ভিসা কেলেঙ্কারির দায়ে লন্ডনে চার বাংলাদেশির সাজা
বাংলা সাংলাপ ডেস্কঃ ভিসা জালিয়াতি ও ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টার দায়ে যুক্তরাজ্যে চার বাংলাদেশির বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করেছে একটি আদালত। এই জালিয়াতির ঘটনাকে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় অভিবাসন জালিয়াতি আখ্যা দিয়েছে তদন্তকারীরা। আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভুয়া ভিসা তৈরি ও ট্যাক্স বিভাগকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টার প্রমাণ পেয়েছে লন্ডনের সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্ট। সাজাপ্রাপ্তরা হলো, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান খান, শাহিদা রোকসানা, মাজাহারুল হক ও মাকসুদা বেগম।
চলতি সপ্তাহে দণ্ড ঘোষণার শুনানিতে মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতারণার ষড়যন্ত্র প্রমাণিত হলে তাকে দুই বছরের জন্য বিশেষ সাজা (সাস্পেন্ডেন্ড সেন্টেনস) দেওয়া হয়। এই সাজায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কারাগারে যেতে হবে না, তবে তাকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অবশ্যই কিছু কঠোর শর্ত মেনে চলতে হবে। এছাড়া প্রতারণা ও রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় শাহিদাকে ১৯ মাসের এবং মাহজারুলকে ১৬ মাসের বিশেষ সাজা দেওয়া হয়েছে। বিচারের শুরুতে দায় প্রতারণার দায় স্বীকার করায় মাকসুদাকে ১০ মাসের বিশেষ সাজা দেওয়া হয়েছে।
ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের (সিপিসি) স্পেশালিস্ট ফ্রড ডিভিশনের লন্ডন শাখার প্রধানম্যারিয়াম অ্যার্নট বলেন, ‘এটা সিপিসির হাতে আসা সবচেয়ে বড় ভিসা জালিয়াতির ঘটনা বলে বিশ্বাস করা হয়। এবং এই ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ব্যবস্থাকে ভুল পথে নিতে যে পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল তা ভয়ঙ্কর। আমাদের স্পেশালিস্ট ফ্রড ডিভিশন ও কাস্টমস বিভাগের কঠোর পরিশ্রম ও অভিজ্ঞতার কারণে তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা গেছে।’
সিপিসি জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বোকা বানিয়ে মিথ্যা কোম্পানির একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলো তথাকথিত ‘অভিবাসন উপদেষ্টারা’। অভিবাসন আবেদনের জন্য তথ্য নিতে ফিরও ব্যবস্থা করে তারা। মামলার আসামিরা রাজস্ব খাতেও বেতন জালিয়াতি চালানোর চেষ্টা করেছিল। তবে এতে তারা সফল হলে যুক্তরাজ্যের লাখ লাখ পাউন্ডের ক্ষতি হতো।
যুক্তরাজ্যে আইনত থাকার যোগ্য না হয়েও এই জালিয়াতদের মাধ্যমে শত শত মানুষ (যাদের অধিকাংশ বাংলাদেশ থেকে আসা) সফলভাবে ভিসার আবেদন করেছে। এসব আবেদনকারীর অনেককে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকার অথবা অনির্দিষ্টভাবে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ওই সময়ে আসামিদের ব্যবসা ও বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভিসা জালিয়াতি ও ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। এসব প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
লন্ডন আদালতের সর্বশেষ এই সাজার সঙ্গে আগের দুটি বিচারের সংযোগ রয়েছে। যাতে ৯ আসামিকে প্রতারণা ও রাজস্ব ফাঁকির দায়ে মোট ৩১ বছরের সাজা প্রদান করে সাউথওয়ার্ক ক্রাউন আদালত।