বিলুপ্ত হচ্ছে ক্রিকেটের ‘তিন মোড়ল’ নীতি
বাংলা সংলাপ ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) তিন মোড়ল নীতির অবসান হতে চলেছে গত নভেম্বরে দায়িত্ব নিয়েই এমন আভাস দিয়ে রেখেছিলেন নবনির্বাচিত আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। তবে সেটি তখনো তাঁর ব্যক্তিগত মতামত ছিল। এবার আইসিসির সভায়ও হলো একই সিদ্ধান্ত। বুধবার দুবাইতে অনুষ্ঠিত আইসিসির কার্যনির্বাহী বোর্ডের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০১৪ সালে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতকে মূল ক্ষমতাধর করে আইসিসির সংবিধানে যে সংশোধনী আনা হয়েছে, সেটিকে পুনর্বিবেচনা করবে আইসিসি। নির্বাহী এবং অর্থ-বাণিজ্য সংক্রান্ত আইসিসির সবচেয়ে ক্ষমতাধর এই দুই কমিটি থেকেও তিন প্রধানের স্থায়ী সদস্যপদ প্রত্যাহার করা হবে।
আগের গঠনতন্ত্রে আইসিসির হৃৎপিণ্ড বলে বিবেচিত এই দুই কমিটিতে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড স্থায়ী সদস্যপদ পেয়েছিল। এদের অপসারণের সুযোগ ছিল না। ফলে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই তিন সদস্যই নিতে পারত। এটিই ক্রিকেট দুনিয়ায় ‘বিগ থ্রি’ বা ‘তিন মোড়ল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
এ ছাড়া সভায় আরও যে গুরুত্বপূর্ণ যে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে স্বাধীন চেয়ারম্যান নীতি। এখন থেকে সদস্য বোর্ডের সভাপতি থেকে কেউ আইসিসির চেয়ারম্যান হতে পারবেন না। গত নভেম্বরে এই বিষয়টি নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়েছিলেন শশাঙ্ক। উদাহরণ হিসেবে বলেছিলেন, ভারতীয় বোর্ডের প্রধান যদি একই সঙ্গে আইসিসি চেয়ারম্যানও হয়, এতে নিরপেক্ষভাবে তাঁর পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব হবে না। ভারতীয় বোর্ডের প্রধান ভারতের স্বার্থই তো দেখবেন।
গঠনতন্ত্রে সংশোধন এনে এই নিয়মের পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। আগামী জুনে বোর্ডের সভায় গোপন ব্যালট ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন আইসিসির নতুন চেয়ারম্যান। যাঁর মেয়াদ হবে দুই বছর। আইসিসির নতুন চেয়ারম্যান সদস্য কোনো বোর্ডের কোনো ধরনের পদে থাকতে পারবেন না। আবার চাইলেও সবাই এই পদে নির্বাচনও করতে পারবেন না। মনোনয়নের যোগ্যতা হিসেবে আইসিসির বোর্ড পরিচালক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, পাশাপাশি পূর্ণ সদস্য দশ দেশের কমপক্ষে দুটির সমর্থন থাকতে হবে।
গত নভেম্বরে এক সাক্ষাৎকারে মনোহর জানিয়েছিলেন, আইসিসিতে তিন প্রধানের ‘খবরদারি’র যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, ২০১৪-এর সংশোধনীতে, সেটি দূর করতে চান। কালকের সভার সিদ্ধান্ত সেই পথে আইসিসির পথচলার ইঙ্গিত করল। সব সদস্য দেশকেই একই দৃষ্টিতে দেখার কথা ঘোষণা করেছে আইসিসি। এ যেন আইসিসির আবার ‘সত্য যুগে’ ফেরা। সেটিও ভারতের প্রধান ক্রিকেটকর্তার উদ্যোগেই।