সরকারী নীতি ভঙ্গ করে বালাগঞ্জে ২ টি কলেজ জাতীয়করণ, বাদ দেয়া হয় তাজপুর ডিগ্রী কলেজকে

Spread the love

76664সিলেট অফিসঃ সরকারী নীতি ভঙ্গ করে বালাগঞ্জ উপজেলায় ২ টি কলেজকে জাতীয়করণ করা হয়। বাদ দেয়া হয়েছে উপজেলার সবচেয়ে প্রাচীনতম কলেজ তাজপুর ডিগ্রী কলেজ টি । যাহা প্রাচীনতম এই কলেজটির প্রতি সম্পূর্ন অবিচার বৈকি ? তাজপুর ডিগ্রী কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে । ৩টি বিষয়ে অনার্স সহ প্রায় ২০০০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে এই কলেজে । পড়ালেখার মানের দিক দিয়েও বরাবর উপজেলার অন্য ৩ টি কলেজের তুলনায় এগিয়ে তাজপুর ডিগ্রী কলেজ । অথচ জাতীয়করণকৃত উপজেলার অন্য দুটি কলেজই নব প্রতিষ্ঠিত । এদের মধ্যে বালাগঞ্জ কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে, আর  গোয়ালা বাজার মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে । জাতীয়করনণর শর্ত ভঙ্গ করে দুটি কলেজকে অন্তভূক্ত করা হলেও প্রাচীনতম তাজপুর ডিগ্রী কলেজকে বাদ দেয়া হয় এই তালিকা থেকে ।

বৃহস্পতিবার কলেজ কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জানান ,তাজপুর ডিগ্রি কলেজ ওসমানীনগর তথা বিশ্বনাথ ও বালাগঞ্জের সবেচেয়ে প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এতদঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক কমরেড আজহার আলী ও কমরেড আসাদ্দর আলী এবং এলাকার শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কলেজটি এলাকার শিক্ষার প্রসারে নিরবচ্ছিন্ন ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে কলেজটিতে ৩টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রিসহ কলেজে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা দুই সহস্রাধিক। সিলেট- ঢাকা মহাসড়ক পার্শ্বে প্রায় ১০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কলেজটির অবকাঠামোসহ সামগ্রিক পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম।

সম্প্রতি সরকার দেশের যে সমস্ত উপজেলায় সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই, সেই সমস্ত উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সিলেট বিভাগের প্রায় প্রতিটি উপজেলার ১টি প্রাচীন ও মানসম্পন্ন কলেজ জাতীকরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে ও ব্যতিক্রম ঘটে ওসমানীনগর উপজেলায়।

15665755_1738819203103772_6019895472962010631_n১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথম ডিগ্রি কলেজকে বাদ দিয়ে নবনির্মিত মহিলা কলেজকে জাতীয়করণের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। অথচ, সরকারীভাবে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় জাতীয়করণের বিষয়টি যখন বিবেচনা করা হয় । তখনই তাজপুর কলেজের জন্য সরকারীকরনের জন্য আবেদন পেশ করা হয় সাথে সাথে। কিন্তু গত ১৪ ডিসেম্বর বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের উদ্যোগে তাজপুর ডিগ্রি কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে বেলা ১১ টা থেকে ২টা পর্যন্ত টানা তিন ঘন্টা ঢাকা-সিলেট মহসড়ক অবোরোধ করা হয়।

পরে প্রশাসন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অবোরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে তাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস প্রদান করা হয় অন্যথায় ২৪ ডিসেম্বর থেকে এ আন্দোলনে তাদের সর্বাত্মক সমর্থন ও অংশ গ্রহণের স্বতঃস্কুর্ত ঘোষণা প্রদান করা হয়।

সরকার যে নীতিমালার ভিত্তিতে কলেজ জাতীয়করণ করছেন তার সবগুলো বিদ্যমান থাকা সত্তে¡ও ওসমানীনগর উপজেলা সদরে অবস্থিত অত্র কলেজটি জাতীয়করণের তালিকায় অন্তভুক্ত না হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রী, অভিষেক এবং সর্বোপরি এলাকার মানুষ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ্ গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে থেকে সড়ক অবরোধ বিক্ষোভ, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, জেলা প্রসাশকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ইতিমধ্যে পালন করা হয়েছে।

বক্তারা বলেন, ‘দাবি আদায়ে আগমীতে আরো কঠিন ও কঠোর কর্মসূচী গ্রহন ও জাতীয়করণ সময়ের যৌক্তিক দাবি। কলেজটি জাতীয়করণ করা হলে এতদঞ্চলের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী উপকৃত হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা নিশ্চত হবে।’এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মো. মনু মিয়া অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত), ড. সৈয়দ আব্দুল মোতাকাব্বির আহবায়ক, সদস্য পরিচালনায় ছিলেন আব্দাল মিয়া, ডা. ফখরুল ইসলাম, অধ্যাপক প্রানকান্ত দাস,অধ্যাপক ফখরুল আবেদীন চৌধুরী, অধ্যাপক মো. মসরুজ্জামান সঞ্চালনায়, অধ্যাপক আবুল খায়ের প্রমুখ।


Spread the love

Leave a Reply