‘শীঘ্রই ইউরোপের সীমান্তে লাখ লাখ অভিবাসীর ঢল নামবে’
বাংলা সংলাপ ডেস্ক: ব্রিটেনে আরও বিস্তৃত আকারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে প্রস্তুত থাকা দরকার এবং এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে “চ্যালেঞ্জিং” হতে পারে বলে সর্তক করে দিয়েছে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগ। রবিবার যুক্তরাজ্যে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাফে বেড়ে যাওয়ার পর করোনভাইরাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রথম কোবরা মিটিংয়ের ডাক দেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে কোবরা মিটিংয়ে আলোচনার সময়ই ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের এ সর্তক বার্তা সামনে এল। এদিকে যুক্তরাজ্যে কবিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ এ পৌঁছেছে এবং এটি যুক্তরাজ্যের অর্ন্তভুক্ত চারটি দেশেই পাওয়া গেছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে শীঘ্রই লাখ লাখ শরণার্থী ইউরোপের দিকে যাত্রা শুরু করবে।
অভিবাসী ও শরণার্থীরা যেন তুরস্ক হয়ে ইউরোপের দিকে যেতে না পারে সেজন্যে ২০১৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের করা চুক্তি তুরস্ক আর বাস্তবায়ন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। তারপরই তুর্কি প্রেসিডেন্ট এই হুঁশিয়ারি দিলেন।
গ্রিস সীমান্তে এরই মধ্যে অভিবাসীদের ঢল নেমেছে। হাজারো অভিবাসীকে আটকাতে সীমান্তে গ্রিক পুলিশকে টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করতে হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে গ্রিস এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের জরুরী সাহায্য চেয়েছে।
মিস্টার এরদোয়ান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, তার দেশে যদি নতুন করে সিরিয়ান শরণার্থীদের ঢল নামে, সেটা তারা সামলাতে পারবেন না।
এরই মধ্যে প্রায় দশ লাখ সিরিয়ান ইদলিব থেকে তুরস্ক সীমান্তে পালিয়ে এসেছে। ইদলিবে তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান বিদ্রোহীদের সঙ্গে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে।
তুরস্কে সিরিয় শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩৭ লাখা। আফগানিস্তানসহ অন্যান্য দেশ থেকে আসা অনেক অভিবাসীও রয়েছে তুরস্কে। এই অভিবাসীরা ইউরোপে যেতে চায়। কিন্তু তুরস্ক এতদিন পর্যন্ত তাদের ঠেকিয়ে রেখেছে।
টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে মিস্টার এরদোয়ান বলেছে, সিরিয়ার শরণার্থীদের যেন সিরিয়ার নিরাপদ অঞ্চলে পুনর্বাসন করা যায়, সেজন্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্ককে কোনরকম সাহায্য করেনি।
গত সপ্তাহে তুরস্ক যখন এই অভিবাসী এবং শরণার্থীদের ইউরোপে ঢোকার জন্য সীমান্ত খুলে দেয় তখন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছিলেন, “হাজার হাজার মানুষ এর মধ্যে সীমান্ত পার হয়েছে, শীঘ্রই এই সংখ্যা লাখ লাখে পৌঁছাবে।”
তবে এই সংখ্যা তিনি কোথায় পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার কোন প্রমাণ দেননি। তবে গ্রিস বলেছে, তুরস্ক থেকে প্রায় হাজার খানেক অভিবাসী রোববার তাদের পূর্ব এজিয়ান সাগরের দ্বীপগুলোতে পৌঁছেছে।
এর পাশাপাশি গত ২৪ ঘন্টায় আরও প্রায় দশ হাজার মানুষকে তারা স্থল সীমান্ত অতিক্রমের সময় আটকে দিয়েছে। বাধার মুখে পড়া অভিবাসীরা পাথর ছুঁড়ে মারে। গ্রিসের সীমান্ত রক্ষীরা তখন টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
এই অভিবাসীদের মধ্যে সিরিয়ানরা ছাড়াও আফগান এবং পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা আছেন।
ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট এবং গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল মঙ্গলবার সীমান্তে যাচ্ছেন পরিস্থিতি দেখতে।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, “হয় আমরা এই মানুষগুলোকে তাদের নিজেদের দেশে মর্যাদার সঙ্গে থাকতে দেব, নতুবা সবাইকে তাদের ভার বহন করতে হবে। একতরফা আত্মত্যাগের দিন শেষ হয়ে গেছে।”
গ্রিক সরকার তুরস্কের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, “শরণার্থী আর অভিবাসীদের পাচারের চ্যানেল বন্ধ করার পরিবর্তে তুরস্ক নিজেই এখন পাচারকারীতে পরিণত হয়েছে।”
ইউরোপীয় সীমান্ত রক্ষা সংস্থা ‘ফ্রন্টেক্স’ বলছে, দ্রুত ইউরোপীয় সীমান্ত রক্ষী মোতায়েনের মাধ্যমে গ্রিসকে কিভাবে সাহায্য করা যায় সেটি তারা পরীক্ষা করে দেখছে।
ব্রিটেনে আরও বিস্তৃত আকারে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ঠেকাতে প্রস্তুত থাকা দরকার এবং এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে “চ্যালেঞ্জিং” হতে পারে বলে সর্তক করে দিয়েছে ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগ। রবিবার যুক্তরাজ্যে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক লাফে বেড়ে যাওয়ার পর করোনভাইরাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রথম কোবরা মিটিংয়ের ডাক দেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে কোবরা মিটিংয়ে আলোচনার সময়ই ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের এ সর্তক বার্তা সামনে এল। এদিকে যুক্তরাজ্যে কবিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪০ এ পৌঁছেছে এবং এটি যুক্তরাজ্যের অর্ন্তভুক্ত চারটি দেশেই পাওয়া গেছে।
এছারাও আজকের জরুরী সভাটিতে স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক সহ চিফ মেডিকেল অফিসার প্রফেসর ক্রিস হুইটি এবং প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স সহ সিনিয়র মন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন। স্কটল্যান্ডের ফাস্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজনও কনফারেন্স কলের মাধ্যমে এ কোবরা মিটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন। এদিকে মন্ত্রিপরিষদ অফিসের বাইরে, হাউস অফ কমন্সের নেতা জ্যাকব রিস-মোগ বলেছেন, আপনার হাত ধোয়া মানে জাতীয় সংগীত।
এর আগে গতকাল রবিবার ইংল্যান্ডের আরও বারোজন রোগীর করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা ইতিবাচক আসে। প্রধান মেডিকেল অফিসার প্রফেসর ক্রিস হুইটি জানিয়েছেন,নতুন আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন রোগী একজন আক্রান্ত পরিচিত রোগীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে ছিলেন যিনি যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত হয়েছিল।