রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: ‘নেটো নিয়ে আগ্রহ অনেক আগে থেকেই কমছে’ – প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি

Spread the love

প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের সামনে তিনটি শর্ত রেখেছেন এবং বলেছেন, এগুলো মেনে নিলে তিনি সাথে সাথে সামরিক অভিযান বন্ধ করে দেবেন।

দাবিগুলো হলো – ১. ইউক্রেনকে সংবিধান সংশোধন করে নিশ্চিত করতে হবে যে তারা কখনই নেটো সামরিক জোটে যোগ দেবেনা। ২. ক্রাইমিয়াকে রাশিয়ার অংশ বলে মেনে নিতে হবে। ৩. পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া যে দুই অঞ্চলকে – লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক এবং দনিয়েস্ক পিপলস রিপাবলিক – রাশিয়া স্বাধীন দুটি রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে সেগুলোর সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে হবে ইউক্রেনকে।

এই সব শর্ত কি তিনি মানবেন? এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে তিনি কী বার্তা দিতে চান? – মার্কিন টিভি চ্যানেল এবিসি’র এই প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, তিনি চাপের মুখে নতি স্বীকার করবেন না কিন্তু তিনি রাশিয়ার এসব দাবি নিয়ে মি. পুতিনের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত।

নেটোর সদস্যপদ সম্পর্কে তিনি বলেন, “অনেক আগেই আমি এ নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছি। কারণ আমরা বুঝতে পারছি নেটো ইউক্রেনকে নিতে চায় না। নেটো কোনো বিতর্কে জড়াতে চায় না, রাশিয়ার সাথে তারা কোনো সংঘর্ষ চায় না।”

মি. জেলেনস্কি বলেন, “ইউক্রেন এমন দেশ নয় যারা হাঁটু গেড়ে ভিক্ষা চাইবে। আমিও তেমন একজন প্রেসিডেন্ট হতেও চাইনা,” তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রধান চাওয়া তাদের ‘নিরাপত্তার গ্যারান্টি।’

ক্রাইমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্ব এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া জাতিগত রুশ অধ্যুষিত দুই অঞ্চলকে স্বাধীন দেশ হিসাবে মেনে নেওয়ার প্রশ্নে মি. জেলেনস্কি বলেন, এসব অঞ্চলের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি সমাধানে পৌঁছুনোর জন্য তিনি রাশিয়ার সাথে আলোচনায় প্রস্তুত।

“এই দুই তথাকথিত রিপাবলিককে রাশিয়া ছাড়া কেউই স্বীকৃতি দেয়নি, কিন্তু তারপরও আমরা কথা বলে একটা আপোষ মীমাংসায় আসতে পারি।”

“যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো এসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের কে কী চায়। তাদের মধ্যে কারা ইউক্রেনের নাগরিক হয়ে থাকতে চায়, এবং ইউক্রেনের বাসিন্দাদের মধ্যে কারা এবং কতজন তাদেরকে গ্রহণ করতে চায় … এসব অঞ্চলের অস্তিত্ব মেনে নেওয়া বা না নেওয়ার চাইতে এসব প্রশ্ন অনেক জটিল।”

মি. জেলেনস্কি বলেন, কোনো আল্টিমেটাম ইউক্রেন মানবে না। “প্রেসিডেন্ট পুতিনের এখন যা করা উচিৎ তা হলো কথা বলা। তথ্যের বুদবুদের মধ্যে না থেকে তার উচিৎ কথা বলা। কারণ ঐ বুদবুদে কোনো অক্সিজেন নেই।”

তিনি বলেন, তার বিশ্বাস প্রেসিডেন্ট পুতিন এখন সত্যিই একটি বুদবুদের মধ্যে রয়েছেন এবং সেখানে তার কাছে বাস্তব তথ্য দেওয়া হচ্ছেনা।

রাশিয়ার দেওয়া শর্তগুলো সম্পর্কে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের এসব উত্তর আপোষের ইঙ্গিত কিনা তা নিয়ে এখন বিশ্লেষক মহলে নানা ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) তুরস্কের মুখোমুখি বৈঠক করবেন বলে কথা রয়েছে।

দুই দেশ সত্যিই সংঘাত বন্ধে আপোষ রফা করতে চায় কিনা ঐ বৈঠক থেকে তার স্পষ্ট কিছু ইঙ্গিত হয়তো পাওয়া যেতে পারে।


Spread the love

Leave a Reply