শিশু নিপীড়নের ছবি খুঁজতে আইফোন এবং আইপ্যাড স্ক্যান করবে অ্যাপল
বাংলা সংলাআপ ডেস্কঃ শিশু নির্যাতনের আলামতের খোঁজে ক্রেতাদের ডিভাইস স্ক্যান করার ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল। ‘চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ ম্যাটিরিয়াল’ বা সিএসএএম খোঁজার জন্য স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি নির্মাণ করেছে ওই টেক জায়ান্ট। কোনো ছবি আইক্লাউডে জমা হওয়ার আগেই, আগে থেকে চিহ্নিত কোনো সিএসএএম-এর সঙ্গে মিল আছে কি না সেটি যাচাই করবে ওই প্রযুক্তি।
অ্যাপল জানিয়েছে, আগে থেকে চিহ্নিত সিএসএএম-এর সঙ্গে ম্যাচ পাওয়া গেলে সেটি প্রথমে যাচাই করে দেখবেন অ্যাপলেরই কোনো কর্মী এবং প্রয়োজনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগে করবেন তিনি।
তবে নতুন এই প্রযুক্তিকে ঘিরে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিতর্কও আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। আশংকা করা হচ্ছে, ব্যবহারকারীর ডিভাইসে রাজনৈতিক বক্তব্য বা অন্যান্য কনটেন্ট স্ক্যান করতেও ব্যবহার হতে পারে এই প্রযুক্তি।
স্বৈরাচারী সরকারগুলো অ্যাপলের নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাধারণ নাগরিকদের উপর নজরদারি করতে পারবে বলে আশংকার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরেই বাজারে আসার কথা রয়েছে আইওএস এবং অ্যাইপ্যাডওএস-এর নতুন সংস্করণের। ওই সংস্করণগুলোতে “অনলাইনে সিএসএএম প্রচার বন্ধে একটি নতুন ক্রিপ্টোগ্রাফি অ্যাপ্লিকেশন থাকবে যা ব্যবহারকারীর প্রাইভেসির কথা ভেবে তৈরি করার কথা জানিয়েছে অ্যাপল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন’ এবং অন্যান্য সংস্থার ডেটাবেইজে থাকা ছবির সঙ্গে ব্যবহারকারীদের ডিভাইসের ছবি মিলিয়ে দেখবে অ্যাপলের নতুন প্রযুক্তি।
ডেটাবেইজের ছবিগুলোকে ‘হ্যাশ’ বা ‘সংখ্যাসূচক কোডে’ রূপান্তর করে তার সঙ্গে অ্যাপল ডিভাইসের ছবি মিলিয়ে দেখে ওই প্রযুক্তি। মূল ছবির এডিট করা সংস্করণও চিহ্নিত করতে পারবে এটি।
অ্যাপল বলছে, “আইক্লাউডে ছবি জমা হওয়ার আগে, চিহ্নিত সিএসএএম হ্যাশ-এর সঙ্গে অন-ডিভাইস ম্যাচিং-এর মাধ্যমে ছবি তুলনা করবে এই প্রযুক্তি”।
প্রতিষ্ঠানটি আরও দাবি করেছে, “এই প্রযুক্তির নির্ভুলভাবে কাজের হার খুবই উচ্চ মাত্রার, এবং ভুল অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করার সম্ভাবনা বছরে এক লাখ কোটির মধ্যে একবারেরও কম”।
নতুন এই প্রযুক্তি গোপনতা রক্ষার প্রচলিত পন্থার সঙ্গে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সংযুক্তি বলে দাবি করছে অ্যাপল — কারণ, আইক্লাউড ফটোজ অ্যাকাউন্টে সিএসএএম-এর সঙ্গে মিল আছে এমন ছবি চিহ্নিত হলেই কেবল ওই ছবিগুলোর ব্যাপারে জানতে পারবে অ্যাপল।
তবে এই প্রযুক্তি নিয়ে ঠিক ভরসা পাচ্ছেন না প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। “নিজেদের দীর্ঘ্য মেয়াদী পরিকল্পনার ব্যাপারে পরিস্কার ইঙ্গিত দিয়েছে অ্যাপল। তাদের মতে, নিষিদ্ধ কনটেন্টের জন্য ব্যবহারকারীর ফোন স্ক্যান করা যেতেই পারে”–এই মন্তব্য করেছেন জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ের গবেষক ম্যাথিউ গ্রিন।
“এর ফলাফল ঠিক হবে না ভুল হবে, সেটা আর গুরুদ্বপূর্ণ নয়। তারা বাঁধ ভেঙ্গে ফেলবে– সবার কাছ থেকেই এটা দাবি করবে সরকারগুলো”–যোগ করেন তিনি।