সবার প্রিয় মোশাররফ করিম

Spread the love

656বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ মোশাররফ করিম। শক্তিমান অভিনেতা। যিনি নিজেই নিজের প্রতিদন্দ্বী। বৈচিত্রময় সব চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তার ডায়লগগুলো দর্শকদের মুখে মুখে ফিরে। সম্প্রতি এ অভিনেতা আবু শাহেদ ইমন পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘জালালের পিতাগন’ এ অভিনয়ের জন্য পতুর্গালে একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেতা নির্বাচিত হয়েছেন। ফের আলোচনায় এসেছে অভিনেতা হিসেবে মোশাররফের দক্ষতা। দর্শকপ্রিয় এই অভিনেতা নির্মাতাদের চোখে কেমন? জানিয়েছেন তিন নির্মাতা রেদোয়ান রনি, মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও সাগর জাহান। তাদের বেশিরভাগ নাটকেই অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম।
‘তালা’ভেঙে শুরু হয় মোশাররফ করিম-রেদোয়ান রনির দ্বৈরথ যাত্রা।২০০৭ সালে নাটকটি নির্মান করেন রনি। এটি রনির দ্বিতীয় নাটক। আর মোশাররফ করিম তখন টুকটাক কাজ করছেন। উঠতি অভিনয়শিল্পী। নাটকটি দিয়েই দুজন আলাদাভাবে পরিচিতি পান। এরপর থেকে রনি নাটক বানিয়েছেন আর মোশারফ করিম নেই-এমনটা খুব কমই হয়েছে। তার ৭০% ডিরেকশনেই মোশারফ করিম আছেন।

বিহাইন্ড দ্যা সিন, রেডিও চকোলেট, এফএনএফ, ম্যানিব্যাগ, হাউসফুল-গুণতে গুণতে আঙ্গুল ফুরিয়ে যাবে। অভিনয়ের বাইরে দুজনের সম্পর্কটা ভাতের মতো সহজ। মোশারফকে ‘বড় ভাই’ মানেন রনি। নিজের জীবনের গল্প, নির্মানের গল্প, সংসারের গল্প সবটায় শেয়ার করেন। যেন মিশে গেছেন আত্মার টানে। রনির পছন্দের আর্টিষ্ট তিনি। কারণটা? ‘অসম্ভব অলো মানুষ তিনি। স্ট্রাগল করেন। ক্যারেক্টার নিয়ে ভাবেন। কাজে শতভাগ সিরিয়াস’।–বললেন রনি।

414টিভি খুললেই এখন মোশাররফ করিম! এত্ত নাটকের ভিড়ে শুটিংয়ের টাইমিংটা মেইনটেইন করতে পারেন? ‘সচরাচর শুটিংয়ে দেরী করেন না। তবে প্রচুর কাজ করেন তো মাঝে মাঝে দু’একবার দেরী হয়। তবে সেদিনই কাজটা শেষ পুষিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।’-বললেন রনি।

ব্যাপারটা নিয়ে ‘বড়ভাই’-এর প্রতি একটা আবদার করলেন রনি। বললেন, ‘উনি যেন কম কাজ কমিয়ে দেন। উনার কাজের প্রেশার বেড়ে গেছে। গণহারে কাজ না করে অল্প কিছু ডিফ্রেন্ট করা করা উচিত। কারণ তিনি জটিল কাজগুলো ফুটিয়ে তোলার অসম্ভব ক্ষমতা আছে তার।’

