বিশ্বের প্রথম করোনা টিকা দেয়া হলো যুক্তরাজ্যের মার্গারেটকে

Spread the love

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ যুক্তরাজ্যে প্রথম করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়া হয়েছে ৯০ বছর বয়সী মার্গারেট কীনান’কে। পরের সপ্তাহে তিনি ৯১ বছরে পা রাখবেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে তার দেহে ইঞ্জেকশন করে এই টিকা প্রয়োগ করেন নার্স মে পারসন। তিনি কভেন্ট্রির স্থানীয় একটি হাসপাতালের নার্স। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা ভাইরাসের স্বীকৃত টিকা বিশ্বের মধ্যে প্রথম প্রয়োগ করা হলো। কভেন্ট্রির মার্গারেট কীনান আনুষ্ঠানিকভাবে এই টিকা নেয়া বিশ্বের প্রথম মানুষ হিসেবেও ইতিহাস হয়ে গেলেন। সারা বিশ্বের মধ্যে সবার আগে ফাইজার/বায়োএনটেক আবিষ্কৃত করোনা ভাইরাসের টিকা প্রথম স্বীকৃতি দেয় বৃটেন। এরপরই সবার আগে সেখানে পৌঁছে যায় পরীক্ষায় শতকরা ৯৫ ভাগ কার্যকর বলে প্রমাণিত ফাইজারের এই টিকা। আজ সকালে তা প্রথম প্রয়োগ করা হয়েছে মার্গারেট কীনানের শরীরে।
আগামী সপ্তাহে তার বয়স হবে ৯১ বছর। তিনি স্বর্ণালঙ্কারের দোকানে সহকারি হিসেবে কাজ করতেন এক সময়। সেখান থেকে মাত্র চার বছর আগে অবসরে গিয়েছেন। তার একটি মেয়ে ও একটি ছেলে আছে। আর আছে চারটি নাতিপুতি।
টিকা নেয়ার পর তিনি খুব খুশি। বলেছেন, কোভিড-১৯ এর টিকা নেয়া প্রথম ব্যক্তি হতে পেরে আমি নিজেকে খুব সৌভাগ্যবতী মনে করছি। সামনেই আমার জন্মদিন। তার আগেই এটা হলো আমার জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার, যাতে আমি সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে পারি। কারণ, এই টিকা নেয়ার উদ্দেশ্য হলো আমি পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নতুন বছর উদযাপনের জন্য আরো বেশি সময় পাব। এ জন্য নার্স মে পারসন এবং জাতীয় স্বাস্থ্য সার্ভিসের (এনএইচএস) স্টাফদের শুধু ধন্যবাদ দিতে পারি না। তারা আমার ভীষণ যতœ নিয়েছেন। অন্যদের উদ্দেশে আমার উপদেশ হলো, আপনাকে প্রস্তাব করা হলে এই টিকা নিয়ে নিন। দেখুন আমি ৯০ বছর বয়সে এসে এটা নিতে পারলে আপনিও পারবেন।
নতুন এই টিকাদান কর্মসূচিকে বিস্ময়কর এক অর্জন বলে অভিহিত করেছেন এনএইচএস ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার সাইমন স্টিভেনস। তিনি বলেছেন, নতুন এই রোগ আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এই টিকা এসে গেছে। আর তা প্রথম অনুমোদন দিয়েছে এনএইচএস। এটা বিস্ময়কর অর্জন। যারা এটাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ। এর মধ্যে রয়েছেন বিজ্ঞানী ও চিকিৎসক। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা স্বার্থহীনভাবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। যে কাজে বছরের পর বছর লেগে যায়, সেখানে তারা মাত্র কয়েক মাসে সেই কাজ সম্পন্ন করেছেন। স্বাস্থ্যখাতে আমার সব সহকর্মী ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে যথার্থই গর্বিত। একই সঙ্গে এনএইচএসের টিকাদান কর্মসূচিতে প্রথম রোগী হওয়ার জন্য মার্গারেট কীনানকেও ধন্যবাদ।
নার্স মে পরসন্স বলেছেন, দেশে প্রথমবার একজন রোগীর ওপর এই টিকা প্রয়োগ করতে পারাটা বিপুল সম্মানের। ইউনিভার্সিটি হসপিটালস কভেন্ট্রি এন্ড ওয়ারউইকশায়ার এনএইচএস ট্রাস্টে বক্তব্যকালে তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক দিনে ভূমিকা রাখতে পেরে আমি গর্ব অনুভব করছি। গত কয়েকটি মাস আমাদের সবার জন্য কাজ করা ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে আলোর দেখা যাচ্ছে। নার্স পারসন্সের মূল বাড়ি ফিলিপাইনে। তিনি ২৪ বছর আগে বৃটেনে এনএইচএসে কাজ নেন।


Spread the love

Leave a Reply