লন্ডনে ‘আমরা সিলেটবাসী’র প্রস্তুতি সভায় বক্তারাঃ আগাচৌ’র বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান

Spread the love

agachowবাংলা সংলাপ ডেস্কঃ সম্প্রতি লন্ডনে একটি টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্টানে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদসহ সর্বস্থরের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। গত ১৯ ডিসেম্বর ‘আমরা সিলেটবাসী’র ব্যানারে ইস্ট লন্ডনস্থ মাইল এন্ড এর একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা আগাচৌ’র অতীত ও বর্তমান সময়ের কর্মকান্ড বিশ্লেষণ করে তাকে একজন ভন্ড ও প্রতারক হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রবাসী কমিউনিটিকে হেয় করে সিলেট বিদ্বেষী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ।

তারা আব্দুল গাফফারের বিরুদ্ধে প্রবাসীদের চলমান আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষে এবং আগাচৌ’র বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।

সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্টানে বিলেতের বাংলাদেশী কমিউনিটি ও সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীদের বিরুদ্ধে আগাচৌ’র কান্ডজ্ঞানহীন, কুরুচিপুর্ণ মন্তব্য মিথ্যাচার ও উদ্দেশ্যপ্রনোদিত । বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে লন্ডনের লাইভ অনুষ্টানে ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বিলেতের বাংলাদেশী কমিউনিটি ও সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীদের বীরত্বগাথা ইতিহাস ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে প্রবাসী মুক্তিযুদ্ধাদের প্রতি অসম্মান ও প্রকারান্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করেছেন তিনি । মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান সকলের জানা । বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে প্রবাসীরা আন্দোলন সংগ্রাম করে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নিজেদের রোজগারের টাকা পয়সা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। যুক্তরাজ্যে এসব প্রবাসীদের দেশের ঠিকানাও সকলের জানা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের পাশাপাশি ব্যবসা-বানিজ্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি, রাজনীতি, মিডিয়াসহ অনেক কিছুতেই বিলেতের মাটিতে প্রবাসীদের আজকের শক্ত অবস্থান সৃষ্টিতে কাদের অবদান রয়েছে তা আগাচৌ’র নজরে না আসলেও বাংলাদেশী কমিনিউটির সকলে জানেন । বিলেতের কমিউনিটির বেশিরভাগ মানুষজন বাংলাদেশের একটা জেলার বিশেষ করে সিলেট জেলার হওয়াতে তাদেরকে হেয় বা কটাক্ষ করতে উঠেপড়ে লাগার একমাত্র কারণ পরশ্রীকাতর, ছিদ্রান্বেষী ও বিদ্বেষী মনোভাব । বক্তারা বলেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রবাসীরা বিলেতে একটি কর্মক্ষম, শক্তিশালী ও মর্যাদাশীল কমিউনিটি গড়ে তুলেছেন, যেখানে আগাচৌ’র নূন্যতম অবদান মাইক্রোস্কোপ দিয়ে খোঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। বিলেতে একটি অঞ্চল বিশেষ করে সিলেট জেলার বাসিন্দা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে রয়েছে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক এবং একে অন্যের সাথে ভাতৃত্ম বন্ধনে আবদ্ধ মর্যাদাশীল কমিউনিটি। আগাচৌ তার চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্রে বিভেদ ও বিভাজন সৃষ্টি করতে চায় বিধায় তার বক্তব্য ও লেখায় রাষ্ট্র ও সমাজে শুধু দুর্গন্ধ ছড়ায়।

সভায় বক্তারা বলেন, আগাচৌ ও তার কিছু অন্ধ সমর্থক তাকে বাংলা সাহিত্য বিশারদ মনে করেন ! কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা গোষ্টিকে পরিচিত করানোর ক্ষেত্রে অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিত, লাঙ্গল টু লন্ডন কোনো রুচিশীল শব্দ কি না অথবা এসব শব্দের প্রয়োগ পজিটিভ অর্থে ব্যাবহৃত হয় কি না সেটা কি আগাচৌ জানেন না ? না জেনে থাকলে তিনি সবচেয়ে বড় অজ্ঞ আর জেনেশুনে বলে থাকলে তিনি সবচেয়ে বড় নিমকহারাম ও সিলেট বিদ্ধেষী । আর এই সিলেট বিদ্ধেষী ব্যক্তিকে শুধু সিলেট অঞ্চলের মানুষ নয় অন্য অঞ্চল বা এলাকার যে কোনো রুচিশীল মানুষেরই ঘৃনা করা উচিত এবং যার যার অবস্থান থেকে এ পরশ্রীকাতর লোকটিকে দেশে কিংবা বিদেশে সকল স্থানে প্রতিহত করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে জনমত ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন সহ রাজনৈতিক দলসমূহেরও এগিয়ে আসা উচিত । কারণ আগাচৌ ধর্ম, কমিউনিটি, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য একটি আগাছা যা কারো জন্যই ফলদায়ক হবার নয়। আগাচৌ যে টাকার বিনিময়ে কখন কার বিরুদ্ধে লিখবে বা কথা বলবে তা আন্দাজ করা মুশকিল। তিনি কারো পক্ষে টাকা খেয়ে লিখেন আবার কারো বিরুদ্ধে টাকা পাওয়ার জন্য লিখে থাকেন। তাই সমাজ, কমিউনিটি ও দেশের স্বার্থে আগাচৌকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবি।

সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ যুক্তরাজ্যে অবস্থিত গ্রেটার সিলেটসহ সকল অঞ্চলের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ জানান যে প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিবাদ সমাবেশ করে যুক্তরাজ্যের প্রতিটি শহরে জনমত সৃষ্ঠির পাশাপাশি সারা বিশ্বে আগাচৌ’র বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আগাচৌ তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যভাবে টেলিভিশনে ক্ষমা প্রর্থনা না করলে ‘আমরা সিলেটবাসী’র ব্যানারে একটি স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করে সকল সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ একটি প্লাটফর্মে এনে আগাচৌ’কে চূড়ান্তভাবে অবাঞ্চিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।

সভায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী, কমিউনিটি নেতা আবুল কালাম আজাদ, গোলাম রাব্বানী, ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান, শহীদুল ইসলাম মামুন, কামাল উদ্দিন, ড এম মুজিবুর রহমান, আব্দুল সাত্তার, হাবিবুর রহমান ময়না, সেলিম আহমেদ, গুলজার খান, তরুণ সংগঠক রহিম উদ্দিন, নাসির উদ্দিন শাহীন, সিরাজুল ইসলাম, সাব্বির আহমেদ ময়না, আফজাল হুসেন, মদরিস আলী মফজ্জুল, কদর উদ্দিন, মওলানা শামিম আহমেদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।


Spread the love

Leave a Reply