সামাজিক মাধ্যমের বিরুদ্ধে জরিমানার বিধান চান ব্রিটিশ এমপিরা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃঅনলাইনে অবৈধ বিষয়বস্তু (কনটেন্ট) সরিয়ে নিতে ব্যর্থ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপের আইন করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ এমপিরা। হাউস অব কমন্সের হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির এক প্রতিবেদনে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনলাইনে জঙ্গিবাদের বিভিন্ন তথ্য খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। সামাজিক কোম্পানিগুলো এসবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।
অপরাধমূলক কনটেন্ট সরিয়ে নিতে সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপের আইন করার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কমিটির প্রধান সাবেক লেবার মন্ত্রী ইয়েবেতে কুপার। তিনি জানিয়েছেন, অনুসন্ধানে দেখা গেছে জঙ্গিবাদ ও অপরাধমূলক কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোম্পানিগুলো ব্যর্থ হচ্ছে।
কুপার বলেছেন, অনলাইনে অবৈধ ও বিপজ্জনক কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোর ব্যর্থতা হতাশাজনক। জঙ্গি কাজে কর্মী সংগ্রহ বা অনলাইনে শিশু নিপীড়নের মতো অবৈধ কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার জন্য উন্নত ব্যবস্থা তৈরির জন্য তাদেরকে বারবার বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ এমপিদের কমিটির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুগল, ফেসবুক ও টুইটারের জঙ্গিবাদ বিস্তার প্রতিরোধে কোম্পানিগুলো ভূমিকা আরও কার্যকর করা উচিত।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, কোম্পানিগুলো অবৈধ কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়া ও চিহ্নিত করার জন্য নিজেরা আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা না নেওয়ার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। যুক্তরাজ্যে জঙ্গিবাদ বিষয়ক কনটেন্টের ওপর নজরদারি চালায় মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইন্টারনেট রেফারেল ইউনিট (সিটিআইআরইউ)। যার অর্থ দাঁড়াচ্ছে গুগল, টুইটার ও ফেসবুকের মতো মিলিয়ন পাউন্ডের কোম্পানিগুলো চায় জনগণের করের টাকায় সরকার এই কাজ চালিয়ে যাক। এতে করে তাদের কোম্পানির খরচ করতে হবে না এবং নিজেদের ব্র্যান্ডের সুনামও অক্ষত থাকবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কোম্পানিগুলো জঙ্গিবাদ ও বিদ্বেষমূলক কনটেন্ট অপসারণের জন্য ব্যবহারকারীদের রিপোর্টিংয়ের ওপর নির্ভর করে। যা মডারেটররা পর্যালোচনা করেন। ফলে তারা কোনও ব্যয় বহন ছাড়াই এ কাজ করিয়ে নিচ্ছে। নিজেরা কোনও দায়িত্বও নিচ্ছে না।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আম্বার রুড এই প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, প্রতিবেদনের সুপারিশগুলো সতর্কভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এটা স্পষ্ট করেছি যে, ইন্টারনেটকে জঙ্গিবাদ প্রসারের ক্ষেত্র বা সামাজিক মাধ্যমকে সমাজের মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। ’
রুড আরও বলেন, ‘অনলাইনে জঙ্গিবাদের প্রচারণা বন্ধে কারিগরি উন্নতির জন্য আমরা ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো চাপ অব্যাহত রাখব। ছোট কোম্পানিগুলো যাতে এই সামর্থ্য অর্জন করে সেজন্য সহযোগিতা করব। আমি দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করছি।’