যারা থাকছেন থেরেসা মে’র মন্ত্রিসভায়
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃএতোক্ষণে সবার কাছেই স্পষ্ট যে, স্থিতিশীল কোনও সরকার গঠনে সমর্থ হচ্ছেন না কনজারভেটিভ নেত্রী থেরেসা মে। তা সত্ত্বেও নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে আলোচনা চলছে। ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির ‘কনফিডেন্স অ্যান্ড সাপ্লাই’ পদ্ধতি সমর্থনের ওপর ভর করে নতুন সরকার গঠন করছে মে’র দল।
বৃহস্পতিবারের ওই নির্বাচনে তার ফ্রন্টবেঞ্চের আটজন মন্ত্রী পরাজিত হয়েছেন। অনলাইন সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ খবর দিয়েছে, এসব পদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। তবে মে সরকারে খুবই পরিচিত ৫টি মুখ আছেন।বলা হচ্ছে, তারা নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন। নতুন মন্ত্রিসভায় ওই মন্ত্রীরা থেকে যেতে পারেন বলে খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ।
মে’র আসন্ন সরকার কতটা স্থায়ী হবে বা কতটা শক্তিশালী হবে তা নিয়ে রয়েছে মারাত্মক সংশয়। বৃহস্পতিবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার দল কনজারভেটিভ বেশি আসন পেলেও হারিয়েছে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
ডাউনিং স্ট্রিট সূত্রে স্কাই নিউজ জানিয়েছে, ওই ৫ মন্ত্রী হলেন চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার বা রাজকোষ বিষয়ক মন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্যার মাইকেল ফ্যালন, ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস।
অবশ্য ফিলিপ হ্যামন্ডকে নিয়ে কনজারভেটিভ দলে উদ্বেগ আছে। তিনি বৃটেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একীভূত রাখার পক্ষে। আন্দাজ করা হচ্ছে, তিনি সরকারের শীর্ষ স্থানীয় পদে থেকে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শিথিল করার পক্ষে অবস্থান নিতে পারেন। মার্চে সমাপ্ত তার প্রথম বাজেটের পর তার বিশ্বাসযোগ্যতা বা গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই ক্ষয়ে গেছে। ওই বাজেটে তিনি আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিতদের ট্যাক্স কমাতে বাধ্য হন। এ ছাড়া তার বাজেট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী টিমের সঙ্গে তার উত্তেজনা দেখা দেয়।
প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার আগে বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মে। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এ পদে আসেন অ্যাম্বার রাড। বৃটেনে সম্প্রতি পর পর যে তিনটি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে এ সময়ে এ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী এবার পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে যখন টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, তখনই এগিয়ে এসেছিলেন অ্যাম্বার রাড। বলেছিলেন, তিনিই ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের সবচেয়ে আস্থাভাজন মন্ত্রীদের অন্যতম। নিজেকে কনজারভেটিভ দলের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। তাকেই থেরেসার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচনা করা হয়।
অন্যদিকে বৃটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে আছেন বরিস জনসন। তাকে সবাই বোজো নামেও ডাকেন। তাকেও দেখা হয় প্রধানমন্ত্রী মের উত্তরসূরি হিসেবে। বাইরে থেকে কাউকে এ পদে আনার চেয়ে থেরেসা তাকেই মন্ত্রিপরিষদে বেছে নেবেল নিতে পারেন, এমন সম্ভাবনা জানিয়েছে স্কাই নিউজ। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা গোপন রাখেননি লন্ডনের সাবেক মেয়র বরিস জনসন। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনা প্রকাশ করেছেন তিনি। ব্রেক্সিট গণভোটে তার গায়েও দাগ পড়েছে গত বছর। ব্রেক্সিটপন্থি মাইকেল গভ এই দাগ এঁকে দিয়েছেন তার গায়ে। যেহেতু এবার প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছেন তাই রাজনৈতিক ক্যারিশমা খুঁজতে পারেন তিনিও। পর্দার আড়ালে বা প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারেন বলে ধারণা করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্যার মাইকেল ফ্যালন কনজারভেটিভ দলের সাবেক উপ চেয়ারম্যান। সরকারে গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদে কাজ করেছেন তিনি। অন্যজন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। একসময় তিনি কনজারভেটিভ দলের নেতৃত্বের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। তিনি ব্রেক্সিট বিষয়ক প্রচারণার সামনে ছিলেন। এখন প্রধানমন্ত্রী মে’র অধীনে ইউরোপ থেকে বৃটেনকে বের করে আনার দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ১৯ বছরের অনুপস্থিতির পর কনজারভেটিভদের ফ্রন্টবেঞ্চে আনা হয়েছে তাকে।