রানিকে গুপ্তহত্যার চেষ্টা হয়েছিল
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃনিউজিল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল। ১৯৮১ সালে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডুনেডিনে বিজ্ঞান মেলা পরিদর্শনকালে ব্রিটেনের রানিকে গুলি করে ক্রিস্টোফার লুইস নামের এক কিশোর। তবে অল্পের জন্য তিনি বেঁচে যান। নিউজিল্যান্ডের গোয়েন্দা সংস্থার অতি গোপন নথিতে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
এ ঘটনায় নিউজিল্যান্ড পুলিশের তদন্ত নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো রানিকে হত্যাচেষ্টার কথা স্বীকার করল দেশটি। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু এরপরও নিউজিল্যান্ডের সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। রাষ্ট্রপ্রধানও তিনি।
নিউজিল্যান্ডের সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের (এসআইএস) প্রকাশিত নথিতে দেখা গেছে, কমনওয়েলথভুক্ত দেশ নিউজিল্যান্ডে আট দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় ১৪ অক্টোবর বিজ্ঞান মেলায় যোগ দিতে গাড়ি থেকে নামার পর রানি এলিজাবেথকে গুলি করে ১৭ বছর বয়সী কিশোর ক্রিস্টোফার লুইস।
১৯৯৭ সালে এসআইএসের প্রণীত অতি গোপন নিরাপত্তাসংক্রান্ত এই নথিটি গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ করা হয়, যার কপি রয়টার্স পেয়েছে গতকাল। ফেয়ারফক্স মিডিয়ার অনুরোধে নথিটি প্রকাশ করা হয়।
নথিতে বলা হয়, ‘রানিকে হত্যার উদ্দেশ্যে লুইস গুলি করে। কিন্তু গুলি ছোড়ার স্থানটি উপযুক্ত অথবা নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে গুলি করতে সক্ষম এমন উপযুক্ত বন্দুক সেটা ছিল না।’
নথিতে ‘মারাত্মক বিশৃঙ্খল’ যুবক হিসেবে বর্ণনা করা লুইসের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা বা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়নি। রাজকীয় সফরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে-এমন কথা চিন্তা করে ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দেখিয়েছিল পুলিশ। তবে লুইসের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে অবস্থান ও আগ্নেয়াস্ত্র বহনের দায়ে মামলা করা হয়েছিল।
গত মঙ্গলবার ১৯৮১ সালের নভেম্বরে এসআইএস প্রণীত আরেকটি নথি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে, মেলায় আসা জনতা ও সাংবাদিকেরা গুলির শব্দ শুনেছিলেন। কিন্তু পুলিশের তদন্তে বলা হয়েছিল, কোনো কিছু পড়া কিংবা গাড়ির বিস্ফোরণের শব্দ এটি।
গোয়েন্দা নথিতে আরও বলা হয়, ১৯৮৬ সালে রানি এলিজাবেথ ফের যখন নিউজিল্যান্ড সফরে যান, তখন নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় লুইসকে কঠোর নজরদারিতে রেখেছিল পুলিশ।
নিউজিল্যান্ড পুলিশের মুখপাত্র গতকাল এক বিবৃতিতে জানান, গোয়েন্দা সংস্থার নথি পুলিশের তদন্তে পাওয়া তথ্যের উন্নত সংস্করণ। পুলিশ কমিশনার মামলাটি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ ঘটনার এক দশকের বেশি সময় পর অকল্যান্ডে একটি মেয়েশিশুকে অপহরণ ও তার মাকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে লুইসের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মামলার বিচার চলাকালে ১৯৯৭ সালে কারাগারে আত্মহত্যা করে লুইস।