সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রিভিউ আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। মঙ্গলবার বিকেল তিনটার দিকে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সৈয়দ মাহবুবুর রহমান আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন।
হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার অভিযোগে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে রায়ে তার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর সাঈদীর রায় প্রদানকারী পাঁচজন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬১৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আপিল বিভাগের রায় প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করা যাবে। সে হিসেবে আগামী ১৫ জানুয়ারি সাঈদীর রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার শেষ দিন।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিষয়টি সম্পর্কে জানান, আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এতে সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হয়েছে। মাহবুবে আলম আরো বলেন, রিভিউ আবেদনটি ৩০ পৃষ্ঠার। পাঁচটি প্রেক্ষাপটে যুক্তি উপস্থাপন করে আবেদনটি করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছিলেন, রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে কাজ চলছে। আশা করি, আগামীকাল আবেদন করতে পারব। কাল না পারলেও বুধবার রিভিউ আবেদন করা হবে। এ বিষয়ে সাঈদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান জানান, আমরা রিভিউ করতে চাই না। রাষ্ট্রপক্ষ রিভিউ করলে এর পরই আবেদন করা হবে।
সাঈদীর রায়ের সার সংক্ষেপ :
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেন। অপর চার বিচারপতি হলেন- বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। সহিংসতায় প্রথম তিন দিনেই ৭০ জন নিহত হন।
এ মামলায় আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের করা দুটি আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ১৬ এপ্রিল আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ রাখেন। এর ঠিক পাঁচ মাসের মাথায় রায় ঘোষণা করা হয়।