‘সরকারকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ দিতে হবে’
আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘প্রোক্লেমেশন অব জুলাই রেভ্যুলেশন’ বা ‘জুলাই আন্দোলনের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশ করতে হবে। সেই পর্যন্ত মানুষের আকাঙ্ক্ষার কথা জানতে জেলায় জেলায়, মহল্লায় মহল্লায় যেতে হবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেন।
এ সময় তারা ‘জুলাইয়ের প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’, ‘ফাঁসি, ফাঁসি, ফাঁসি চাই, শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদি, আজাদি’, ‘জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ, রাজপথ’, ‘বিচার আর সংস্কার, এই মুহূর্তে দরকার’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এতদিন পর্যন্ত আমাদের এই জুলাই গণঅভুত্থানের কোনো ঘোষণাপত্র ছিল না। আমরা বলতে চাই, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।
উপস্থিত সকরের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা জেলায় জেলায় পাড়া মহল্লায় মানুষের কাছে যাবেন, তারা কী বলতে চায় সে কথাগুলো উঠিয়ে নিয়ে আসবেন। যারা এখনো ষড়যন্ত্র করছেন তাদের বলতে চাই, আপনাদের আম্মু আর দেশে ফিরবে না। যাকে আমরা সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি তাকে আর এ দেশে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আজ এতদিন হয়ে গেল এখনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি। আমরা দেখেছি পিলখানায় দেশপ্রেমিক অফিসারদের একজন একজন করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই অতি শিগগিরই পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। আমরা শাপলা চত্বর ভুলে যাইনি। শাপলাতে লাইট নিভিয়ে রাতের আঁধারে আলেম-ওলামাদের হত্যা করা হয়েছে। আলেম-ওলামাদরে হত্যার সেই বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গুম খুনের বিচার করতে হবে। এ দেশে এখন আর আমাদের কোনো শত্রু নেই। আমাদের একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ চায়। বাংলাদেশের মানুষ নতুন সংবিধান চায়। বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের আয়োজনের ঘোষণা দেয়, তখন অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে ঘোষণাপত্র পাঠের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ঘোষণা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বলতে চাই, অবিলম্বে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠ করতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই নতুন সংবিধান হবে। আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। সে নির্বাচনে নির্বাচিতরাই সংবিধান সংশোধন করবে। বাংলাদেশের মানুষের অসংখ্য চাওয়া আছে, আগামীর নির্বাচনে যারা জয়ী হবেন তাদের সেই চাওয়াগুলো পূরণ করতে হবে।