সিলেটে এসএমইউজের নাগরিক শোকসভা: বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে গাজী ছিলেন অগ্রসৈনিক: সিকৃবি ভিসি
সিলেট প্রতিনিধিঃ কিংবদন্তি সাংবাদিক নেতা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজী স্মরণে সিলেটে নাগরিক শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় সিলেট প্রেসক্লাবের কনফারেন্স হলে সিলেট মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন-এসএমইউজে এই শোক সভার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, মরহুম রুহুল আমিন গাজী ছিলেন একজন আপোষহীন সাংবাদিক নেতা। তিনি সুদীর্ঘ চার দশক সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। কখনোই অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। মানবিক, শোষনহীন ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সকল আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন অগ্রসৈনিক।
স্মরণ সভা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক ও দৈনিক সিলেটের ডাক এর প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
এসএমইউজ’র সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি খালেদ আহমদ ও সহ সাধারণ সম্পাদক এম এ মতিনের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজে’র সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, ইবনে সিনা হাসপাতাল সিলেট লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ সিলেটের আহবায়ক ডা. শামীমুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম আরো বলেন, মরহুম এম সাইফুর রহমানের একক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার অনিয়ম, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত করে। ফ্যাসিস্টদের দোসররা নানা ষড়যন্ত্র করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সাংবাদিকসহ সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজী বিগত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করে জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে মিথ্যা মামলায় জেল খাটতে গিয়ে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যার ফলে তার শরীরে বাসা বাঁধে মরণ ব্যাধি এবং অকালেই তাকে পরপারে চলে যেতে হয়েছে।
প্রধান বক্তা বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, রুহুল আমিন গাজী বিগত ৪ আগস্টেও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পেশাজীবী সংগঠনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। তিনি অসুস্থ শরীর নিয়ে জালিম সরকারের বুলেট বোমার বিরুদ্ধে নির্ভিক সৈনিক হিসেবে ছিলেন সামনের সারিতে। দেশ ও জাতির কল্যাণে তাঁর অবদান ভুলা যাবে না। যে ত্যাগের বিনিময়ে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট শক্তি দূর হয়েছে তার সুফল ভোগ করতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান তিনি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রুহুল আমিন গাজী মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী আন্দোলনের ছিলেন অগ্রসৈনিক। পরিবেশ পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি ছিলেন দক্ষ। তার মতো সুযোগ্য নেতৃত্ব সাংবাদিক সমাজ তথা গোটা জাতির জন্য বড়ই প্রয়োজন ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, নয়াদিগন্তের ব্যুরো প্রধান আব্দুল কাদের তাপাদার, সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান কবির আহমদ, এডভোকেট মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, রোটারিয়ান শাহজাহান সেলিম বুলবুল, শাবি’র বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমইউজ’র সভাপতি বদরুদ্দোজা বদর এবং কোরআন তেলাওয়াত করেন এসএমইউজ’র সদস মো. আব্দুর রাজ্জাক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্টার সৈয়দ সলিম মো: আব্দুল কাদির, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার ড. মো. আতাউর রহমান, সিকৃবির প্রফেসর ড. মো: সামিউল আহসান তালুকদার তুষার, শাবিপ্রবির প্রফেসর ড. রেজওয়ান আহমদ শাওন, প্রফেসর ড. ইফতেখার আহমদ, প্রফেসর ড. মো. শাহাবুল হক, প্রফেসর মো. বেলাল হোসেন শিকদার, অধ্যাপক ড. জি এম রবিউল ইসলাম, অধ্যাপক ড. পাবেল শাহরিয়ার, এডিশনাল পিপি আল আসল মুমিন প্রমূখ।