ভ্যাকসিন দেন, না হয় ভাইরাস নেন
সাজু আহমদঃ
বিলেতের সেরা বিজ্ঞানীদের মতামত হচ্ছে ভাইরাস এর সাথে ছলচাতুরি করার সুযোগ নেই. ভাইরাস কে এড়িয়ে যাওয়ার ও সুযোগ নেই. তাই হয় ভ্যাকসিন দেন, না হলে ভাইরাস নেন।
পুরো যুক্তরাজ্যে ৮৯ ভাগ মানুষ করোনা ভাইরাস এর দ্বিতীয় ভ্যাকসিন দিলেও লন্ডনে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৭ লক্ষ মানুষ ভ্যাকসিন নেননি এবং পুরো ইংল্যান্ডে ভ্যাকসিন নেননি সংখ্যা অনুপাতে প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ।
হসপিটালে যারা করোনা ভাইরাস এর কারণে ইনটেনসিভ কেয়ার এ যাচ্ছেন তাদের মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষই ভ্যাকসিন নেননি।
যারা হসপিটালে যাচ্ছেন তাদের ৯০ ভাগের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে. অনেকে মৃত্যুশয্যায় দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিনের জন্য আফসোস করছেন নার্সের কাছে, তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে. লন্ডনের হসপিটালে এখনো এক হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে।
করোনা ভাইরাস এর সর্বোচ্চ সংক্রমণ কালে যুক্তরাজ্যে জাতিগত দিক দিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে মৃত্যুর হার সর্বোচ্চ থাকলে ও
লন্ডনের বাংলাদেশী অধ্যুষিত নিউহাম, রেডব্রিজ, টাওয়ার হ্যামলেটস্, ও বার্কিং এবং ডেগেনহাম এলাকায় এখনো প্রায় অর্ধেকের মতো মানুষ ভ্যাকসিন দেননি۔ বিবিসির এক রিপোর্টে দেখা যায় টাওয়ার হ্যামলেটসে ৫৮ ভাগ মানুষ, নিউহামে ৫৩ ভাগ মানুষ, রেডব্রীজে ৬২ ভাগ ও বার্কিং এবং ডেগেনহামে মাত্র ৫৫ ভাগ মানুষ দ্বিতীয় ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
লন্ডনের মধ্যে সর্বোচ্চ নিউহামে প্রায় এক লক্ষ ত্রিশ হাজার মানুষ, রেডব্রীজে পঁচাত্তর হাজার মানুষ, এবং টাওয়ার হ্যামলেটসে প্রায় এক লক্ষ ছয় হাজার মানুষ প্রথম কিংবা দ্বিতীয় কোন ভ্যাকসিন দেননি।
শুধু বাঙালি ও মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা নয়, ব্রেন্ট এ প্রায় এক লক্ষ পঁচিশ হাজার ও হ্যাকনিতে প্রায় এক লক্ষ মানুষ ভ্যাকসিন দেননি. এসব এলাকাতে বেশিরভাগ কালো, ভারতীয় ও ইহুদি মানুষ বসবাস করে থাকেন।
কিন্তূ কোন ধর্মে কিংবা কোন প্রথম সারির ধর্মীয় নেতা তথা ইমাম কিংবা ধর্মীয় চিন্তাবিদরা ভ্যাকসিনের বিরুধিতা করেননি।
ভ্যাকসিন দিলে বাচ্চা জন্ম দেয়ার হার কমে যায় এটা ও কোন গবেষণায় প্রমান পাওয়া যায় নি. অনেকে টিটেনাস, যক্ষা, নিউমোনিয়া সহ অন্য রোগের জন্য ছোটবেলা ছয়টি টিকা বা ভ্যাকসিন দিলে ও করোনা মহামারী কালে নিজে এবং প্রিয়জনের জীবন বাঁচাতে ভ্যাকসিন দিতে অজানা আতঙ্কে ভুগছেন!
বিলেতের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এডাম ফিন বলেন ভাইরাস কে আপনি কোনমতে এড়িয়ে যেতে পারবেন না, ভ্যাকসিন দেয়ার মধ্যে যে সামান্যতম ঝুঁকি আছে, এর চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকি ভ্যাকসিন না দেয়া, এ ক্ষতি আপনার নিজের জন্য, আপনার আশে পাশের মানুষগুলোর জন্য. হসপিটালে যাওয়ার পর অনেকে মনে করছেন কেন তারা সঠিক তথ্য পেলেন না, কেন ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হলেন।
ভাইরাস এর সাথে চালাকি করবে পারবেন না!
হয় ভ্যাকসিন নেন, না হলে ভাইরাস নেন!
যারা তরুণ মনে রাখবেন, ভাইরাস বুড়া, জোয়ান মানে না, হাসপাতাল গেলে ভ্যাকসিন চাইলে ও দিতে পারবেন না!
আসুন সবাই উৎসাহিত করি সবাই কে. লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকাতে প্রায় অর্ধেকের মতো মানুষ ভ্যাকসিন দেননি۔ আমাদের মসজিদের ইমাম, কমুনিটির নেতা, সমাজের সচেতন প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব যারা ভ্যাকসিন নেননি তাদের সচেতন করা।
তারা শুধু নিজের জন্য বিপদ ডেকে আনছেন না, আমাদের জীবন ও ঝুঁকিপূর্ণ করছেন।
তাই নিজের জন্য না হলে ও মানবতার জন্য, নিজেদের প্রিয় অসুস্থ, বৃদ্ধ মা, বাবা, চাচা কিংবা খালুদের জন্য ভ্যাকসিন দেন।