রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: রাশিয়ার যুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য এখন পূর্ব ইউক্রেন দখল – রুশ সেনাবাহিনী
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ রাশিয়ার সেনাবাহিনীর অপারেশন বিভাগের প্রধান সের্গেই রুদস্কইকে বলেছেন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ডনবাস অঞ্চলের “পূর্ণ স্বাধীনতা” নিশ্চিত করাই হবে এখন থেকে তার সৈন্যদের প্রধান লক্ষ্য।
ইউক্রেনে সেনা অভিযানের এক মাসের মাথায় এসে এই বক্তব্য দিলেন রুশ সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষ একজন কর্মকর্তা।
২০১৪ সালে রুশ সমর্থিত বিদ্রোহীরা ডনবাসের বেশ কিছু এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়, যার পর থেকে ঐ অঞ্চলে বিদ্রোহী এবং ইউক্রেনিয়ান সৈন্যদের মধ্যে লড়াইতে কম-বেশি ১৫ হাজার মানুষ মারা গেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার বলছে তাদের “বিশেষ সেনা অভিযানের” দুটো ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্য ছিল – একটি পুরো ইউক্রেন এবং অন্যটি শুধুমাত্র ডনবাস।
রাশিয়ার রুশ সেনাবাহিনীর অপারেশনস বিভাগের প্রধানকে উদ্ধৃত করে রুশ সরকারি বার্তা সংস্থায় প্রচারিত এই খবর থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় রাশিয়া হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে তাদের লক্ষ্য হাসিলের মাত্রা কমিয়েছে। কারণ হয়তো দেশের উত্তরে এবং রাজধানী কিয়েভে রুশ সৈন্যরা শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়ছে।
সের্গেই রুদস্কই বলেছেন লুহানস্ক ওব্লাস্ট অঞ্চলের ৯৩ শতাংশ এবং দনিয়েস্ক ওব্লাস্ট অঞ্চলের ৫৪ শতাংশ এখন রুশ সৈন্যদের দখলে।
তিনি বলেন, গত এক মাসের যুদ্ধে রাশিয়া ইউক্রেনের বিমান বাহিনী এবং নৌ বাহিনীর সিংহভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে। তার মন্তব্য ছিল – যুদ্ধের ‘প্রথম ধাপটি সাফল্যের সাথে শেষ হয়েছে।’
এখন থেকে ইউক্রেনের পূর্বাংশের নিয়ন্ত্রণ দখলই রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য হবে – এমন কথা বললেও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে ইউক্রেনের আকাশে ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করলেই মস্কো ব্যবস্থা নেবে। অবরুদ্ধ অন্যান্য শহরে হামলা বন্ধের কোনো কথাও বলা হয়নি।
রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে বলেছে প্রেসিডেন্ট পুতিনের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সেনা অভিযান চলবে। তকে কী সেই লক্ষ্য তা পরিষ্কার করা হয়নি।
ব্রিটেনের গোয়েন্দা বিষয়ক পরামর্শক সংস্থা সিবিলাইনের প্রধান নির্বাহী এবং সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা জাস্টিন ক্রাম্প বিবিসিকে বলেছেন রাশিয়া গত এক মাসে তাদের যুদ্ধে তেমন সাফল্য পায়নি এবং তার প্রধান কারণ তারা একসাথে অনেকগুলো ফ্রন্টে লড়াই করছে।
তবে তিনি বলেন, রাশিয়া পূর্বের লুহানস্ক নিয়ন্ত্রণে নেয়ার লক্ষ্য অর্জনে “অনেকটাই সফল হয়েছে” এবং দনিয়েস্ক অঞ্চলে তীব্র লড়াই চলছে।
“সেখান (দনিয়েস্ক) থেকে খুব কম খবরই আমরা পাচ্ছি। সেখানে তীব্র লড়াই হচ্ছে। আগামী কয়েক সপ্তাহে আমরা সেখানে তীব্র লড়াই দেখবো।”
মি ক্রাম্প বলেন, রুশ সৈন্যরা এখন ইউক্রেনের পূর্বে তাদের অবস্থান শক্ত করছে, এবং একইসাথে ইউক্রেনের শহরগুলোর ওপর অব্যাহত-ভাবে ভারি গোলা বর্ষণ করে মানুষজনকে ‘উদ্বেগের ভেতর রেখেছে” তাদেরকে “জিম্মি করে ফেলেছে।”