বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রাথমিক তালিকায় ১৪২৩ মৃত্যু
সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও শেষে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘিরে সহিংসতায় ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম।
তারেকুল ইসলাম বলেন, আমরা ১ হাজার ৪২৩ জন শহিদের একটি প্রাথমিক তালিকা আমরা তৈরি করতে পেরেছি। তবে এর মধ্যে সংযোজন-বিয়োজন হবে; এরমধ্যে পুলিশ বা ফ্যাসিবাদের দোসর ছাত্রলীগ বা আন্দোলনে নিহত না হওয়া কেউ থাকবেন না। ভেরিফিকেশেন এবং ভেলিডেশনের কাজটি চলমান রেখেছি।
তারেকুল ইসলাম বলেন, আন্দোলন ঘিরে ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৮৭ জনের অঙ্গহানি হয়েছে। গুলি লেগে আংশিক বা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ৬৮৫ জন। ৯২ জনের দুই চোখেই গুলি লেগেছে, দুই চোখই নষ্ট হয়ে গেছে।
আহতদের তালিকা তৈরির কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আহতদের নিয়ে কাজ কাজ করাটা খুব দুরূহ। কারণ সংখ্যাটা বিপুল। এরমধ্যে আমরা যখন হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করি তখন প্রচুর গার্বেজ ডেটা চলে আসে। যারা আন্দোলনে আহত না তাদের নাম চলে আসে। আহতদের শুধু নাম পাওয়া যায়, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা পর্যন্ত পাওয়া যায় না। আমরা কিছু ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে তাদের নাম ঠিকানা উদ্ধার করতে পেরেছি। তারপর যাচাই করতে গিয়ে দেখেছি এদের মধ্যে কিছু আছে আন্দোলনে আহত হননি।
তারেকুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি আহতকে তাদের পক্ষ থেকে জরুররি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ২ হাজার, সাজেদা ফাউন্ডেশন ৪৫০ জন রোগীর সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছে, ১৮০০ জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।
তারেকুল ইসলাম বলেন, সঠিক তথ্য না থাকায় যোগাযোগের অভাবে আহত অনেকের কাছে পৌঁছুতে দেরি হয়েছে। তবে যেখানেই খবর পাওয়া যাচ্ছে যে কারও আর্থিক সহায়তা দরকার, সেখানেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আন্দোলনে হতাহতদের চিকিৎসার বিষয়ে এই সমন্বয়ক বলেন, চিকিৎসার ব্যবস্থা আগেই ফ্রি করা হয়েছে। কিন্তু এটাই যথেষ্ট না, অনেকের পরিবার টিকতে পারছে না। খাওয়ার টাকা নাই। আমরা যখনই এমন খবর পাচ্ছি সেখানেই বিভিন্ন ডোনার এজেন্সির মাধ্যমে আমরা সাহায্য পাঠানোর চেষ্টা করছি। হাসপাতালে ভর্তি, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, চোখের দৃষ্টি হারিয়েছে, গুলি লেগেছে-এমন রোগীদের কাছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জুলাই শহীদ ফাউন্ডেশন আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেবে।