৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ, প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২
২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটের সারসংক্ষেপ
- আকার ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।
- বাজেট ঘাটতি ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।
- সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা।
- উন্নয়ন ব্যয় ১ লাখ ১৭ লাখ ৬১ কোটি টাকা।
- অনুন্নয়ন ব্যয় ২ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা।
- রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা।
- এনবিআর কর ২ লাখ ০৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা।
- এনবিআর বহির্ভূত কর ৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা।
- কর ব্যতিত প্রাপ্তি ৩২ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা।
- জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
- মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
- এডিপি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৭ হাজার কোটি টাকা।
- বৈদেশিক উৎস্য থেকে পাওয়া যাবে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
- ব্যাংক ঋণ ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি লক্ষমাত্রা নিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এটি হচ্ছে দেশের ৪৫তম ও আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭তম ও অর্থমন্ত্রী মুহিতের দশম বাজেট।
এবার মূল বাজেটের যে আকার মুহিত ধরেছেন, তা বাংলাদেশের মোট জিডিপির (১৯ লাখ ৬১ হাজার ১৭ কোটি টাকা) ১৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অর্থাত্, টাকার অংকে বাজেটের আকার বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে গতবারের প্রায় সমান তালেই অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। গতবছর প্রস্তাবিত বাজেট ছিল জিডিপিরি ১৭ দশমিক ২ শতাংশ। এবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ব্যয় বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের আকার ৩ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে কয়েকটি মেগা প্রকল্পের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাথা এবং উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে করবেন।
প্রস্তাবিত বাজেটে চলতি অর্থবছরের ব্যক্তি করসীমা পরিবর্ত না করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। নারী ও ৬৫ বছরের অধিক বয়স্কদের জন্য এ সীমা ৩ লাখ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় স্থির রাখা হয়েছে। গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষিখাতে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ চলতি বছরের মতো রাখা হয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে মুল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের মূল ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২কোটি টাকা। অনুন্নয়নমূলক ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। উন্নয়নমূলক ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২১ কোটি টাকা। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ব্যয়সহ এবারের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) জন্য মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
রাজস্ব আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে ২ লাখ ০৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকার কর রাজস্ব প্রাক্কলন করা হয়েছে। এনবিআর বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এ বছর ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। যা জিডিপির ৫ শতাংশ। এই ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক সহায়তা বাবদ পাওয়া যাবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৮ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে ধার করতে হবে ৬১ হাজার ৫৪৮ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পাওয়া যাবে ৫৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক থেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৩৮ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা। যা জিডিপির ২ দশমিক ২ শতাংশ। সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে পাওয়া যাবে ২২ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ১ শতাংশের কিছু বেশি।
বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নতির চ্যালেঞ্জের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে পদ্মা সেতুসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ৮ খাতে। যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ও দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ১০টি প্রকল্প নেওয়া হলেও ৮টি বড় প্রকল্পের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়ছে। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এগুলোর জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে মোট ১৮ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১৭ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৮টি প্রকল্পকে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে গতি সঞ্চালক প্রকল্প বলে উল্লেখ করেছিলেন। নতুন দুটিসহ আগামী বাজেটে ১০ প্রকল্পকে আলাদা করে দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ জন্য আলাদা একটি পুস্তিকাও তৈরি করছেন। পুস্তিকার নাম রাখা হয়েছে কাঠামো ‘রূপান্তরে বৃহৎ প্রকল্প: প্রবৃদ্ধি সঞ্চারে নতুন মাত্রা’।
দ্রুত বাস্তবায়িতব্য বা ফাস্ট ট্র্যাক নামে এই প্রকল্পগুলো বর্তমানেও আছে। আগামী বাজেটে নতুন যুক্ত হচ্ছে ‘পদ্মা রেলসেতু সংযোগ’ এবং ‘কক্সবাজার-দোহাজারী-গুনদুম রেলপথ’ নামে আরও দুটি প্রকল্প। সব মিলিয়ে আছে তিনটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, তিনটি রেলপথ, দুটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি সেতু ও একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প। এগুলো বাস্তবায়িত হলে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ বাড়বে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী।
পদ্মা বহুমুখী সেতু
কয়েক দফা বৃদ্ধির পর এ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, শেষ হবে ২০১৮ সালে। গত এপ্রিল পর্যন্ত এর ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। জাজিরা সংযোগ সড়ক ও মাওয়া সংযোগ সড়কের কাজও শেষের পথে। ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন কার্যক্রম ও পরিবেশ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
পাবনার ঈশ্বরদীতে ৫ হাজার ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে সরকার ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা ব্যয় করবে। এর বাইরে রাশিয়ার প্রকল্প সাহায্য রয়েছে ৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১৭ সালে এটি শেষ হওয়ার কথা। আগামী অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৬১৮ কোটি টাকা।
মেট্রোরেল
২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পে সরকার ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ও জাপান দিচ্ছে ১৬ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে এটি শেষ হওয়ার কথা। আগামী বাজেটে এর জন্য থাকছে ২ হাজার ২২৭ কোটি টাকা।
সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর
কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প এটি। ৫০ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্প তিন ধাপে বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৫ থেকে ২০৫০ সাল। প্রথম ধাপে একটি, দ্বিতীয় ধাপে দুটি ও তৃতীয় ধাপে তিনটি পোতাশ্রয় করা হবে। এর জন্য বাজেটে কোনও অর্থ বরাদ্দ নেই।
পায়রা বন্দর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার রাবনাবাদ চ্যানেলে পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ, সংযোগ সড়ক নির্মাণ, ড্রেজিং কার্যক্রমে যন্ত্রপাতি কেনা নিয়ে যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করা হয়েছে, তাতে আগামী বাজেটে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
মৈত্রী সুপার থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র
সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণের জন্য এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৮৩ কোটি টাকা। প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ২০১৯ সালে। এর মাধ্যমে ৬৬০ মেগাওয়াট করে দুটি আলাদা বিদ্যুৎকেন্দ্রে মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। চলতি অর্থবছরে ২৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও আগামী অর্থবছরে রাখা হচ্ছে ২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা।
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নে ৬০০ করে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে মোট ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে। প্রকল্প ব্যয় ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা, যার বেশির ভাগই দেবে জাপান। এটি শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালে। এর ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
এলএনজি টার্মিনাল
গ্যাসের সংকট নিরসনে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির উদ্দেশ্যে মহেশখালীর উপকূলে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টার্মিনাল হবে। টার্মিনাল থেকে মূল ভূখণ্ডে গ্যাস আনতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে ৯১ কিলোমিটার পাইপলাইন। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে এর জন্য বরাদ্দ রাখা থাকলেও কোনও তথ্য পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
কক্সবাজার-দোহাজারি-গুনদুম রেলপথ
২০২২ সালের জুনের মধ্যে ‘কক্সবাজার-দোহাজারি-গুনদুম রেলপথ’ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। নতুন সময় তিন বছর এগিয়ে আনা হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) দেবে ১৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এর জন্য বরাদ্দ থাকছে ৬৩১ কোটি টাকা। দুই ধাপে ১২৯ দশমিক ৫৮৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে।
পদ্মা রেলসেতু সংযোগ
৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্প ২০২২ সালে শেষ করতে চায় সরকার। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা ২ শতাংশ সুদে ২০ বছর মেয়াদে চীন থেকে ঋণ নেওয়া হবে। ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের এই প্রকল্প হলে ঢাকা-খুলনা পথে ২১২, ঢাকা-যশোর পথে ১৮৪ এবং ঢাকা-দর্শনা পথের ৪৪ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। এই প্রকল্পের জন্য আগামী বাজেটে ৪ হাজার ১০২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।
নতুন বাজেটে অর্থমন্ত্রী যে সকল চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেছেন তা হলো, মন্দা মোকাবিলা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, রাজস্ব খাতে পরিকল্পিত সংস্কার কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, পদ্মা সেতুসহ সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর জন্য অর্থ সরবরাহ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি ও খাদ্যখাতে ভর্তুকিসহ কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় হ্রাস এবং প্রয়োজনে কৃচ্ছতাসাধান। এছাড়া জ্বালানি খাতে স্বয়ংক্রিয় মূল্য সমন্বয় প্রদ্ধতি বাস্তবায়ন, মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখা, বিদেশি অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধি, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ এবং বৈদেশিক মুদ্রার কাঙ্ক্ষিত স্তর এবং বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখাও আগামী বাজেটের অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে বাজেটের রূপরেখায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে উপস্থাপিত ৫টি বাজেট উপস্থাপনের দিন সংসদে অনুপস্থিত ছিল প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। অর্থমন্ত্রী এবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে (পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে) বাজেট উপস্থাপন করেছেন। বর্তমান সরকারের আগামী ভিশনকে সামনে রেখে জনতুষ্টির সব ব্যবস্থাই রাখার চেষ্টা আছে দুই লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার এই বাজেটে। তবে কোনওভাবেই একে উচ্চাভিলাষী কিংবা বাস্তবায়নের অযোগ্য বলতে নারাজ অর্থমন্ত্রী। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বাজেট দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী গত বছরের মতো এ বছরও বলেছেন, আমার বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, হাই গ্রোথ অ্যান্ড হাই ইনভেস্টমেন্ট। অর্থ্যাৎ বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনই এবারের বাজেটের মূল দর্শন। নতুন বাজেটে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ রয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতের জন্যও উদ্যোগের কথা আছে।