লন্ডনে বিক্ষোভঃ শান্তি লংঘন ও সহিংসতার দায়ে ১০৭ জন গ্রেপ্তার
বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ শনিবার মধ্য লন্ডনে প্রস্তাবিত একটি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় শতাধিক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে মেট পুলিশ। ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল শান্তি লঙ্ঘন, সহিংসতাজনিত ব্যাধি, পুলিশে হামলা এবং কোভিড আইন লঙ্ঘন সহ অপরাধের জন্য। এতে বলা হয়, বিক্ষোভ সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেয়ার বিষয়ে ‘দ্য পুলিশ, ক্রাইম, সেন্টেন্সিং অ্যান্ড কোর্টস’ বিল আনা হয়েছে। এর অধীনে পুলিশ যেকোনো বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
তাদের ওপর অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে। বিক্ষোভের সময় এবং তাতে শব্দ সীমিত করার ক্ষমতা দেয়া থাকবে পুলিশকে। তবে সমালোচক এবং অধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করতে ব্যবহার করা হবে এই বিল। ফলে এর প্রতিবাদে ‘কিল দ্য বিল’ নাম দিয়ে বিক্ষোভ আয়োজন করা হয় কয়েক ডজন শহরে। এতে সমর্থন দেয় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গ্রুপ এক্সটিংকশন রিবেলিয়ান এবং ব্লাক লাইভস ম্যাটারের মতো বড় বড় অধিকার বিষয়ক গ্রুপ। বিক্ষোভকারীদের সবাই দৃশ্যত শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলেন। সবকিছুই ঠিকঠাকমতো চলছিল। কিন্তু মধ্য লন্ডনে কয়েক হাজার মানুষের একটি র্যালিতে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে হাল্কা সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভের ইতি ঘটাতে মধ্য লন্ডনে এ সময় মোতায়েন করা হয়েছিল মেট্রোপলিটন পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যদের। লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বলেছে, এ সময় সেখান থেকে ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০ জন পুলিশ কর্মকর্তা। তবে কেউই এতে মারাত্মক আহত হননি। বিক্ষোভের কমান্ডার আডে আডেলেকান বলেছেন, এই বিক্ষোভে যারা অংশ নিয়েছেন তারা সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের প্রথম দিকে বিক্ষোভে লন্ডনের অংশবিশেষ অচল করে দিয়েছিল এক্সটিংকশন রিবেলিয়ান নামের গ্রুপটি। এর ফলে বেশ কিছু রাজনীতিক দাবি উত্থাপন করেন যে, পুলিশকে বিক্ষোভ দমনের জন্য অতিরিক্ত শক্তি দিতে হবে। তার ফল হিসেবে নতুন আইনের জন্য ওই বিলটি আনা হয়েছে। গত মাসে এই বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছে। এ জন্য সারাদেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে শনিবারের বিক্ষোভকে দেশজুড়ে কর্মসূচি বলে বর্ণনা করেছেন আয়োজকরা। লন্ডনে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন লেবার দলের সাবেক নেতা জেরেমি করবিন। তিনি বলেছেন, আমি এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি অবাধে কথা বলার এবং আমাদের সমাজে সংগঠনগুলোর অধিকারের পক্ষে। হাউজ অব পার্লামেন্টের বিপরীতে বিক্ষোভে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ ভিন্ন কিছু। বিক্ষোভ হয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ব্রিস্টলে। সেখানেই কিছু বিক্ষোভকারী সহিংস হয়ে ওঠেন। পুলিশের প্রতি হামলা করা হয়েছে। তাদের গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এমন হামলাকে জঘণ্য বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।