যুক্তরাজ্যে কোভিড -১৯: ফাইফার / বায়োএনটেক ভ্যাকসিন অনুমোদিত, পরের সপ্তাহে পাওয়া যাবে
বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে ফাইজার/বায়োএনটেকের করোনাভাইরাস টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এমএইচআরএ বলছে,করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৯৫ শতাংশ সক্ষম এই টিকাটি এখন ব্যবহারের জন্য নিরাপদ।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষজনের ওপর টিকার প্রয়োগ শুরু হবে।
এর মধ্যেই চার কোটি টিকার জন্য চাহিদা দিয়েছে যুক্তরাজ্য, যা দিয়ে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া যাবে। জনপ্রতি দুইটি করে ডোজ দেয়া হবে।
খুব তাড়াতাড়ি এক কোটি টিকার ডোজ পাওয়া যাবে।
টিকা যেসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দশকের বেশি সময় লেগে যায়, সেখানে মাত্র ১০ মাসে এই টিকার আবিষ্কারের প্রক্রিয়া শেষ করা হলো।
করোনাভাইরাস ঠেকাতে ৯০% সফল যে টিকা, বলা হচ্ছে ‘মাইলফলক’ ঘটনা ।
প্রথম ৮০০,০০০ ডোজ যুক্তরাজ্যে আগামী সপ্তাহ থেকে পাওয়া যাবে, স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক জানিয়েছেন।
জনগণকে এনএইচএসের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অপেক্ষা করা উচিত, তিনি যোগ করেন।
কেয়ার হোমস এবং কেয়ার হোম স্টাফের প্রবীণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে স্থান দেওয়া হয়েছে, তারপরে ৮০-এরও বেশি বয়সী এবং স্বাস্থ্য ও যত্ন কর্মীরা রয়েছেন।
তবে হাসপাতালগুলি ইতিমধ্যে -৭০ সি-তে ভ্যাকসিন সংরক্ষণের সুবিধাগুলি রয়েছে, তাই যত্নের বাড়ির কর্মী, এনএইচএস কর্মচারী এবং রোগীদের জন্য – সেখানে প্রথম টিকাটি সম্ভবত সেখানে গ্রহণ করা সম্ভব হয়,
তাই ভ্যাকসিনের কোনওটিই অপচয় হয় না।
তবে সীমিত মজুদ থাকার কারণে এবং -৭০ সি-তে সংরক্ষণের প্রয়োজন হওয়ায় খুব সম্ভবত প্রথম ভ্যাকসিনগুলি হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে যাতে কোনওটিই অপচয় না হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকার প্রয়োগ শুরু হলেও মানুষজনকে এখনো সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে এবং করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে স্বাস্থ্য সতর্কতার নিয়মকানুন কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে।
এর মানে হলো, এখনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সেই সঙ্গে উপসর্গ দেখা গিলেই পরীক্ষা করাতে হবে এবং তাদের বিচ্ছিন্ন করে রাখতে হবে।
এখনও পর্যন্ত ছটি দেশে ৪৩,৫০০ জনের শরীরে ফাইজার ও বায়োএনটেক টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং এতে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু দেখা যায়নি।
সারা বিশ্বে বেশ কিছু টিকা তৈরির কাজ চলছে। তার মধ্যে কয়েকটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
তার মধ্যে এই প্রথম এই টিকাটির এরকম সাফল্যের কথা জানা গেল।
এই টিকাটির ক্ষেত্রে একেবারে ভিন্ন ধরনের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে প্রশিক্ষিত করে তোলার জন্য ভাইরাসটির জেনেটিক কোড শরীরে ইনজেক্ট করা হয়।
আগের পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে টিকা দেওয়ার ফলে শরীরে এন্টিবডি এবং রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার আরও একটি অংশ যা টি সেল নামে পরিচিত সেটিও তৈরি হয়।
তিন সপ্তাহ ব্যবধানে এই টিকার দুটো ডোজ দিতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্কে এই টিকার পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
পরীক্ষায় দেখা গেছে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার সাত দিন পর ভাইরাসটি প্রতিরোধে মানবদেহে ৯০ শতাংশ সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।