লোকরঞ্জনবাদের উত্থানে নতুন হিটলারের জন্ম হতে পারে
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃরোমান ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বে লোকরঞ্জনবাদ বা পপুলিজমের উত্থানের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, জনসাধারণের আবেগ-অনুভূতি কিংবা ভয়কে পুঁজি করে গড়ে ওঠা সরকার বা রাজনীতি সমর্থনের মধ্যে হিটলারের মতো স্বৈরাচারীর উত্থানের ঝুঁকি থাকে। স্পেনের পত্রিকা এল পাইসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোপ এই হুঁশিয়ারি দেন।
পোপ এমন সময় এই কথা বললেন যখন পপুলিস্ট নেতা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সদ্যই শপথ নিয়েছেন। একই সঙ্গে ইউরোপের কট্টর ডানপন্থী নেতারা জার্মানিতে বৈঠক করে কড়া ভাষায় অভিবাসনবিরোধী ও জাতীয়তাবাদী কথাবার্তা বলেছেন।
বিদেশিদের কোনো দেশে প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে দেয়াল তোলা কিংবা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার নিন্দা জানান পোপ। ট্রাম্পের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে পোপ বলেন, এ বিষয়ে এখনই তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তিনি ট্রাম্পের কাজ দেখতে অপেক্ষা করবেন এবং সে অনুযায়ী তাঁকে মূল্যায়ন করতে চান।
ট্রাম্প প্রসঙ্গে পোপ বলেন, ‘আমি আগ বাড়িয়ে কথা বলতে কিংবা নির্ধারিত সময়ের আগেই মার্কিন জনগণের বিষয়ে সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্য করতে রাজি নই। আমরা দেখব ট্রাম্প কী কী পদক্ষেপ নেন, কী কী কাজ করেন। তারপর আমি আমার অভিমত দিতে পারব।’
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পপুলিজমের উত্থানের বিষয়ে মূল্যায়ন জানতে চাইলে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, এটি আতঙ্কের। তাঁর মতে, ১৯৩৩ সালে জার্মানিতে পপুলিজমের উত্থানের বিষয়টি এর সর্বনাশা দিকের একটি বড় উদাহরণ। পোপ বলেন, ‘ওই সময় জার্মানি ভেঙে পড়েছিল। তখন মানুষ একজন নেতা খুঁজছিল। অ্যাডলফ হিটলার নামের এক তরুণ তখন “আমি পারব, আমি পারব!” বলছিল। জার্মানরা সেই হিটলারকে ভোট দিল। সে কিন্তু ক্ষমতা দখল করেনি। জনগণ তাকে ভোট দিয়েছিল এবং সে তার সেই জনগণকেই ধ্বংস করে দেয়।’
জার্মানিতে ডানপন্থীদের বৈঠক
যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথের পরদিনই জার্মানিতে ইউরোপের কট্টর ডানপন্থী নেতারা বৈঠক করেছেন। সেখানে ফ্রান্সের ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতা মারিন লো পেন বলেছেন, পশ্চিমাদের ভবিষ্যৎ নীতি হবে দেশপ্রেম। তিনি বলেছেন, চলতি বছর ফ্রান্স, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসে যে নির্বাচন হবে, সেখানে জনগণ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। এই তিন দেশেই জাতীয়তাবাদীরা ক্ষমতায় আসবে। লো পেন ২০১৭ সালকে ‘ইউরোপীয়দের জাগরণ বর্ষ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
বৈঠকে নেদারল্যান্ডসের অভিবাসনবিরোধী ফ্রিডম পার্টির প্রধান ও কট্টর মুসলিমবিরোধী বলে পরিচিত নেতা গিয়ার্ট ভিল্ডার্স বলেন, ‘গতকাল, নতুন এক আমেরিকা, আজ…. নতুন এক ইউরোপ।… রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের জোয়াল কাঁধ থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে ইউরোপের মানুষ জেগে উঠছে।’