হবিগঞ্জে বালুচাপা দেয়া ৪ শিশুর লাশ উদ্ধার

Spread the love

বালুর নিচ থেকে বেড়িয়ে আছে অবুঝ শিশুর নিথর হাত
বালুর নিচ থেকে বেড়িয়ে আছে অবুঝ শিশুর নিথর হাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

হবিগঞ্জের বাহুবলের সুনন্দা গ্রাম থেকে নিখোঁজের পাঁচদিন পর ৪ শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই গ্রামের ঈসাবিল এলাকার একটি বালির গর্ত থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিশুরা হলো- বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র জাকারিয়া শুভ (৮), প্রথম শ্রেণির ছাত্র মনির মিয়া (৭), চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাইল মিয়া (১০)। এদের মধ্যে তিনজন সম্পর্কে আপন চাচাতো ভাই। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শিশুগুলো নিখোঁজ হয়। এরপর শনিবার বাহুবল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং-৫১৬) করা হয়েছিল।

নিহতের স্বজনদের আহাজারি
নিহতের স্বজনদের আহাজারি

বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে যায় ওই চার শিশু। কিন্তু বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তারা বাসায় ফেরেনি। তাদের স্বজনরা আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাদের পায়নি। পরে শুক্রবার রাতেই উপজেলার সর্বত্র মাইকযোগে নিখোঁজ সংবাদটি প্রচার করা হয়।

শনিবার দুপুর পর্যন্ত ওই চার শিশুর সন্ধান না পেয়ে জাকারিয়া আহমেদ শুভর বাবা ওয়াহিদ মিয়া বাহুবল মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এর পর থেকে পুলিশের একাধিক দল মাঠে নামে ওই শিশুদের অনুসন্ধানে। গত সোমবার বিকেলে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানদাতাকে ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করা হয়।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার ঈসাবিল এলাকায় বালু উত্তোলন করতে গেলে শ্রমিকরা বালুর নিচে এক শিশুর হাত দেখতে পায়। পরে একে একে ৪ শিশুর নিথর দেহের খোঁজ মিলে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশগুলো উদ্ধার করে। সাথে সাথে ঘটনাস্থলে হাজির হন প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
অবুঝ ৪ শিশুর লাশ পাওয়ার খবরে নিহতদের স্বজনরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী ঈসাবিল এলাকায় হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভীড় জমায়। এসময় স্বজনদের কান্নায় এলাকার আকাশ বাতস-ভারি হয়ে উঠে।

ঘটনাস্থলে হাজারো উৎসুখ জনতার ভিড়
ঘটনাস্থলে হাজারো উৎসুখ জনতার ভিড়

এদিকে, চার শিশুর হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিলে লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পুলিশের সিলেট বিভাগের ডিআইজি মিজানুর রহমান। বলেন, এটি একটি চরম লোমহর্ষক ঘটনা। দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশুদের প্রতি এমন নিষ্ঠুরতা দেখে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য আমি এই পুরস্কার ঘোষণা করেছি। যে তথ্য দেবে, তাঁর নাম পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁর পাশে থাকবে বলে ডিআইজি জানান।

হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারন সম্পর্কে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বড়দের পারিবারিক বিরোধে প্রতিহিংসার শিকার হয়ে থাকতে পারে নিহত শিশুরা।


Spread the love

Leave a Reply