লেবার নেতা করবিনকে অনুমতি দিতে দ্বিধান্বিত ইহুদি জাদুঘর কর্তৃপক্ষ
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃযুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন তার দলের বিরুদ্ধে ওঠা ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক একটি সভায় বক্তব্য দিতে চান। তার পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানস্থল হিসেবে হিসেবে একটি ইহুদি জাদুঘরকে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাদুঘর কর্তৃপক্ষ তাকে ভাষণ দেওয়ার অনুমতি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে দ্বিধান্বিত। তারা এখনও এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্টকে জাদুঘরটির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা বলেছেন, বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর।’ তিনি এমন কোনও কিছুতে সম্মতি দিতে চান না যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
ইহুদি বিদ্বেষের বিষয়ে লেবার পার্টির ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাজ্য সমালোচনা হয়েছে। সমালোচকরা নিন্দার তীর নিক্ষেপ করেছেন ‘ইন্টারন্যাশনাল হলোকাস্ট রিমেমবারেন্স অ্যালায়েন্সের’ (আইএইচআরএ) সংজ্ঞা পূর্ণভাবে গ্রহণে লেবার পার্টির অনিচ্ছা দেখে। আইএইচআরএ ইহুদিবিদ্বেষের সংজ্ঞা দিয়েছে তা সমর্থন করার বিষয়ে এখনও লেবার পার্টির অবস্থান স্পষ্ট নয়। গার্ডিয়ান লেবার পার্টির অবস্থানকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছে, ‘ইহুদিবিদ্বেষী বক্তব্য বন্ধ হোক কিন্তু তা যেন মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ না করে।’
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ইহুদি সংগঠনটি ইহুদিবিদ্বেষের যে সংজ্ঞা দিয়েছে তা মেনে নিলে ইসরায়েল বিরোধিতাকেও ইহুদিবিদ্বেষ হিসেবে আখ্যা দেওয়া সম্ভব হবে। অর্থাৎ অ্যান্টি জায়োনিজমকে অ্যান্টি সেমিটিজমের সমার্থক হিসেবে দেখানো সম্ভব হবে। ব্রিটিশ লেবার পার্টি আইএইচআরএর সংজ্ঞা মেনে নেওয়ার বিষয়ে কোনও ঘোষণা না দেওয়ায় দলটির বিষয়ে ইহুদিরা অভিযোগের আঙুল তুলেছে।
ইসরায়েলের ইহুদিদের নাৎসিদের সঙ্গে তুলনা দেওয়া ব্যক্তিদের সংস্রবে থাকার অভিযোগে এ সপ্তাহেই করবিনকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। লেবার পার্টির শ্যাডো চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেলও সমালোচনার শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, ইহুদিবিরোধী সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল জিউইশ অ্যান্টি জায়োনিস্ট নেটওয়ার্ককে’ (আইজেএএন) তিনি সমর্থন দিয়েছেন।
ইহুদি জাদুঘরটির পরিচালন প্রধান অ্যাবিগেইল মরিস সংবাদমাধ্যম জিউইশ ক্রনিকলকে বলেছেন, ‘করবিনের অফিস থেকে যে প্রত্যাশার কথা জানানো হয়েছে তা নিয়ে আমরা এখনও চিন্তা করছি। পরিস্থিতি এখন খুবই নাজুক। ইহুদি জাদুঘরটি সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজ করে। তবে কখনও কখনও বিষয়টি কষ্টকর হয়ে যায় আমরা ক্ষত শুকানোর প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখতে চাই, পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য নয়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে নিবেদিত একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা গর্বিত। আমরা চাই এই প্রতিষ্ঠানে গঠনমূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হোক।’