ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত জাপানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্ক:

মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে জাপানে দু’দফায় চারটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেগে সর্বশেষ ৪১ জনে দাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে উপর্যুপরি এ দূর্যোগে আহতের সংখ্যাও ২০০০ ছাড়িয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক শ ঘরবাড়ি। এখনো পুরোদমে চলছে উদ্ধার তৎপরতা।

বৃহস্পতিবার রাতে পরপর দুইবার এবং শুক্রবার রাতে আরও অধিক মাত্রার দুই শক্তিশালী ভূমিকম্প হওয়ায় জাপানের কিয়েশু অঞ্চল ও কুমামোতো প্রিফেকচারের জনজীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। এ ছাড়া বড় ধরনের ভূমিকম্পের পর কয়েক বার স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প ও পরাঘাত (আফটার শক) হওয়ায় পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০১১ সালের পর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারের ভূমিকম্প ছিল জাপানে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প ও এ-সংক্রান্ত দুর্যোগ। পাঁচ বছর আগের ওই ভূমিকম্পে মারা যায় ১৮ হাজার লোক। ফুকুশিমা পরমাণুকেন্দ্র বিস্ফোরিত হয়ে চরম রাসায়নিক বিষক্রিয়া দেখা দেয়।

জাপানের জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম (এনএইচকে) জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে কুমামোতো প্রিফেকচারের ৭.১ ও ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার রাতে একই অঞ্চলের ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত হয়েছে নয়জন। পরপর দুদিনের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়ে ৪১ জনে।

শনিবার সকাল পর্যন্ত ভূমিকম্পে আহত ২ হাজার লোক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি বলে জানিয়েছে জাপানের গণমাধ্যমগুলো।

ছবি: পাহাড় ধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে মহাসড়ক
ছবি: পাহাড় ধ্বসে বন্ধ হয়ে গেছে মহাসড়ক

কুমামোতোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রায় ৯০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। ৮০০টি বাড়ি অর্ধেক বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখনো অনেক পৌর অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়া জীবিতদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়েছে যাচ্ছে যৌথ উদ্ধারকারী বাহিনী। উদ্ধার তৎপরতা শেষ হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

কুমামোতো এবং ওইটা প্রিফেকচারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের ফলে ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর ফলে প্লাবন ও ভূমিধস হতে পারে। যে কারণে এ দুই এলাকা থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ হয়েছে।

ভূমিকম্পে হাজারো বাড়ি বিদ্যুৎহীন হয়ে গেছে। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের। পরিবহন ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। সব মিলে চরম খারাপ অবস্থায় পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ।

কায়েশু অঞ্চলে শিনকাসেন বুলেট ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পথে ৯০টি রুটে যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে মাটিতে ফাঁটল দেখা দেওয়ায় চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

ত্রান সরবরাহ করছে সেনাবাহিনী
ছবি : ত্রান সরবরাহ করছে সেনাবাহিনী

ভূমিকম্পে কুমামোতো বন্দরে ফেরিঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে সরকার। যেকোনো ধরনের সুবিধা দিতে সরকার ও তার বাহিনী প্রস্তত।


Spread the love

Leave a Reply