মোশাররফ করিমের কোন চরিত্রটি আপনার সবচেয়ে প্রিয়? ‘বিহাইন্ড দ্যা সিনে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। নাটকটিতে ভ্যাগাবন্ড চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নাটকটি শুটিংয়ের আগে চরিত্র নিয়ে যেভাবে কল্পনা করেছিলাম সেভাবেই নিজেকে ফুটিয়ে তুলেছেন।’-জানালেন রনি।
ছোটপর্দায় দুজনের প্রথম সাক্ষাত ২০০৮ সালে। ‘সন্ধান দিন’ নাটকে কাজ করেছেন তারা। বেকার তরুণের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। অনেকেই থাকতে তাকে কাস্ট করার কারণ? রাজের মুখে ফুলঝুড়ি ঝরলো,‘অ্যাকটিংয়ে তিনি খুব সিরিয়াস। আমি তো চাই আমার যতো ক্যারেক্টার সবই তাকে দিয়ে করাবো! সব ক্যারেক্টারেই তিনি পারফেক্ট। এবার ঈদে জমজ-৩ নামে একটি নাটক দেখলাম। সেখানে বাপ ও দুই ছেলে মিলিয়ে তিনটি চরিত্রে মোশাররফ করিম অভিনয় করেছেন। কিন্তু আপনার ধরবার জো নেই তিনি মোশারফ করিম। প্রত্যেকটাই ভিন্ন ভিন্নভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।’

110এরই ফাঁকে আরো একটা তথ্য দিয়ে রাখলেন রাজ,‘মোশারফ করিম মজার মানুষ। তার সঙ্গে যেকোন কিছু শেয়ারিং করলে ভালো ইনপুট পাওয়া যায়।’

অনেকে বলছেন মোশাররফ করিমের কাজ কমানো উচিত। আপনার কি মত? ‘এর জন্য দায়ী আমরা ডিরেক্টররা। সবার সঙ্গেই তার ভালো যোগাযোগ। তিনি চাইলেই কাউকে না করতে পারছেন না। অনেক সময় একটা ডিরেক্টর তার পেছনে তিনমাস ধরে লেগে আছে। উনি কি করবেন? তাছাড়া এটাই উনার ইনকাম সোর্স।’

অন্যান্য অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে মোশাররফ করিমের পার্থক্য কোথায়? ‘অনেক। তবে একটা বলি। আমরা গল্প লেখার পর অন্যদের সে চরিত্রে অভিনয় করতে বলি। আমার মোশারফ করিমের বেলায় তার কথা মাথায় রেখেই আমরা গল্প লিখি।’
‘সিকান্দার বক্স’র কল্যানে মোশাররফ করিম-সাগর জাহান জুটির কথা সবার মুখে মুখে। দুজনের কথা উঠলেই সবার আগে হাজির হয় ‘সিকান্দার বক্স’। তুমুল জনপ্রিয় সিরিজ নাটক। দুজনের জোটবদ্ধ পথচলা আজ নতুন নয়, ২০০৯ সাল থেকে। সাগর জাহানের ‘ভায়োলিন’ নাটকে অভিনয় করেছেন মোশারফ করিম।

চিত্রনাট্য লেখার সুবাদে সাগর জাহানের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। তার লেখা নাটকে কাজও করেছেন মোশারফ করিম। তাই দুজনের পরিচিতিটা পেশাগত জীবন ছাপিয়ে ব্যক্তিগত জীবনেও বিস্তার করে।

26মোশাররফ করিম তার ভাই, বন্ধু। বন্ধুকে নিয়ে তার মূল্যায়নটাও তাই ভিন্নরকম। ‘বাংলাদেশের লিজেন্ডারি অভিনেতা। সব চরিত্রে সুন্দরভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। দুজনে যখন মিডিয়ায় শুরুর দিকে কাজ করতাম তখন মোশারফ বলতেন, ‘সাগর জানেন, আমরা একদিন অনেক বড় হবো।’ আজকে বলে বলছি না সেদিনই আমি বুঝেছিলাম তিনি বড় হবেন। অনেক পড়াশোনা করেন। সেন্স অব হিউমার অসাধারণ। মানুষকে হাসাতে পারেন সহজে।’

সাগর জাহানের চোখে প্রিয় চরিত্র ‘সিকান্দার বক্স’। এছাড়া ভায়োলিন, চুপ ভাই কিছু বলবেন, টাপুর টুপুর অপেরা নাটকের মোশাররফের অভিনয় সবচেয়ে বেশি মুদ্ধ করেছে পরিচালককে।


Spread the love

Leave a Reply