ভারতের মন্দিরে আতশবাজির আগুনে ১০৬ জনের মৃত্যু
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
ভারতের কেরালা রাজ্যের পুত্তিঙ্গাল মন্দিরে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ১০৬ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩৫০ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
লন্ডন সময় গতরাত সাড়ে ন’টার দিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার রাজধানী থিরুভানান্তাপুরমের ৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী কোল্লাম জেলার পারাভর পুত্তিঙ্গাল দেবী মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত।
পুলিশ জানায়, ওই মন্দিরে একটি উৎসবকে ঘিরে ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উৎসব উপলক্ষে রাতভর বাজি ফাটানোর প্রতিযোগিতা চলছিল। হঠাৎই বাজির আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়ে মন্দির চত্বরে রাখা বাজির স্তুপে। মুহূতেই গোটা মন্দির ও মন্দির চত্বরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আতঙ্কে মানুষ দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দেয়। ততক্ষণে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। দৌড়াদৌড়ির সময় পদপিষ্ট হয়ে মারা যান আরও বেশ কয়েক জন মানুষ। বাজির বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে মন্দিরের ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উদ্ধার তৎপড়তা শুরু করে।
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ এবং দমকল বাহিনী জোরেশোরে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। উদ্ধার কাজে সহায়তা করতে বিমানবাহিনীর চারটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নীচে কেউ আটকে আছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে উদ্ধারকারী দল। নিহতদের মধ্যে ৫৬ জনকে শনাক্ত করা গেছে। আহতদের শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চন্ডী ঘটনাস্থলে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বলে সরকারের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন। প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কেরালা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছেন মোদি।
ঘটনার জন্য দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছে কংগ্রেস। এ ঘটনায় মন্দির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। কেরালা প্রশাসনের ভাষ্য, প্রতিযোগিতামূলক ওই আতশবাজির জন্য তারা অনুমতি দেননি।