প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্লট চেয়ে জয়ের আবেদন ভাইরাল
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্লট চেয়ে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি আবেদনপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আবার ভাইরাল হয়েছে।
২০১৪ সালে করা ওই আবেদনপত্রে জয় পূর্বাচলে একটি প্লট চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। ওই সময় জয়ের এ আবেদনপত্র আলোচিত হয়েছিল। এ নিয়ে গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশ হয়েছিল।
সম্প্রতি বনানী অগ্নিকাণ্ডে পানির পাইপ চেপে ধরে হিরো বনে যায় শিশু নাঈম ইসলাম। তার এমন কাজে খুশি হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আলোচনায় আসার পর টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় একান্ত সাক্ষাৎকার নেন। বনানী ট্র্যাজেডির বীর নাঈমের সঙ্গে তখন তার বাবা-মাও ছিলেন।
নাঈম পুরস্কারের সেই টাকাগুলো নেবে কিনা? আর নিলেও সেই টাকা কিসে খরচ করবে? এমন প্রশ্ন করেন উপস্থাপক জয়।
জবাবে নাঈম জানায়, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্য দান করে দিতে চায়। ছেলের এ জবাবে সায় দেন তার মা-বাবাও।
এতিমখানায় কেন টাকা দিতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে নাইম বলন, কিছু বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছে তাই এই টাকা তিনি এতিমদের দিতে চান।
তবে শিশু নাঈমকে জয়ের এ ধরনের প্রশ্ন করাটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেছেন ফেসবুক ব্যবহাকারীরা।
তারা বলছেন, ওই শিশুটি নিজ থেকে এসব কথা বলেনি। উপস্থাপক জয় শিশু নাঈমকে কথাগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে শিশুটির কথা বলার ধরনেই তা স্পষ্ট।
আরেফিন বিপুল নামে যে আইডি থেকে জয়ের প্লট আবেদনপত্রটি পোস্ট করা হয়েছে; তাতে বলা হয়েছে- ‘শাহরিয়ার নাজিম জয় পূর্বাচলের প্লট মনে হয় এখনো পায় নাই, নাঈমকে শেখানো কথায় এবার তার প্লট কনফার্ম। হায়রে লোভ! জয়ের পূর্বাচলের প্লট পাওয়ার সেই দরখাস্ত কিন্তু কেউ ভুলে
নাই।’
কমেন্ট বক্সে আরেফিন বিপুল আরও বলেন, ‘করাইল বস্তির নাঈম নামের ছেলেটা যে ফায়ার ব্রিগেডের ফুটা পাইপ আটকিয়ে রেখেছিল তার ভালো কাজ সামাজিক গণমাধ্যমে প্রশংসা পেয়েছে, নাঈমের বাবা ডাব বিক্রি করেন, নাঈম বাচ্চাটার জনপ্রিয়তা দেখে তার বাবাকে শ্রমিক লীগের নেতা এটা নাঈমকে দিয়ে বলানো হলো, শুধু তাই নয়, কোনো এক আমেরিকা প্রবাসী নাঈমকে পাঁচ হাজার ডলার দিবেন বলছেন, সেই ডলার এখনো আসে নাই, অথচ উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় নাঈমকে দিয়ে বলালেন খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে দিছেন, আমি (নাঈম) পাঁচ হাজার ডলার গরিবদের দান করে দেব!
একটা শিশুর ভালো কাজের ওপর ভর করে তার ইনোসেন্সের সুযোগ নিয়ে তাকে দিয়ে এই কথাগুলো বলিয়ে তার মনে একটা স্থায়ী দাগ ফেলে দেয়া হলো, তাকে ভালো কাজের বিপরীতে স্বার্থ, টাকা সময়ের আগেই শিখিয়ে দেয়া হলো, লাভ হইলো মাফিয়ার।’
শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সেই আবেদনপত্রে কী আছে?
আবেদনে জয় প্রধানমন্ত্রীকে ‘উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ নেত্রী’ ও ‘আদর্শ মা’ উল্লেখ করে লিখেছেন- ‘আপনার সুযোগ্য পুত্রের নামের আরেক পুত্র শাহরিয়ার নাজিম জয়ের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি রইল সালাম। আমি বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় নায়ক (টিভি, চলচ্চিত্র)।
আপনার দোয়ায় গত ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের বিনোদনের অন্যতম উৎস হয়ে আছি টিভি ও সুস্থ চলচ্চিত্রে। আপনি অত্যন্ত দরদী ও বাংলার মানুষের বিপদের বন্ধু। শুধু তাই নয়।
গত নির্বাচনকালীন আপনি যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন এবং জ্ঞানদীপ্ত আদর্শের ওপর বলিয়ান ছিলেন আমাদের মতো মানুষ আজীবন আপনার নেতৃত্বকে স্যালুট করার অঙ্গীকার করেছে।
মা, আপনার কাছে একজন শিল্পীর আবেদন আমার সমসাময়িক শিল্পীরা পূর্বাচলে ১০ কাঠা/৫ কাঠার প্লট পেয়েছেন। কিন্তু আমি শুটিংয়ের জন্য দেশের বাইরে থাকায় আবেদন করতে পারিনি। পরবর্তীতে ঝিলমিল প্রকল্পে আবেদন করলেও লটারিতে তা পাইনি।
মা, পূর্বাচলে একটা জমি আমার স্বপ্ন ও সন্তানের ভবিষ্যৎ। আমি আপনার কাছে আবদার করলাম। আপনি আপনার এই সন্তানের আবদার ফেলে দিবেন না আমি জানি (ইনশাআল্লাহ)।’
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই আবেদনপত্রে জয়ের ছবির পাশে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের সিলও রয়েছে। সুপারিশকারী হিসেবে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের স্বাক্ষরও রয়েছে।