ব্রিটেন ইইউ ছাড়লে প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে : আইএমএফ
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে গেলে তা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধিতে মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়লে ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে দেশটির বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভেঙে পড়া ছাড়াও ব্রিটেন ও ইউরোপ উভয়ের জন্য তা বড় ধরনের নানা চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
বুধবার এ বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিরোনাম করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ মরিস অবস্টফেল্ড বলেন, ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্ত দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে।
আন্তর্জাতিক এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়া না ছাড়ার প্রশ্নে ২৩ জুনে গণভোট অনুষ্ঠানের ঘোষণা এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীদেরকে অনিশ্চয়তায় ফেলেছে। আর গণভোটে ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়লে সে অনিশ্চয়তা কেবল আরও বাড়বে। এতে করে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা সবেচেয়ে বড় ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। তবে ইইউ ছাড়ার পক্ষের ভোটাররা বলছেন, আইএমএফ অতীতে বরাবরই ভুল পূর্বাভাস দিয়ে এসেছে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং বিশ্বের দেশগুলোর স্থায়ীভাবে কম প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতির নিম্নহার এবং নিম্ন সুদের হারের চক্রে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে বলে আইএমএফ পূর্বাভাস দেওয়ার মধ্যে নতুন করে এ সতর্কবার্তা দিল।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে গেলে ইইউ’র সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে দেশটির যেসব বাণিজ্যিক চুক্তি আছে সেগুলো ভেস্তে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থনৈতিক গতিশীলতা। এতে করে দীর্ঘ সময়ের জন্য চরম এক অনিশ্চয়তা দেখা দেবে। এছাড়া, ইইউ দেশগুলোর মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সুবিধাগুলোও যুক্তরাজ্য হারাবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ।
সংগঠনটির এ সতর্কবার্তা আমলে নিয়ে এর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ চ্যান্সেলর জর্জ অসবর্ন। তিনি বলেন, ইইউ ছাড়লে ভবিষ্যতে তার কি কুপ্রভাব পড়বে সে ম্পর্কে আইএমএফ স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও এক ট্যুইটে লিখেছেন, আইএমএফ ঠিক কথাই বলছে। ইইউ ত্যাগ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।
তবে ইইউ’তে যুক্তরাজ্যের থাকার পক্ষের শিবির আইএমএফ এর সমালোচনা করে বলেছে, সংগঠনটি অতীতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি নিয়ে ভুল পূর্বাভাস দিয়েছে। আর এখন তারা চ্যান্সেলর অসবর্নের অনুরোধে আবারও একই কাজই করছে। ইইউ এর সংস্কার না হওয়া এবং ইউরো ও শরণার্থী সঙ্কটের মতো সমস্যাগুলো মোকাবেলায় একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে ইইউ এর ব্যর্থতাই যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বলে মনে করে এ ব্লকটি ত্যাগের পক্ষের শিবির।