এক রাতেই কীভাবে বদলে যেতে পারে ব্রিটেন
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে যে খসড়া চুক্তি করেছেন, সেটির ওপর আজ (মঙ্গলবার) রাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন নাকি এরকম রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি আর হয়নি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আজকের এই ভোটের গুরুত্বকে এভাবেই তুলে ধরছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ভোটের ফলাফলের পরিণতি কী হতে পারে ব্রিটেনের জন্য?
বিবিসির ল্যরা কুনসবার্গ কতগুলো সম্ভাব্য দৃশ্যপটের কথা বলছেন।
১. এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র এই পরিকল্পনা পার্লামেন্টে পাশ হওয়ার বিন্দুমাত্র আশা কেউ দেখছেন না। কিন্তু যদি অলৌকিক কিছু যদি ঘটে যায় এবং সিংহভাগ এমপি যদি প্রধানমন্ত্রীর পাশে এসে দাঁড়ান, তাহলে পরিকল্পনামত তিন মাসের মধ্যে ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে। রাজনীতিতে টেরিজা মে আরো বেশ কিছুদিন টিকে যাবেন।
২. তবে ভোটে হেরে গেলে, প্রধানমন্ত্রী মহাসঙ্কটে পড়বেন। তবে সঙ্কটের মাত্রা নির্ভর করবে পক্ষে-বিপক্ষে কত ভোট পড়ে তার ওপর। নিজের দলের এমপি-মন্ত্রীরা ছাড়াও বিরোধী লেবার পার্টি কতটা চড়াও হবে তা অনেকটাই নির্ভর করবে ভোটের ব্যবধানের ওপর। নানা নানারকম দাবি-দাওয়ার চাপে জেরবার হতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
৩. বড়মাপের হার হলে, টেরিজা মের সরকারের হাত থেকে সাংসদরা ব্রেক্সিট চুক্তির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নিতে পারে। কারণ ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এই চু্ক্তির ব্যাপারে মারাত্মকভাবে বিভক্ত । এমপিরা সে পথে গেলে সরকারের সাথে সংসদের সম্পর্কে মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা তৈরি হতে পারে।
৪. সিংহভাগ সাংসদ চান ব্রেক্সিট হলেও ইউরোপের সাথে যেন ঘনিষ্ঠ একটি সম্পর্ক থাকে। এই মতবাদের পক্ষেই পাল্লা ভারি। ভোটে হারলে, ব্রিটেন হয়তো সেই পথেই যাবে। একজন এমপি বিবিসিকে বলেছেন, “যত দেরি হবে, ব্রেক্সিটের ধার ততই কমবে।”
৫. যদি এমপিরা বাধা তৈরি না করে, তাহলে আজ রাতের ভোটে হারলে ব্রিটেন কোনো চুক্তি ছাড়াই ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে। ইউরোপ বিরোধী অনেক এমপিরা সেটিই চান এবং তারা কোনো ছাড় দিতে রাজী নন। অনেক মন্ত্রী আশা করছেন, চুক্তি-বিহীন ব্রেক্সিটের পথে এগুলে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিছু ছাড় দিতে পারে।
৬. ভোটে হারলে বিরোধী লেবার পার্টি জেরেমি করবিন কী করবেন, ধারণা করা এখনও মুশকিল। তিনি কি হুমকি মতো নতুন নির্বাচনের আশায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন। নির্ভর করবে ভোটের ব্যবধানের ওপর। এছাড়া, নতুন আরেকটি গণভোট দাবির জন্য দলের ভেতর তিনি চাপে রয়েছেন।
৭. এমপিদের যে অংশটি নতুন আরেকটি গণভোট চান, তারা অপেক্ষা করছেন দেখতে যে প্রধানমন্ত্রীর পরাজয় কত বড় হয়। ব্যবধান বেশি হলে, হামলে পড়বেন তারা।
২০১৬ সালে ব্রিটেনের জনগণ এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায় দেয়, তারপর গত আড়াই বছর ধরে বিতর্ক চলছে। অনিশ্চয়তা কাটেনি, আজ রাতের পরেও যে কাটবে সে সম্ভাবনা কম।