেজে অধ্যাপনা করেছি ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এবং প্রায় একবছর অধ্যক্ষেরও মহান দায়িত্ব পালন করি নিষ্ঠার সাথে ।

তারপর স্থায়ীভাবে যখন আমি লন্ডনে চলে আসি তখন মশাহিদের কল পেয়ে হোয়াইটচ্যাপেল সাপ্তাহিক বাংলা সংলাপ পত্রিকার অফিসে দেখা করি—অনেকক্ষন গল্প হলো, আড্ডা হলো এবং বাংলা সংলাপ পত্রিকায় কাজ করার ও নিয়মিত লেখার অফার পেলাম সম্পাদক কর্তৃক । কিন্তু শুধু পত্রিকায় কাজ করে থ লন্ডনে চলা সম্ভব না । মশাহিদ — আমার জন্য বাড়তি অনেক গুলো জব খুঁজলেন, পেয়েও গেলেন।
মানডে টু ফ্রাইডে ইস্ট লন্ডনে একটি মানি একচেঞ্জের কাজ শুরু করলাম । আর বাংলা সংলাপেও নিয়মিত প্রতিদিন বিকেলে সময় দিতাম । এখন আমি সাপ্তাহিক বাংলা সংলাপ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক পদের দায়িত্বে আছি । পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় একটি দৈনিকের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছি এবং অন্যান্য অনলাইনে কাজ করছি। আর বাংলা সংলাপ দেখতে দেখতে দীর্ঘসময় । বিলেতে প্রিন্ট মিডিয়ায় বাংলা গণমাধ্যমে বাংলা সংলাপ ঠিকে আছে যুদ্ধ করে প্রায় ১১ বছর — এটি সম্ভব হয়েছে সম্পাদকের কর্মদক্ষতা ও একনিষ্ঠার কারণে ।

ভোরের লালসূর্যের আলোয় মেশানো হিমেল বাতাসের মতো সম্পাদকের সাথে আঁকড়ে ধরে যে আপ্রাণ কর্মপ্রচেষ্টায় শরীক হয়েছিলেন যারা এবং এটিকে প্রতিষ্ঠিত করতে আজো আছেন সাংবাদিক আহমেদ শামীম , সাংবাদিক সাজু আহমদ সহ সকলের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। সদিচ্ছা, আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা যে কাউকেই সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে পারে।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে স্বপ্নের বাস্তবায়ন মানুষকে সফলতা এনে দিতে পারে “বাংলা সংলাপ” তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

সংবাদ মাধ্যমকে ভালবেসেই শখের সংবাদকর্মী হিসেবে এ জগতে আমার প্রবেশ —- তেমনি বাংলা সংলাপের সম্পাদকেরও ।
বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় দৈনিকে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সরবরাহ করে অল্প দিনেই শখের পেশাকে নেশায় পরিণত করে আজ এখানে।

আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে সময়ের পরিক্রমায় নতুন নতুন অনেক স্বপ্ন দেখতে হবে, দেখাতে হবে । সততা, নিষ্ঠা, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রেরণে অসম সাহসী ভূমিকা পালন করছে— বাংলা সংলাপ । প্রিন্ট মিডিয়ার পাশাপাশি চলছে অনলাইনেও ।

বাংলা সংলাপ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এদিনে সাংবাদিক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ী, আমাদের সহকর্মী সকলের প্রতি শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন

আর পাঠকদের প্রতি —- শুভেচ্ছা নিরন্তর । কারণ সংবাদ পত্রের মূল বিচারক পাঠকই।


Spread the love

Leave a Reply