বাঙালী ইমামের যৌন হয়রানী: ভুয়া পাসপোর্টে বৃটেন থেকে পলায়ন
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃব্রিটেনের ক্র্যাডলি হিথ-এ বসবাসরত যৌন নিপীড়নকারী জনৈক ইমাম ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে বৃটেন থেকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবরে প্রকাশ, হাফিজ রহমান নামক ডুডলি মসজিদের ঐ ইমামের বিরুদ্ধে দু’জন কিশোরীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ বিচারক (জজ) নিকলাস কার্টরাইটের আদালতে উত্থাপিত হলে তিনি ঐ ইমামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। বিচারক তার বিরুদ্ধে পাঁচটি অশালীন যৌন আক্রমণের বিষয় আমলে নিয়ে এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশের ২৪ ঘণ্টার মাথায় হাফিজ রহমান বাংলাদেশের একটি এজেন্সি থেকে ভুয়া পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বেআইনীভাবে যুক্তরাজ্য ত্যাগ করেন।
উলভার হ্যামটন ক্রাউন (রাজকীয়) কোর্টের জজ (বিচারক) নিকলাস কার্টরাইট আরও জানান যে, শুক্রবার তাঁকে অবহিত করা হয়েছে যে, হাফিজ রহমান এতই অসুস্থ যে তিনি আদালতে হাজিরা দিতে পারবেন না। তিনি আরও জানান যে, হাফিজ রহমান গ্রেফতার এড়াতে বাংলাদেশে পালিয়েছেন। অত্রাদালতে ৮ জন পুরুষ ও ৪ জন মহিলা সাক্ষীকে ৫ (পাঁচ) দিনব্যাপী বিচারের শেষ দিনে হাজির করার কথা ছিল।
বিচারক বলেন, ‘আমি মনে করি অভিযুক্ত রহমান যৌন হয়রানীর অভিযোগের শাস্তি এড়াতে পালিয়েছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বেচ্ছায় বৃটেনে ফেরৎ আসবে না।’ বিচারক আরও বলেন যে, নেদারটনস্থ বলার্ড রোড নিবাসী কুইন্স ক্রস মসজিদের ইমাম রহমান তাঁর সাত সন্তান এবং দশজন নাতি-নাতনী অধ্যুষিত পরিবারের সদস্যদের অন্তরে আঘাতযোগ্য বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন করেছেন।ইমাম রহমান বৃটেনে তাঁর সহায় সম্পত্তি রেখে পালিয়েছেন। জজ (বিচারক) আরও বলেন যে, তাঁর বাড়ীতে স্থিতাবস্থা রাখা হয়েছে এবং তাঁর কি সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে তার পূর্ণ তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে। বিচারক আদেশে বলেন যে, রহমান যে পাসপোর্ট তার আইনজীবীর নিকট জামিন প্রার্থনার সপক্ষে পেশ করেছেন তিনি সে শর্ত ভঙ্গ করেছেন এবং এ শর্ত ভঙ্গের কারণে তাঁকে আগামী ৩রা নভেম্বর দন্ডিত করা হবে।
ওয়েস্ট (পশ্চিম) মিডল্যান্ডস পুলিশ পাবলিক প্রটেকশন শাখার ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) লিজ স্কাইপি আদালতকে জানান যে, শুক্রবার রহমানের বাড়ীতে তদন্ত চালানো হয়েছে যখন রহমান তার মসজিদে ছিলেন। লিজ স্কাইপিকে জানান হয়েছিল যে, রহমান রাজকীয় আদালতে ফিরবেন কিন্তু শনিবার পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে তার একজন ছেলে জানিয়েছিল যে, তাকে (রহমানকে) পাওয়া যাচ্ছিল না।তদন্তক্রমে জানা যায় যে, রহমান বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছেন এবং বাংলাদেশী এক এজেন্সীর মাধ্যমে একটি একমুখী টিকেট ক্রয় করা হয়েছিল এবং ভ্রমণমূলক কাগজপত্র সবই ভুয়া। পুলিশ কর্মকর্তা জানান যে, ৩০ বছর আগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি কারণ তিনি তাঁর জামিনের শর্তাদি তখন ভঙ্গ করেননি।
তাঁর পক্ষের আইনজীবী তারিক শাকুর বলেন যে, নিজের পাসপোর্ট ছাড়া কিভাবে হাফিজ রহমান বৃটেন ত্যাগ করেছেন তা তদন্ত করে দেখা হউক। বিচারকালে হয়রানির শিকার দু’জন মহিলা তাদের কিশোরীকালীন সময়ে মসজিদে ধর্মীয় শিক্ষার জন্য উপস্থিত হলে কিভাবে হাফিজ রহমান যৌন হয়রানী করেন তার বর্ণনা দেন। জজ (বিচারক) নিকলাস জানান যে, অভিযোগ গঠন, নির্দেশনা ও সাক্ষ্য অনুসারে রহমানের যৌন অপরাধের জন্য চার বছর পর্যন্ত জেল (কারাবাস) হতে পারে।