বিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসন হিসাব থেকে বাদ দেওয়ার পক্ষে ব্রিটিশ প্রভাবশালী এমপিরা

Spread the love

PANews BT_P-ee7eb10f-41bc-49d4-85a2-bd74128d0650_I1বাংলা সংলাপ ডেস্কঃবিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত রাখার বিষয়ে অনেকটা একা হয়ে পড়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তাঁর নিজ দলের প্রভাবশালী এমপিরা দ্বিমত পোষণ করে বলছেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসী হিসেবে গণ্য করা ঠিক হচ্ছে না।

আগামী বুধবার এ–সংক্রান্ত একটি বিলে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের অনেক এমপি বিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসন হিসাব থেকে বাদ দেওয়ার পক্ষে ভোট দেবেন বলে আভাস দিয়েছেন।

প্রতিবছর যে পরিমাণ লোক যুক্তরাজ্যে আসে, আর যে পরিমাণ লোক যুক্তরাজ্য ছেড়ে যায়—তার পার্থক্যকে মোট অভিবাসন হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার মোট অভিবাসনকে বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনতে চায়। সেই লক্ষ্য অর্জনে তারা অভিবাসন আইনে একের পর এক কড়াকড়ি আরোপ করে। সবচেয়ে বেশি কঠোরতা আসে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে।

সমালোচকেরা বলছেন, অভিবাসন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সরকার বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি অন্যায্য সব শর্ত চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি, বিদেশি শিক্ষার্থীদের মোট অভিবাসীর হিসাব থেকে বাদ দিতে হবে। কারণ, তারা পড়াশোনা করতে যুক্তরাজ্যে আসে, স্থায়ী বসবাসের জন্য নয়। এবার সরকারি দলের সাংসদেরাও এমন দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন।

বর্তমানে সরকারের উত্থাপিত ‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা’ (হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ) শীর্ষক একটি বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। গত মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ ‘হাউস অব লর্ডস’ ওই বিলে একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাস করে। সংশোধনীতে বলা হয়েছে, সরকারের জননীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোনো শিক্ষার্থীকে দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসী হিসেবে গণ্য করা উচিত হবে না। আগামী বুধবার বিলটি নিম্ন কক্ষ হাউস অব কমনসেও পাস হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কেননা সরকারি দলের অনেক এমপি সংশোধনী প্রস্তাবটি সমর্থন করবেন বলে জানা যাচ্ছে।

গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীর আগমন কমেছে প্রায় ৪১ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে, কঠোর নীতির কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে যুক্তরাজ্য আকর্ষণ হারাচ্ছে। তারা বলছে, বিদেশি শিক্ষার্থীর আগমন কমতে থাকলে প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কোর্স ফি বাড়াতে বাধ্য হবে তারা।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন, অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী লিয়াম ফক্স এবং বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জো জনসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের অভিবাসন হিসাব থেকে বাদ দেওয়ার পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেছেন। কারও কারও যুক্তি, এটি মোট অভিবাসন কমাতে সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্যও সহায়ক। কারণ, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে যুক্তরাজ্যে মোট অভিবাসী হিসাব করা হয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজরই ছিল বিদেশি শিক্ষার্থী।

মোট অভিবাসন হিসাব থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়া হলে তা যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আগমনের জন্য সহায়ক হবে। এতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হবে।
সরকারের শিক্ষা বিভাগ বলছে, লর্ডস সভার যুক্ত করা সংশোধনী শিক্ষার্থী ভিসার যথাযথ যাচাই–বাছাইকে ঝুঁকিতে ফেলবে। জাতিসংঘের সংজ্ঞায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে বলে স্মরণ করিয়ে দেয় শিক্ষা বিভাগ।


Spread the love

Leave a Reply