সাবেকদের সমর্থন পাচ্ছেন না ট্রাম্প
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় সাবেক প্রেসিডেন্টদের সমর্থন পাচ্ছেন না ইতমধ্যে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করা রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম গার্ডিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো এমনটাই বলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত যতজন রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে জীবিত রয়েছেন কেবল দুজন। তারা আবার সম্পর্কে বাবা-ছেলে। এ দুই সাবেক প্রেসিডেন্ট হলেন জর্জ এইচ বুশ ও তার ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ। এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের অবস্থান কী, দল থেকে তারা কাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান সে ব্যাপারে কৌতুহল রয়েছে অনেকের। কৌতুহলের অবসান ঘটিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের কাছে পাঠানো বিবৃতিতে এ দুই সাবেক প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এবারের নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবেন না তারা। সে হিসেবে জীবিত কোনও সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের সমর্থন পাওয়া হচ্ছে না ট্রাম্পের।
দলের অন্য প্রার্থীদের মনোনয়নের দৌড় থেকে সরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থিতা প্রায় নিশ্চিত হয়ে পড়েছে তখনই এমন ইঙ্গিত দিলেন তারা। আন্তর্জাতিক সংবদামাধ্যমগুলোর আশঙ্কা, এর পেছনে ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতা বাছাইয়ের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ইন্ডিয়ানায় অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বড় পরাজয়ের পর মনোনয়নের দৌড় থেকে সরে দাঁড়ান অন্যকম প্রতিদ্বন্দ্বী টেড ক্রুজ। পরে শেষ প্রতিদ্বন্দ্বী জন কাসিকও। আর এর মধ্য দিয়ে রিপাবলিকানদের হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থিতা পাওয়ার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
এর কিছু পরে বুধবার গার্ডিয়ানকে দেওয়া বিবৃতিতে দুই প্রেসিডেন্ট-এর মুখপাত্ররা জানান, ২০১৬ সালের নির্বাচন থেকে দূরে থাকছেন দুই বুশ। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ তম প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের মুখপাত্র ফ্রেডি ফোর্ড গার্ডিয়ানকে বলেন, নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ কিংবা এ নিয়ে মন্তব্য করার ব্যাপারে বুশের কোনও পরিকল্পনা নেই।
ছেলের মতোই এবারের নির্বাচন নিয়ে একই ধরনের পরিকল্পনা প্রতিধ্বনিত হয়েছে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের বিবৃতিতেও। এইচ ডব্লিউ বুশের মুখপাত্র জিম ম্যাকগ্রাথ গার্ডিয়ানকে বলেন, ৯১ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট বুশ রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি জেব বুশকে সহায়তার জন্য সামান্য কিছুই করেছিলেন কিন্তু সেগুলো ছিল খুবই ব্যতিক্রমধর্মী।
নির্বাচনে দুই বুশের সংশ্লিষ্ট না থাকার পেছনে ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে উল্লেখ করে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের আরেক ছেলে জেব বুশ প্রার্থিতার দৌড়ে টিকতে না পারার বিষয়টি এক্ষেত্রে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে।
ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, সম্ভবত ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার কারণেই এবারের নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুই বুশ। এর পেছনের সম্ভাব্য কারণগুলোও উল্লেখ করেছে তারা। নির্বাচনি প্রচারণায় জেব বুশকে বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ করে কথা বলতেন ট্রাম্প। জেব বুশের শক্তি কম এবং তিনি তার পরিবারের জন্য লজ্জা ডেকে আনছেন বলে উপহাস করেছিলেন তিনি। এছাড়া ইরাক যুদ্ধকে ‘ভুল পররাষ্ট্রনীতি’ মনে করেন ট্রাম্প। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বুশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগও করেছেন তিনি। সবমিলে ট্রাম্পের সঙ্গে বুশ পরিবারের সম্পর্ক বৈরিতায় ভরা।
কেবল দুই বুশই নন, আরও অনেক সিনেটরই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান না। নেভাদার সিনেটর ডিন হেলার ও নেবরাস্কার সিনেটর বেন সাসিসহ বেশ কয়েকজন নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের সিনেটর কেলি আয়োত্তে ও ওহিওর সিনেটর রব পোর্টম্যান বলছেন, তারা দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীকে ভোট দেবেন কিন্তু স্বীকৃতি দেবেন না।