লন্ডনে বাংলাদেশি মায়ের নিষ্ঠুরতা : শিশুকে মারধর ও বমি খাওয়াতে বাধ্য করায় কারাদণ্ড
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ লন্ডনে দু বছরের শিশুকে মারধর ও তাকে নিজের বমি খাওয়াতে বাধ্য করায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মাকে ১৬ সপ্তাহের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিচারক ওই নারীর কর্মকান্ড-কে ‘ঘৃণিত’ ও ‘অসুস্থ আচরণ’ বলে আখ্যায়িত করেন।
জানা গেছে, খাবার খাওয়ানোর এক পর্যায়ে শিশুটি বমি করে দেয়। এতে তার মা তাকে জোর করে ওই বমি খেতে বাধ্য করেন। এসময় শিশুটি কাঁদতে থাকলে তেত্রিশ বছর বয়সী ওই মা তাকে মারধর করেন। আর পুরো ঘটনা শিশুটির বাবার গোপনে স্থাপিত ভিডিও ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। পরে অভিযোগ ও ভিডিওচিত্রের ভিত্তিতে আদালত এ রায় দেন।
চলতি সপ্তাহে লুটনের একটি আদালত এ রায় দেন। বিচারক রিচার্ড ফস্টাড মামলার রায়ে এ ঘটনাকে ‘ঘৃণিত’ বলে উল্লেখ করেন। ওই নারীর স্বামীর গোপন ক্যামেরায় তাদের লুটনের রান্নাঘরে নির্যাতনের ওই ঘটনাটি ধরা পড়ে। পরে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
এ ঘটনার ভিডিওচিত্রটি সামাজিক মিডিয়ায় প্রকাশের পর যুক্তরাজ্য জুড়ে এশিয়ান কমিউনিটিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালে বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ও বিরোধ চলতে থাকে। ২০১৫ সালের পর ওই দম্পতি আলাদা হয়ে যান এবং তাদের দুই শিশু বাবার সঙ্গে থেকে যায়। শিশুদের মা বাসায় এলেই শিশুরা মায়ের হাতে মারধরের শিকার হতো।
লুটনের আদালত রায়ে বলেন, নারীটি জোরপূর্বক তার দুই বছর বয়সী শিশুকে বমি খেতে বাধ্য করেন। শিশুর প্রতি নির্যাতন ও লাঞ্ছনা, মা হিসেবে অসুস্থ আচরণ, অবহেলা এবং শিশুটিকে অপ্রয়োজনীয় নীতিবিরোধী কষ্ট দেওয়ায় ওই মাকে ১৬ সপ্তাহের কারাদন্ড- দেওয়া হলো।
ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ২১ জুন। প্রসিকিউটার লোরা ব্লাকব্যান্ড জানান, শিশুটি রান্নাঘরে খেলার মুহূর্তেও মায়ের হাতে নির্যাতিত হয়। এমনকি শিশুটিকে কাঠের চামচ দিয়ে আঘাত করা হয়। মেঝেতে ফেলে আঘাতের কারণে শিশুটি কাঁদতে থাকলে মা কর্কশভাবে গালাগালি করে তাকে কাঁদতে নিষেধ করেন। বিচারক মামলার রায়ে বলেন, যা ঘটেছিল তা ক্ষণকালের উত্তেজনা নয়, বরং মায়ের দীর্ঘকালীন এক ধরনের অসুস্থ প্রবণতার জন্যই ঘটেছিল।