সাবেক বিচারপতি মানিক পালিয়ে যাওয়ার সময় সিলেট সীমান্তে গ্রেপ্তার
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি আবুল হোসেন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী দনা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজিবি জানায়, সাবেক বিচারপতি মানিক সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এসময় স্থানীয় জনগণের হাতে তিনি ধরা পড়েন। পরে বিজিবি তাকে আটক করে।
স্থানীয় দালাল ধরে তিনি ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন। আটকের সময় স্থানীয়দের তিনি জানান, তার সঙ্গে বাংলাদেশি এবং বৃটিশ পাসপোর্ট আছে। নগদ টাকা আছে ৪০ হাজার। আগের দিন তার সঙ্গে থাকা ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দুই যুবক মারধর করে নিয়ে গেছে। শুধু সীমান্ত পারের জন্য নৌকার মাঝিকে ১৫ হাজার টাকা দেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিচারপতি মানিককে প্রশ্ন করছেন কয়েকজন। এসময় তিনি তার নাম বলছেন। নিজের অসুস্থতার কথা বলছেন। দালালদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার কথা বলেন। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাওয়ার তথ্য জানান।
কেন পালাচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন ভয়ে পালাচ্ছি। কার ভয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রশাসনের।
অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় জঙ্গলে কলাপাতা বিছিয়ে তিনি শুয়ে আছেন। কেউ একজনের সঙ্গে কথা বলছেন। তাকে টাকা দেয়ার কথা বলছেন। ওই ব্যক্তি বলছেন আমাদের টাকা লাগবে না।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি মানিক বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ঘোর সমর্থক ছিলেন। সরকারের কার্যক্রম সমর্থন করে টকশোতে আলোচনা করতেন। সরকার পতনের পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।
এর আগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় সাবেক বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে গত ১৯ আগস্ট নোয়াখালীর আদালতে মামলা করা হয়। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হাসান পলাশ বাদী হয়ে নোয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন সাবেক বিচারপতি আবুল হোসেন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি বলেছিলেন ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, ছিলেন পাকিস্তানের চর’।
জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয়ে মিথ্যাচারসহ কালিমা লেপনের হীন উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে মানহানিকর বক্তব্য দেন তিনি। যা প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়। তার এমন মন্তব্যে জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিশেষ করে গত জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলনের সময় চ্যানেল আই-তে প্রচারিত টকশোতে মানিক ওদ্ধত্য ও কুরুচিপূর্ণ, নারী বিদ্বেষী, অপমানজনক বক্তব্য ও আচরণ করেন, যা সারা দেশবাসী দেখেছে এবং তা সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়।