যা কখনো বলা হয়নি
আলিম উদ্দিন আহমেদঃ
১৯৫২সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু ৬২,র শিক্ষা আন্দোলন ৬৬,র ছয় দফা ৬৯ এর গণ অভু্যত্থান ৭০ এর নির্বাচন ৭১এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ৯০এর সৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের নেতৃত্ব দানকারী সংগঠনের নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ । এই ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সাথে যার সখ্যতা গড়ে ওঠে সেই স্কুল জীবন থেকেই ।তিনি হলেন আমাদের অতি সু পরিচিত, সুস্থ্য সুন্দর পরিছন্ন রাজনীতির অহংকার মুজিব রণাঙ্গনের সিপাহ শালার আনিসুজ্জামান আজাদ ।তিনি একাধারে ধারন নতুন বাজার হাই স্কুল ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ছাতক বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন । সিলেট ল কলেজে ছাত্র সংসদের সাবেক জি এস এবং শহীদ নুর হোসেন ব্লক আম্বরখানা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন । ১৯৯১সালে বি এন পি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর মেধাবী ছাত্রলীগ নেতাদের চিরতরে নির্মূল ও একটি জাতিকে নেতৃত্ব শূন্য করার লক্ষে্ সন্ত্রাস দমন নামে একটি কালো অধ্যাদেশ বিল পাশ করে । এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৯২সালে গ্রেফতার হন আপোষহীন এই ছাত্রনেতা।অপরাজনীতির ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কত সবুজ সতেজ তরুণ অকালে রাজনীতির মাঠ থেকে ঝরে পড়ে ।জনাব আজাদ ১৯৯৫ সালে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্টার লক্ষে অন্দোলনে যৌথবাহিনীর অভিযানে পুনরায় গ্রেপ্তার হন ।
কিন্তু আজীবন সংগ্রামী এই ছাত্রনেতা শত কষ্ট বাধা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে নিজের আত্ব বিশ্বাস অদম্য ইচ্ছা শক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্হা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শকে পরম মমতায় বুকে ধারণ করে হাটিহাটি পাপা করে ছাত্ররাজনীতি থেকে আজ যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক পদে অধিষ্ঠীত ।তিনি তাঁর দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়ে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠা সততা ও দক্ষতার সাথে পালন করে যাচ্ছেন । ৯০দশকে বাংলার ছাত্ররাজনীতিতে আরেকটি নতুন অধ্যায়ের জন্ম হয় । সমস্হ বাংলার সবুজ শ্যামল প্রান্তর যখন স্বৈরশাসক রোগে আক্রান্ত ঠিক তেমনি এক দূর্যোগময় মূহুর্তে ৭১এর চেতনায় আবারও গর্জে ওঠে বাংলার গণতন্ত্রকামী ছাত্রসমাজ যার অগ্রণী ভূমিকায় ছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ।গণতন্ত্র মুক্তিপাক স্বৈরাচার নিপাত যাক । গণতন্ত্রের স্বপ্নে বিভোর প্রতিটি বঙ্গালীর কাঙ্ক্ষিত সেই ঐতিহাসিক অগ্নিঝরা স্লোগানের উত্তাপে যেন সমগ্র বাংলাদেশ এক মিছিলের বন্যায় পরিনত হয় ।তারই ধারাবাহিকতায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরাও সৈরশাসকের বুলেট তোয়াক্কা না করে নিজের জীবন বাজী রেখে রাজপথে নেমে এসেছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্টার লড়াইয়ে ।নব্বই দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতি এতটা সুখকর ছিলনা । সেই কঠিন দূঃসময়ে ছাতকের একজন কৃতিসন্তান হয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আনিসুজ্জামান আজাদ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেন ।শুধু তাই নয় সিলেটের প্রায় এক কোটি মানুষের প্রানের দাবী সিলেট বিভাগ বাস্তবায়ন আন্দোলন সহ সিলেটের প্রত্যেকটি প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছিল তাঁর সরব উপস্হিতি । আনিসুজ্জামান আজাদ আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার ।দল এখন ক্ষমতায় হাইব্রিড আর অতি উৎসাহীদের ভীড়ে ত্যাগী নেতা কর্মীরা প্রায় কোনঠাসা ।কিন্ত অত্যন্ত দূঃখের সহিত বলতে হয় দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা মোস্তাকরুপী দালালরা নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি হাসিলের লক্ষে্য দলের আদর্শ পরিপন্থী অযোগ্য টাউট প্রকৃতির লোকদের দলীয় বিভিন্ন পদ পদবিতে অলংকৃত করছেন ।আর এই সুযোগে তারা রাতারাতি হাজার কোটি টাকা কামাই করে নামী দামী বাড়ী গাড়ীর মালিক হয়ে যাচ্ছে ।এই নির্লজ্জ পরিস্থিতির কারনে সুস্থ্যধারার রাজনীতি অনেকটা বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে ।এ ব্যাপারে দলীয় সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আশু কোন পদক্ষেপ না নিলে সৎ ত্যাগী আদর্শবান রনীতিবিদদের চোখে যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত সুখী
সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতষ্টার সে স্বপ্ন অচিরেই অবক্ষয়ের অতলান্তে নিমজ্জিত হবে বলে প্রকৃত মুজিব সৈনিকদের ধারনা ।আমাদেরকে মনে রাখতে হবে মোস্তাকরা চিরদিনই মোস্তাক । মোস্তাকরা কখনও বদলায়না ।তারা একটু সুযোগ পেলেই যেকোনো অঘটন ঘটাতে পারে । এটা ইতিহাস স্বীকৃত । কিন্তু আমরা হতাশ নই আজ দৃঢ় প্রত্যয় কন্ঠে বলবো এবং আমরা গভীর বিশ্বাস করি ত্যাগী নির্যাতিত আজাদরাই কেবল গণতন্ত্র রক্ষা ও একটি সুন্দর জাতি গঠনে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে ।এবং জাতির যে কোনো দূর্বিসহ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে তারাই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে ।রাজনীতির দীর্ঘ পঠ পরিক্রমায় তারা ষড়যন্ত্রের সকল হিংস্র জাল ছিন্ন করে বিভিন্ন অগ্নিপরিক্ষায় বীর দর্পে এগিয়ে যাচ্ছে এবংযাবেই । রাজপথের চিরচেনা আজীবন মুজিব চেতনায় বেড়ে ওঠা সৈনিক সাবেক নন্দিত ছাত্রনেতা আনিসুজ্জামান আজাদকে আগামী দিনে আওয়ামীলীগের গুরত্বপূর্ণ দায়িত্বে দেখতে চাই ।আমরা তৃণমূল সাবেক ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এই প্রত্যাশা করি ।
লেখকঃ আলিম উদ্দিন আহমেদ
সাবেক ছাত্রনেতা