ব্রেক্সিটের অচলাবস্থার মধ্যেই ইইউ নাগরিকদের নিবন্ধন শুরু
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর নাগরিকদের (ইইউ নাগরিক) নিবন্ধনপ্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। ইইউ নাগরিকেরা ব্রেক্সিটের পরও যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে চাইলে অবশ্যই তাদের নিবন্ধিত হতে হবে। সোমবার থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে চলমান অচলাবস্থার মধ্যেই ইইউ নাগরিকদের নিবন্ধনের এই প্রক্রিয়া শুরু হলো। গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যান করলে ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। আগামী ২৯ মার্চ ব্রেক্সিট কার্যকর হবে বলে দিনক্ষণ নির্ধারিত রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদনে মরিয়া যুক্তরাজ্যের সরকার। তবে বিচ্ছেদের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আবার গণভোটের দাবিতে অটল রয়েছে বিরোধীরা।
‘ইইউ সেটেলমেন্ট স্কিম’ নামে পরিচিত এই নিবন্ধন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সব ইইউ নাগরিককে নিবন্ধিত হতে হবে। যাঁদের যুক্তরাজ্যে বসবাসের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাঁরা ‘সেটেলড স্ট্যাটাসের’ (স্থায়ী বাসিন্দা) জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর যাঁদের যুক্তরাজ্যে অবস্থানের মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হয়নি, তাঁরা ‘প্রি সেটেলমেন্টের’ (স্থায়ী হওয়ার অপেক্ষায়) জন্য আবেদন করতে পারবেন। উভয় ক্ষেত্রে ফি ধরা হয়েছে ৬৫ পাউন্ড (প্রায় ৭ হাজার টাকা)। যাদের বয়স ১৬ বছরের কম, তাদের ফি ৩২ পাউন্ড ৫০ পেন্স (সাড়ে তিন হাজার টাকা)।
ইইউ নাগরিকদের সঙ্গে বিয়ে বা সম্পর্কের সূত্রে ইইউ-বহির্ভূত দেশের যেসব নাগরিক যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন, তাঁদেরও এই নিবন্ধনপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
ইইউভুক্ত দেশের প্রায় ৩৫ লাখ নাগরিক যুক্তরাজ্যে বসবাস করছে। এই বিপুলসংখ্যক আবেদনকারীর জন্য যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিভাগ একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে, যার মাধ্যমে খুব সহজে এবং স্বল্প সময়ে আবেদন করা যাবে বলে দাবি করছে ব্রিটিশ সরকার।
স্বল্প পরিসরে গত বছর দুই দফায় আবেদনের এই প্রক্রিয়া পরীক্ষামূলক চালু ছিল। সোমবার থেকে চালু হওয়া তৃতীয় ধাপে সব ইইউ নাগরিকের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। তবে আগামী ৩০ মার্চ থেকে পুরোদমে এই নিবন্ধন চালু হবে।
চুক্তির মাধ্যমে ব্রেক্সিট কার্যকর হলে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত নিবন্ধনের সময় পাবেন ইইউ নাগরিকেরা। আর চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ ঘটলে ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। আবেদনগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে ১৫০০ অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিটের অচলাবস্থা নিরসনে নিজ দলের বিদ্রোহীদের সমর্থন আদায়ের কৌশল নিয়েছেন। বিবিসির এক খবরে বলা হয়, বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করলেও তাদের সমর্থন আদায়ের পথ কঠিন বলে ধরে নিয়েছে সরকার। ফলে চুক্তিতে উল্লেখিত আয়ারল্যান্ড সীমান্তসংক্রান্ত ধারা নিয়ে ক্ষমতাসীন ও শরিক দল ডিইউপির যে উদ্বেগ, সেটি নিরসন করে চুক্তিটি পাসের চেষ্টা চালাবেন মে।