মর্মান্তিক!
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ কী মর্মান্তিক, মর্মন্তুদ দৃশ্য। এসেছিলেন প্রয়াত নেতার কুলখানিতে। ফিরে গেলেন লাশ হয়ে। ১১ জীবন্ত মানুষের পরিচয় বদলে গেল মুহূর্তের মধ্যেই। পদপিষ্ট হয়ে মারা গেছেন তারা। তাদের এই মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন পুরো চট্টগ্রাম।
মেজবানি আয়োজন পছন্দ করতেন চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। দলের নেতাকর্মীসহ চট্টগ্রামের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিতেন তার মেজবানিতে। প্রিয় নেতার মৃত্যুতে কুলখানি উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল তেমনি এক মেজবানির। চট্টগ্রামের অন্তত এক লাখ লোককে খাওয়ানোর এ আয়োজনে দাওয়াত পেয়েছিলেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। মুসলমান ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বী অতিথিদের জন্য খাবারের আয়োজন ছিল নগরীর রিমা কমিউনিটি সেন্টারে। এখানেই মর্মান্তিক এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানে আসা লোকজন হুড়োহুড়ি করে ভেতরে প্রবেশ করতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জন মারা যান। আহত হয়েছেন শতাধিক। আহতদের নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে নগরীর আসকার দীঘির পাড়ে অবস্থিত রিমা কমিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এই কমিউনিটি সেন্টারে মূলত হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ অন্য ধর্মাবলম্বী অমুসলিমদের জন্য প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের পক্ষ থেকে মেজবানির আয়োজন করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ১১ জনের মৃতদেহ আনা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহতরা হচ্ছেন- ঝন্টু দাশ (৪৬), সুধীর দে (৪৩), কৃষ্ণ প্রসাদ (৩৮), প্রদীপ তালুকদার (৪৬), লিটন দেব (৩৯), টিটো (৩৬), অলক ভৌমিক (৪৪), দীপঙ্কর (৪৬), রাহুল দাস (৩৪) ও ধনা শীল (৪৭), পরিমল দাশ (৪৭)। এছাড়া আহত কতজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং তাদের নাম-পরিচয়ও তিনি বলতে পারেননি। তবে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি।
জহিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নিহত ও আহতদের স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় করছেন। তাদের কেউ কেউ লাশ শনাক্ত করে কান্নাকাটি ও আহাজারি করছেন। এতে চমেক হাসপাতাল এলাকায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
রিমা কমিউনিটি সেন্টারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত নগরীর খুলশি থানার এসআই আবদুর রহিম জানান, দুপুর ১টা থেকে রিমা কমিউনিটি সেন্টারে মেজবান খেতে আসা লোকজনের ভিড় জমে। কার আগে কে খেতে ঢুকবেন তা নিয়ে হুড়োহুড়ি করতে গিয়ে পদদলিত হয়ে নিহত ও আহতের এই ঘটনা ঘটে।
গত শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মহানগরীর বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চট্টগ্রামের বর্ষীয়ান নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ওইদিন বিকালে নগরীর লালদীঘি ময়দানে স্মরণকালের বৃহত্তম জানাজা শেষে চশমা হিলস্থ পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।