রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জোড়ালো নয়-মেয়র জন বিগস
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃটাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর দেশটির সামরিক বাহিনীর দমন পীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিভিন্ন মিডিয়া এবং জাতিসংঘের বরাত দিয়ে সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার-নির্যাতনের যে চিত্র আসছে তা উদ্বেগের এবং মারাত“কভাবে মানবাধিকার লংঘনকারী।
কোন সভ্য সমাজে এমন নির্যাতনের ঘটনা অকল্পনীয়। বিশ্ব সমাজের অংশীদার হতে হলে মিয়ানমারকে অবশ্যই মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের চার্টার মেনে চলতে হবে। মানবাধিকার কোন সমঝোতার বিষয় নয়। জাতী, ধর্ম, স্থান নির্বিশেষে এর সংজ্ঞাও এক। একটি জনগোষ্ঠিকে টার্গেট করে নির্বিচারে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষন, পরিকল্পিত অনাহার কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। অনতিবিলম্বে এই নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ার জন্য দেশটির সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান তিনি।
জন বিগস ষ্ক্রসাইলেন্স ওভার রোহিঙ্গা জেনোসাইডম্ব শীর্ষক সেমিনারে একথা বলেন। ৩০ নভে“র, বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডন মুসলিম সেন্টারে কয়েকটি চ্যারেটি এবং মানবাধিকার সংগঠনের উদ্যোগে এই সেমিনারটি অনুষ্টিত হয়। মেয়র বলেন, রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত না হওয়ার বিষয়টি দু:খজনক। সভ্য মানুষ হিসাবে আমরা এর দায় এড়াতে পারিনা। এই নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে আমাদের আরো বেশী কথা বলতে হবে, আরো জোরে আওয়াজ তুলতে হবে। এখনো অনেকেই জানেন না সেখানে কী ঘটছে। তাই সবাইকে বিষয়টি জানাতে হবে।
তিনি বলেন, মেয়র হিসাবে এব্যাপারে আমার ক্ষমতা সীমিত হলেও ইস্ট এন্ডের সকলকে নিয়ে আমরা বিশ্ববাসীর কাছে এই মানবিক বিপর্যয়ের ব্যাপারে শক্তিশালী বার্তা পাঠাতে পারবো। একে অনতিবিলম্বে রোধ করতে না পারলে মানুষ হিসাবে আমাদের নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
আরেক আমন্ত্রিত অতিথি রুশনারা আলী এমপি সেমিনারে উপস্থিত থাকতে না পারলেও তিনি লিখিত বিবৃতি প্রেরন করেন। তার বিবৃতিটি পড়ে শুনান মেয়র জন বিগস। ২০১৩ সালে শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টার থাকা অবস্থায় রাখাইন প্রদেশের রিফিউজি ক্যাম্প পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বর্ননা করে বলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন বন্ধের জন্য সকলে মিলে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।
এব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার এবং আর্ন্তজাতিক কমিউনিটির আরো জোরালো ভূমিকার উপর গুরুত্ব দেন তিনি। সাম্প্রতিক নির্যাতনের প্রেক্ষাপটে রুশনারা ফরেন সেক্রেটারী বরিস জনসন এমপি, মিয়ানমারে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত এন্ড্রু প্যাট্রিক এবং সফরকারী মিয়ানমারের শিক্ষামন্ত্রী প্রফেসার মাইউ থিন গাই ডুরিং এর কাছে তার উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশেষ চিঠি লেখার কথাও জানান।
রুশনারা বলেন, জাতিসংঘ, এম্যানেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর বরাত দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নতুন করে নির্যাতনের যে চিত্র জানা যাচ্চেছ তা অবশ্যই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। এটা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন, লর্ড নাজির আহমদ, বার্মা ক্যাম্পেইনের ডাইরেক্টর মার্ক ফার্মানার, ইমাম, ব্রডকাস্টার এবং টিভি প্রেজেন্টার আজমল মাশরুর প্রমুখ।
জনাকীর্ন এই অনুষ্টানে রোহিঙ্গা রিফিউজিদের সহায়তার জন্য অর্থও সংগ্রহ করা হয়। মুসলিম এসোসিয়েশন অব ব্রিটেন, বামিঁজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইন ইউকে, রোহিঙ্গা মাইনোরিটি ক্রাইসিস গ্রুপ, মুসলিম ভয়েস এবং ইলমফিড এর উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিলো।