মাইগ্রেশন সমস্যা সমাধানে ১৪ সেপ্টেম্বর জরুরি বৈঠক ডেকেছে ইইউ
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ
অভিবাসী সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ব্রাসেলসকে জরুরী ভিত্তিতে বৈঠকের আহবান জানিয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি। লুক্সেমবার্গকে মাইগ্রেশন সমস্যা নিয়ে কনক্রিট এবং এক্যুরেট পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য এই তিন দেশ আজ একযোগে আহবান জানিয়েছে। ফলে ইউনিয়নভুক্ত ২৮ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সঙ্কট উত্তরণের পথ খুঁজতে এই জরুরি বৈঠকে বসবেন।
শনিবার প্যারিসে ব্রিটেনের হোম সেক্রেটারি থেরেসা মে, ফ্রান্সের ইন্টেরিয়র মিনিস্টার বার্নার্ড কোজেনোভ, জার্মানির থমাস ডি মেইজেরি একসাথে বৈঠক করার পর পরই এই আহবান জানানো হলো। এই তিন নেতা প্যারিসে ট্র্যান্সপোর্ট সিকিউরিটি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন।
ব্রিটেন, গ্রিস, ইটালি, মেসিডোনিয়া সকলেই স্ট্রাগলিং করছেন এই অভিবাসী সমস্যা নিয়ে। ব্রিটেনে গত ১২ মাসে মাইগ্রেশন রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে, ৩৩০,০০০ উপনীত হয়েছে। ইউরোপীউ ইউনিয়ন বর্ডারে গত জুলাইতে এককভাবে ১০০,০০০ আর আজ ৩৪০,০০০ উপনীত হয়েছে। মেসিডোনিয়া, গ্রিস, ইটালি সব ক্ষেত্রে বর্ডারে একই অবস্থা। প্রতিদিনই অভিবাসি ভীড় জমাচ্ছে। তারা যেন তেন উপায়ে ইউরোপে ঢুকতে চাচ্ছে।
ইটালিয়ান প্রাইম মিনিস্টার ম্যাটিও র্যানজি বলেছেন, “এ সমস্যা সমাধানে অনেক মাস লাগবে এবং আমার মতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সিঙ্গল এসাইলাম পলিসি থাকা উচিৎ, দেশ সমূহের মধ্যে অধিক এসাইলাম পলিসি থাকা ঠিক নয়”।
কিন্তু ফ্রান্স, ব্রিটেন এবং জার্মানী যে বিবৃতি ইস্যু করা হয়েছে, তাতে তারা বলছেন, জরুরী ভিত্তিতে ইটালি এবং গ্রিসে রিসেপশন সেন্টার স্থাপন করে নতুন যারা আসছেন তাদের রেজিস্ট্রার করা, এবং সেই সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এর অরিজিন যাচাই করা, থিওরীট্যাক্যালি এসাইলাম এপ্লিকেশন এলাও করা যাতে ফার্স্ট ট্র্যাক সিস্টেমের মাধ্যমে সম্পন্ন করা স্পেসিফিক দেশসমূহের ক্ষেত্রে।
জার্মানি এ বছর ৮০,০০০ অভিবাসি গ্রহণ করবে এবং এধরনের লিষ্ট করার পক্ষপাতি, যাতে যুদ্ধ এবং দুর্গত দেশের জনগনের অভিবাসীদের জন্য উম্মুক্ত করা হয় চলাচল।
তবে থেরেসা মে সানডে টাইমসে লিখেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভিতরে জনগনের বা অভিবাসীদের ফ্রি মুভম্যান্ট মানেই হলো কাজের জন্য অবাধ যাতায়াত কিন্তু বেনিফিটের জন্য অবাধ যাতায়াত নয়।
এদিকে বিবিসির এখ খবরে জানানো হয়েছে, অস্ট্রিয়ার হাসপাতালে সিরিয়ান অভিবাসী ও শিশুকে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিলো, কিন্তু হাসপাতাল থেকে শিশু সহ অভিবাসী লাপাত্তার খবর ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে।
আফ্রিকার দেশ লিবিয়া হয়ে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের দেশ ইটালিতে পৌঁছানোর চেষ্টায় নৌকা ডুবে গত সপ্তাহে শতাধিক অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। অস্ট্রিয়ায় একটি পরিত্যক্ত লরিতে পাওয়া গেছে ৭১ জনের লাশ, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
অস্ট্রিয়াতেই আরেকটি ভ্যান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২৬ অভিবাসীকে। গত এক মাসে রেকর্ড এক লাখ সাত হাজার ৫০০ অভিবাসী বিভিন্ন দেশঘুরে ইউরোপের সীমান্তে পৌঁছেছে। আর এ বছর তিন লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পার হয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন বলে জাতিসংঘের তথ্য। জাতিসংঘের বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসন সঙ্কট বেড়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ সিরিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি।
অবশ্য কেবল সিরিয়া নয়, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকেও অভিবাসীদের মিছিল ছুটছে গ্রিস, ইটালি ও হাঙ্গেরি সীমান্তের পথে। গত সপ্তাহে লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২৪ জন বাংলাদেশি রয়েছেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিবিসির খবরে বলা হয়, ইটালি ও গ্রিসে পৌঁছানোমাত্র অভিবাসীদের তালিকাভুক্ত করে আঙুলের ছাপ নেওয়ার ব্যবস্থা করার ওপর জোর দিয়েছে ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্স। এছাড়া ‘নিরাপদ দেশ’ এর একটি তালিকা করার ওপর তারা জোর দিচ্ছে, যাতে এর বাইরে কোনো দেশ থেকে কেউ এলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে ফেরত পাঠানো যায়। ( সৌজন্যে – লন্ডনবিডিনিউজ২৪ )