বৃটেন থেকে প্যারিসে জেলেনস্কি, বৈঠক করলেন ম্যাক্রন ও শলতসের সঙ্গে
ডেস্ক রিপোর্টঃ রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর দীর্ঘ দিন দেশ ছেড়ে কোথাও যাননি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরপর গত ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে সংঘাত শুরুর পর প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান তিনি। রাশিয়ার আক্রমণ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে ক্রমশ। এমন অবস্থায় মিত্রদের থেকে আরও বেশি সহায়তা প্রয়োজন ইউক্রেনের। তা নিশ্চিতেই এবার বৃটেন ও ফ্রান্স সফরে গেলেন জেলেনস্কি। সেখান থেকে বড় সহায়তার আশ্বাস পেয়েছেন তিনি। সাথে তিনি রাশিয়াকে হারিয়ে দেয়ার প্রত্যয়ের কথাও জানিয়েছেন।বুধবার তিনি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় সেখানে ছিল জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলতসও। তারা উভয়েই ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ম্যাক্রন বলেছেন, রাশিয়ার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।অপরদিকে শলতস বলেন, যুদ্ধের শেষ দিন পর্যন্ত ইউক্রেনের পাশে থাকবে জার্মানি।
এর আগে যুদ্ধের মধ্যেই বৃটেন সফরে যান জেলেনস্কি। সেখানে বৃটিশ আইনপ্রণেতাদের সামনে বক্তব্য রাখেন তিনি। রাশিয়ার সামরিক অভিযান মোকাবেলায় বৃটেন যেভাবে ইউক্রেনের পাশে ছিল তার জন্য দেশটির আইনপ্রণেতাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন তিনি। যদিও তার বক্তব্যের আসল বিষয়বস্তু ছিল ইউক্রেনের জন্য আরও সামরিক সহায়তা চাওয়া। বৃটিশ পার্লামেন্টে দেয়া ভাষণে তিনি যুদ্ধবিমানকে ‘মুক্তির ডানা’ হিসেবে তুলে ধরেছেন। শিগগিরই ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলেনস্কি।
বিবিসি জানিয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকও তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন ইউক্রেনকে দেয়া যেতে এমন কোনো যুদ্ধবিমান আছে কিনা। যদিও যুদ্ধবিমান দেয়া হবে একটি দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। বৃটিশ আইনপ্রণেতাদের সামনে দেয়া ভাষণে ইউক্রেনের জন্য যুদ্ধবিমানও চান জেলেনস্কি। তিনি বলেন, এই যুদ্ধবিমান পেলে রাশিয়ার অগ্রগতি তারা রোধ করতে পারবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের এই সব বক্তব্য শুনতে বুধবার ৯০০ বছরের পুরোনো বৃটেনের ওয়েস্টমিনস্টার হল কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল। জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়া এই যুদ্ধে হেরে যাবে। তিনি রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্যও বৃটিশ সরকারকে অনুরোধ করেন। পার্লামেন্টে ভাষণ দেয়ার আগে ডাউনিং স্ট্রিটে ঋষি সুনাকের সঙ্গে বৈঠক এবং রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
জেলেনস্কি এরপর বৃটেন থেকে উড়ে যান প্যারিসে। বুধবার সেখানে প্যারিসের এলিজি প্রাসাদে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলতসের সঙ্গে বৈঠক করেন। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের জন্য জার্মানি থেকে উড়ে আসেন দেশটির চ্যান্সেলর। জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, প্রায় এক বছর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তখন থেকেই ইউক্রেনকে সবরকম সাহায্য পাঠানো হচ্ছে। মানবিক এবং সামরিক সাহায্য। জার্মানি যুদ্ধের শেষদিন পর্যন্ত এভাবেই ইউক্রেনের পাশে থাকবে। জবাবে জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধের প্রথম দিন থেকে জার্মানি এবং ফ্রান্স ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। ভবিষ্যতেও এভাবেই ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো হবে বলে তিনি আশাবাদী। একইসঙ্গে জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া ভাবতে পারেনি এতদিন ধরে তাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। রুশ বাহিনী বুঝে গেছে, এই যুদ্ধ তাদের পক্ষে আর জেতা সম্ভব নয়।