ব্রিটেনে আত্ম-কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এগিয়ে বাংলাদেশিরা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ‘স্টাট-আপ লোন’ নামে পাঁচ বছর আগে যুক্তরাজ্য সরকারের উদ্যোক্তাদের সহায়তা প্রকল্পে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত উদ্যোক্তরা অনেক বেশি সফল হয়েছেন। দেশটিতে ১১ হাজারের বেশি নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুর মধ্যে বাংলাদেশিরা সামনের সারিতে আছেন। সোমবার (২০ আগস্ট) লন্ডনে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সমাজের বৈষম্য দূর করতে সব শ্রেণির মানুষকে ব্যবসা শুরুর প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিতে ‘স্টার্ট আপ লোন’ প্রকল্পটি চালু করা হয়। নতুন গবেষণায় দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের ১৫ শতাংশ শ্রমিক আত্ম-কর্মসংস্থানের আওতায় রয়েছে। বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শ্রমিকদের বেশিরভাগই আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
যুক্তরাজ্যের বিজনেস মিনিস্টার রিচার্ড হ্যারিংটন বলেন, ‘একটি ন্যায্য সমাজ গঠনের প্রচেষ্টার মাধ্যমে সব শ্রেণির উদ্যোক্তদের ব্যবসায় উন্নতি করার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার আমাদের সমাজের জাতিগত বৈষম্য দূর করার জন্য নতুন উপায় খোঁজা অব্যাহত রেখেছে। সবাইকে উন্নতি করার সমান সুযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।’
গবেষণায় বলা হয়, ২০১২ সালে সরকার স্টার্ট আপ পরিকল্পনা শুরুর পর থেকে ৫৫ হাজারের বেশি ব্যবসায় সহায়তা করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫টি ব্যবসাকে সহায়তা করা হয়েছে। ৪০ কোটি পাউন্ডের বেশি অর্থ ঋণ দিয়ে ৬৬ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান করা হয়েছে। আর এসব ঋণের প্রতি পাঁচটির মধ্যে একটি পেয়েছেন নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু গ্রাহক। যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়, জ্বালানি ও শিল্প কৌশল মন্ত্রণালয় বলেছে, এই গবেষণায় দেখা হয়েছে, শক্তিশালী উদ্যোক্তা ব্যবসার পরিবেশ ও ন্যায্য সমাজ গঠনে সরকার কতটা কাজ করেছে।
২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুরা উচ্চ হারে স্টার্ট আপ লোন পেয়েছেন। গতবছর প্রতি ১০ হাজার নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুর মধ্যে ৫ দশমিক ৭ জন এই ঋণ পেয়েছেন। যেখানে শেতাঙ্গ উদ্যোক্তরা পেয়েছেন প্রতি ১০ হাজার জনে ২ দশমিক ৪ জন।
বিজনেস ইন দ্য কমিউনিটি- সংগঠনের জাতিগত সমতা পরিচালক সান্দ্র কের বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গ ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু কর্মীরা প্রায়ই গতানুগতি কর্মপরিবেশে ভাল করতে পারে না। তাই তাদের অনেকেই নিজস্ব ব্যবসা বেছে নেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্টার্ট আপ প্রকল্পের সুবিধা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের একটি বৈচিত্রময় ব্যবসায় সম্প্রদায় আছে এটা নিশ্চিত করতে সরকারি বিনিয়োগকে আমরা উৎসাহিত করি। এতে কৃষ্ণাঙ্গ ও সংখ্যালঘু জাতির মেধা ও উদ্যোমের প্রকাশ ঘটে।’
যেকোনও ব্যবসা শুরু ও বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের র্যাঙ্কিংয়ে যুক্তরাজ্য সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে প্রতিদিন প্রায় ১১০০ ব্যবসা শুরু হয়। হিসাব করলে প্রতি ৭৫ সেকেন্ডে সেখানে একটি ব্যবসা শুরু হচ্ছে।