ব্রিটেনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবণতা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃযুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সাধারণ জনসংখ্যার তুলনায় বেশি বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।
সামনের মাসে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সম্মেলনে ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার শীর্ষক একটি বিশ্লেষণধর্মী পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হবে। এ ধরণের জরিপ, পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান দফতর।
সবশেষ ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ি ব্রিটেনে ১৪৬ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত আত্মহত্যার হার কমলেও ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ৫৬ শতাংশ বেড়ে যায়।
একে জরিপে দেখা যায় পুরুষ শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার বেশি হলেও ইদানিং নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেড়েই চলছে। ২০১২ থেকে ২০১৬ সালের পর্যন্ত জননীতি গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিশ্লেষণে এমন চিত্রই উঠে আসে। এক্ষেত্রে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা তেমন কাজে আসেনা বলে জানান হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর রেমন্ড নক।
তবে ব্যাকিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার অ্যান্থোনি সেলডোন জানান, “যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভিন্ন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতো তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা ও মানসিক অবসাদের হার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হতো। ”
তবে এই পরিসংখ্যানগুলো শিক্ষার্থীদের ধরণ, তারা কোথায় কি নিয়ে পড়াশোন করছে সে বিষয়গুলো নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করেনি। একারণে এই তথ্যগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার ঝুঁকির বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যবহার করার জন্য অনুপযোগী। এমনটিই জানালেন জাতীয় পরিসংখ্যান অধিদফতর। এক্ষেত্রে তারা প্রতিটি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঝুঁকি বুঝতে বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে কাজ করার কথা জানায়।
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণায় দেখা যায়, অর্থনৈতিক মন্দার পর থেকে তাদের এই সমস্যা বাড়ছে। অথচ এ বিষয়ে কোন বিশ্লেষণধর্মী গবেষণা হয়নি বলে হতাশা প্রকাশ করেন গবেষক এডওয়ার্ড পিঙ্কনে। এর পেছনে তিনি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় কিছু পদ্ধতিগত সমস্যাকে দায়ী করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়লেও এ ধরণের সমস্যা প্রকাশ করার প্রবণতা গত বছর ৫ গুন বাড়ায় পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন হবে বলে আশা করছেন গবেষক এডওয়ার্ড।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে সাহায্য করার পাশাপাশি তাদের সঠিক শিক্ষা দেয়া, সতর্ক করা সেইসঙ্গে মিলেমিশে থাকার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে পারলে এই ঝুঁকি আরো কমিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে সমস্যা অঙ্কুরে থাকতেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।